Dhaka ০৬:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

২ শিশু সন্তানের সামনে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর পালিয়েছে স্বামী

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশের সময় : ০৯:০২:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ১০৯৬ জন সংবাদটি পড়েছেন

দুই শিশু সন্তানের সামনে স্ত্রী বিউটি বেমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে আব্দুল লতিফ কাজী নামে এক ব্যক্তি। ঘটনার পর থেকেই সে পলাতক। বুধবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে  রাজবাড়ী সদর উপজেলার বানিবহ ইউনিয়নের বার্থা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘাতক লতিফ একই গ্রামের মৃত মতিয়ার কাজীর ছেলে। মৌসুমী ফসল কেনাবেচা তার পেশা বলে জানা গেছে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, ১২ বছর আগে একই গ্রামের বিল্লাল মোল্লার মেয়ে বিউটি বেগমের সাথে বিয়ে হয় লতিফ কাজীর। তাদের সংসারে রয়েছে ১০ বছরের মেয়ে মীম ও চার বছর বয়সী ছেলে মুসা। বেশ কয়েক বছর ধরে সাংসারিক নানা বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিলো। বুধবার রাতের খাবার খেয়ে বিউটি তার সন্তানদের নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১২টার দিকে লতিফ বাসায় ফেরেন। এসময় দুজনের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে লতিফ চাপাতি দিয়ে তার স্ত্রীকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। বিউটির আর্ত চিৎকারে মেয়ে মীমের ঘুম ভেঙে যায়। সে এসে তার বাবাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। চাপাতির আঘাতে তার একটি আঙুল জখম হয়। কিন্তু ক্ষান্ত হয়নি লতিফ। আবারও কোপাতে থাকে তার স্ত্রীকে। একপর্যায়ে লতিফ সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

নিহতের মামাতো ভাই শামীম মন্ডল জানান, লতিফ কাজী একজন অর্থলোভী এবং খারাপ প্রকৃতির মানুষ। মাঝে মধ্যে সে শ^শুরের কাছ থেকে টাকা নিত। বেশ কয়েক বছর ধরে তাদের দাম্পত্য কলহ চলছিলো। দুই মাস আগে লতিফ কাজী বিউটিকে বেধরক মারপিট করে। গ্রাম্য সালিসের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়। গত মঙ্গলবার আবারও তাদের ঝামেলা শুরু হয়। বুধবার রাতে তার শিশু সন্তানদের সামনে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তার বোন বিউটিকে। তারা এ হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।

বিউটি আক্তারের চাচাতো ভাই জহির উদ্দিন জানান, বেশ কিছুদিন ধরে বিউটি আর লতিফের মধ্যে সম্পর্ক ভালো চলছিল না। রাতে দুই সন্তানের সামনে লতিফ স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করে। ছেলে মেয়ের গায়েও রক্ত ছিটে গিয়ে লেগেছে।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের নার্স সুপারিন্টেনডেন্ট আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, রাতে পুলিশ ও পরিবারের আত্মীয় স্বজন মিলে হাসপাতালে নিয়ে আসে বিউটিকে। তবে হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। নিহতের গলা, মাথা, ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

রাজবাড়ী সদর থানার ওসি সাহাদত হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থলে পৌছে রক্তাক্ত অবস্থায় বিউটি বেগমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে নিহতের মেয়ে মীমের সাথে পুলিশ কথা বলেছে। মীম জানিয়েছে, তার বাবা মাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলের পাশে একটি ক্ষেত থেকে হত্যায় ব্যবহৃত রক্তমাখা চাপাতি উদ্ধার করেছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত লতিফ কাজীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

২ শিশু সন্তানের সামনে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর পালিয়েছে স্বামী

প্রকাশের সময় : ০৯:০২:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৩

দুই শিশু সন্তানের সামনে স্ত্রী বিউটি বেমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে আব্দুল লতিফ কাজী নামে এক ব্যক্তি। ঘটনার পর থেকেই সে পলাতক। বুধবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে  রাজবাড়ী সদর উপজেলার বানিবহ ইউনিয়নের বার্থা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘাতক লতিফ একই গ্রামের মৃত মতিয়ার কাজীর ছেলে। মৌসুমী ফসল কেনাবেচা তার পেশা বলে জানা গেছে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, ১২ বছর আগে একই গ্রামের বিল্লাল মোল্লার মেয়ে বিউটি বেগমের সাথে বিয়ে হয় লতিফ কাজীর। তাদের সংসারে রয়েছে ১০ বছরের মেয়ে মীম ও চার বছর বয়সী ছেলে মুসা। বেশ কয়েক বছর ধরে সাংসারিক নানা বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিলো। বুধবার রাতের খাবার খেয়ে বিউটি তার সন্তানদের নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১২টার দিকে লতিফ বাসায় ফেরেন। এসময় দুজনের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে লতিফ চাপাতি দিয়ে তার স্ত্রীকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। বিউটির আর্ত চিৎকারে মেয়ে মীমের ঘুম ভেঙে যায়। সে এসে তার বাবাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। চাপাতির আঘাতে তার একটি আঙুল জখম হয়। কিন্তু ক্ষান্ত হয়নি লতিফ। আবারও কোপাতে থাকে তার স্ত্রীকে। একপর্যায়ে লতিফ সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

নিহতের মামাতো ভাই শামীম মন্ডল জানান, লতিফ কাজী একজন অর্থলোভী এবং খারাপ প্রকৃতির মানুষ। মাঝে মধ্যে সে শ^শুরের কাছ থেকে টাকা নিত। বেশ কয়েক বছর ধরে তাদের দাম্পত্য কলহ চলছিলো। দুই মাস আগে লতিফ কাজী বিউটিকে বেধরক মারপিট করে। গ্রাম্য সালিসের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়। গত মঙ্গলবার আবারও তাদের ঝামেলা শুরু হয়। বুধবার রাতে তার শিশু সন্তানদের সামনে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তার বোন বিউটিকে। তারা এ হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।

বিউটি আক্তারের চাচাতো ভাই জহির উদ্দিন জানান, বেশ কিছুদিন ধরে বিউটি আর লতিফের মধ্যে সম্পর্ক ভালো চলছিল না। রাতে দুই সন্তানের সামনে লতিফ স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করে। ছেলে মেয়ের গায়েও রক্ত ছিটে গিয়ে লেগেছে।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের নার্স সুপারিন্টেনডেন্ট আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, রাতে পুলিশ ও পরিবারের আত্মীয় স্বজন মিলে হাসপাতালে নিয়ে আসে বিউটিকে। তবে হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। নিহতের গলা, মাথা, ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

রাজবাড়ী সদর থানার ওসি সাহাদত হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থলে পৌছে রক্তাক্ত অবস্থায় বিউটি বেগমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে নিহতের মেয়ে মীমের সাথে পুলিশ কথা বলেছে। মীম জানিয়েছে, তার বাবা মাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলের পাশে একটি ক্ষেত থেকে হত্যায় ব্যবহৃত রক্তমাখা চাপাতি উদ্ধার করেছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত লতিফ কাজীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।