পাংশায় ধসে পড়েছে নির্মাণাধীন সেতু
- প্রকাশের সময় : ০৬:২২:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুন ২০২৩
- / ১১২৬ জন সংবাদটি পড়েছেন
রাজবাড়ীর পাংশায় নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই ধসে পড়েছে সেতু। উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়নের মেঘনা গ্রামের একটি খালের উপর এ নির্মাণাধীন সেতুটি ধসে পড়ে। সোমবার রাতে সেতুর ঢালাই কাজের সময় সেতুটি ধসে পড়ে বলে জানায় স্থানীয়রা। এঘটনায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটে।তবে নির্মাণাধীন সেতু ধসে পড়ায় এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে ঠিকাদারের প্রতিনিধিকে ধাওয়া ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ারের গাফিলতি ও নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে কাজ করায় নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই সেতুটি ধসে গেছে। এতে করে ওই সড়ক ব্যবহারকারীদের আরও দুর্ভোগ বাড়লো । কর্মকর্তাদের তদারকির অবহেলাই সেতুটি ধসে পড়ার বড় কারণ। তারা সরকারের কাছে একটি নিরাপদ সেতু নির্মাণের দাবি জানায়।
মেঘনা গ্রামের বাসিন্দা মানা প্রামানিক বলেন, কয়েক মাস আগে ব্রীজটির কাজ শুরু হয়। নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে ব্রীজের কাজ করছিলো ঠিকাদার। আমরা স্থানীয়রা ইঞ্জিনিয়ারকে বার বার বলার পরেও কোন প্রতিকার পাই নি।গতকাল সোমবার রাতে ঢালাইয়ের সময় ব্রীজটি ভেঙ্গে পড়ে।
আবু বক্কর বলেন,চিকুন রড দিছে, সিমেন্ট নামে মাত্র দিয়ে ঢালাই কাজ করছিলো। আমরা এলাকাবাসী ইঞ্জিনিয়ার কে বলেছি কাজ ভালো হচ্ছে না। উনি আমাদের সামনে মিস্ত্রিদের বলে যেভাবে কাজ করতে বলেছি সেভাবে কাজ করে চলে যাও। নিম্নমানের কাজ হওয়ায় ব্রীজটি ভেঙ্গে গেছে।
জুলফিকার আলী বলেন,আমার মনে হয় ইঞ্জিনিয়ার ঠিকাদারের কাছ থেকে ঘুষ খাইছে। সেজন্য আমরা বার বার অভিযোগ দেওয়ার পরেও শোনে নাই।সরকারের কাছে দাবি জানাই ভালো কোন ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে ব্রীজটি যেন করে দেয়।
ঠিকাদারের প্রতিনিধি হাজী দুলাল বলেন, আমি এই ব্রীজের ঠিকাদার না। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে সাব ঠিকাদার ছাত্রলীগ নেতা কামাল হোসেন বিভিন্ন উপকরণ কিনে থাকেন। মূল ঠিকাদার সাবেক নৌ মন্ত্রীর ভাই। তিনি আরও বলেন,গতকাল রাতে ঢালাইয়ের সময় আমি ওখানে উপস্থিত হলে স্থানীয় জনগণ আমাকে ধাওয়া করে সেই সাথে আমার মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে।
কামাল হোসেন আমি কোন ঠিকাদার না। ব্রীজ নির্মাণের কাজ পায় সার্বিক এন্টারপ্রাইজ কনস্ট্রাকশন। মূলত সাব ঠিকাদার হাজী দুলাল।
মাছপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল ইসলাম বুড়ো বলেন,ব্রীজ বসে পড়ে নাই। গতকাল ডালাইয়ের কাজ চলছিলো। স্টেজিং ভালো না করায় এমন ঘটনা ঘটেছে। নিচের গোড়াটা যেভাবে করার দরকার ছিল সেভাবে হয়নি বিধায় এমনটা হয়েছে। তাছাড়া রড,সিমেন্ট,বালু সবই ঠিক আছে।
এ বিষয়ে পাংশা এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হাসান বলেন,স্টেজিং ভালো না করায় এমন ঘটনা ঘটেছে। আমরা সব সময় তদারকি করেছি এটি একটি দুর্ঘটনা। এখানে আমার বা ঠিকাদারের কোন দায় নেই। তিনি আরও বলেন,৬৩ লক্ষ টাকা ব্যায়ে সেতুটি কাজ পায় ফরিদপুরের একজন ঠিকাদার। দুই মাস আগে কাজটি শুরু হয়। আমি যতটুকু জানি হাজী দুলাল ও কামাল হোসেন সাব ঠিকাদার। তার যৌথভাবে কাজটি করছে। যেহেতু একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে।সে জন্য ক্ষতিগ্রস্ত জায়গায় আবার নতুন করে কাজ করবে ঠিকাদার। এর জন্য নতুন করে কোনো বরাদ্দের সুযোগ নেই। ঠিকাদারের নিজস্ব অর্থায়নেই ঠিক করতে হবে।