বট-পাকুড়ের বিয়ে!
- প্রকাশের সময় : ০৭:১৭:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২২
- / ১২৯০ জন সংবাদটি পড়েছেন
জনতার আদালত অনলাইন ॥ বিয়ের কোনো আনুষ্ঠারিকতার কমতি ছিল না। ধূমধাম করেই সনাতন ধর্মের বিধি অনুসারে বিয়ে হয়েছে বটগাছ আর পাকুড় গাছের। সোমবার গোধূলি লগ্নে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বাবুপাড়া ইউনিয়নের ডাকুরিয়া মহাশ্মশানে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়। শত শত উৎসুক মানুষ ভিড় জমায় এ বিয়ে দেখতে।
জানা গেছে, ডাকুরিয়া মহাশ্মশানে একসাথে বেড়ে উঠছিলো বটগাছ আর পাকুড় গাছ। বট পাকুড় একসাথে থাকলে তাদের বিয়ে দিতে হয়- এমনই নিয়ম প্রচলিত রয়েছে হিন্দু ধর্মে। যেকারণে মহাশ্মশান কমিটি সোমবার গোধূলি লগ্নে আয়োজন করে বিয়ের। বর রূপে সাজানো হয় বটকে আর কনে রূপে সাজানো হয় পাকুড়কে। বট-পকুড়ের চারপাশ বাঁধানো হয় ইট আর টাইলস দিয়ে। চারপাশে কলাগাছ আর উপরে শামিয়ানা দিয়ে সাজানো হয় ছাদনা তলাও। বিয়ে উপলক্ষে গ্রামের নারীরা হলুদ শাড়ি পরে করেছে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান। বাদ্য বাজনা আর সাইনাইয়ের সুরে নদী থেকে ঘটে করে জল নিয়ে আসেন তারা। যথারীতি অর্ধ শতাধিক বরযাত্রীও আসে। তাদেরকে অভ্যর্ত্থনাও জানায় কনে পক্ষ। তাদেরকে খাওয়ানো হয় পোলাও, সবজি, ডালসহ নানান নিরামিষ তরকারি ও মিষ্টি। সন্ধ্যার কিছু পরে ছাদনাতলায় পুরোহিত শুরু করেন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। মন্ত্র পড়ে বিয়ে সম্পন্ন করেন পুরোহিত। এসময় শত শত নারী পুরুষ প্রত্যক্ষ করেন এ বিয়ের অনুষ্ঠান। পরে ডাকুরিয়া মহাশ্মশানের সেবাইত বন্ধন মিত্র কনে রূপী পাকুড়ের বাবা হয়ে কন্যা সম্প্রদান করেন। আর বর রূপী বটের বাবার দায়িত্ব পালন করেন উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নের মেম্বার অতুল চন্দ্র সরকার। তারা দুজনই এ দায়িত্ব পালন করতে পেরে বেশ খুশি। তারা উভয়েই জানান, বট-পাকুড় গাছের বিয়ের মধ্য দিয়ে তাদের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে উঠলো।
ডাকুরিয়া মহাশ্মশান কমিটির সভাপতি বাবুল চৌধুরী জানান, ডাকুরিয়া মহাশ্মশানটি ছিল উপেক্ষিত। আমি এখানকার দায়িত্ব নিয়ে আমার স্বর্গীয় বাবা-মায়ের স্মৃতি রক্ষার্থে এখানে নাটমন্দির স্থাপন করি। প্রতি বছর বাৎসরিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। শ্মশানে বেড়ে ওঠা বট-পাকুড় গাছ দুটিকে বিয়ে দেওয়ার জন্য অনেকেই বলে আসছিলেন। তাই এ বিয়ের আয়োজন করেছেন তারা। এমন আয়োজন করতে পেরে তিনি আনন্দিত।
বিয়ের এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাংশা উপজেলা হিন্দু বৈদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি উক্তম কুমার কুন্ডু, পৌর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি দিপক কুমার কুন্ডু প্রমুখ।