Dhaka ০১:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পুরনো রুটে ফের সক্রিয় মাদক কারবারিরা

ভারত হয়ে আসছে ইয়াবা

ডেস্ক নিউজ
  • প্রকাশের সময় : ১১:৫৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫
  • / 33

ইয়াবা কারবারে সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত রুটে ফের সক্রিয় হয়ে উঠছে মাদককারবারি চক্র। জকিগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে আসছে ইয়াবার চালান। দীর্ঘদিন এই রুটে ইয়াবা পাচার প্রায় বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি র‌্যাব-পুলিশের হাতে কয়েকটি চালান ধরা পড়েছে। ফলে আবার আলোচনায় এসেছে জকিগঞ্জ সীমান্ত। ভারতের সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত ও সিলেট শহরের সঙ্গে একাধিক সড়ক যোগাযোগ থাকায় মাদককারবারিরা বারবার জকিগঞ্জকে তাদের নিরাপদ রুট হিসেবে বেছে নেয়। সিলেট শহরে আসার পর ইয়াবার চালান হাত বদল হয়ে ছড়িয়ে যায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

সূত্র জানায়, একসময় টেকনাফ ছিল ইয়াবা পাচারের সবচেয়ে বড় রুট। ওই রুট দিয়েই মিয়ানমার থেকে অবাধে আসত ইয়াবার চালান। কিন্তু গেল কয়েক বছর ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের পর আন্তর্জাতিক মাদককারবারি চক্রের সদস্যরা পাচারের নতুন নতুন রুট তৈরি করেছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সিলেটের জকিগঞ্জ। সূত্রমতে, মিয়ানমারের মান্দালে-সাগাইং-মনেয়া ও কালে অঞ্চল হয়ে ইয়াবার চালান ঢোকে ভারতে। এর পর ভারতের মণিপুরের মোরে-মিজোরামের আইজল-ত্রিপুরার পানিসাগর-মেঘালয়ের শিলং ও আসামের করিমগঞ্জ হয়ে সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ইয়াবার বৃহৎ চালান প্রবেশ করে বাংলাদেশে। সীমান্ত নদী কুশিয়ারা পার করে কারবারিরা সহজেই ইয়াবার চালান নিয়ে আসত জকিগঞ্জে। এতে মাদককারবারিরা রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাওয়ায় দিন দিন তাদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। নিষিদ্ধ এই কারবারে জড়িয়ে পড়েন অনেক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও জনপ্রতিনিধি। একদা র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবির অভিযানে এই রুট দিয়ে আসা ইয়াবার চালান প্রায়ই ধরা পড়ত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি ও সাঁড়াশি অভিযানের ফলে গত দুই বছরে এই রুটে ইয়াবা পাচার কমে আসে। সম্প্রতি এই রুটে আবার ইয়াবা পাচার শুরু হয়। র‌্যাব ও পুলিশের হাতে কয়েকটি চালান ধরাও পড়ে। সর্বশেষ ১৮ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর থানা এলাকা থেকে ৯ হাজার ৪৭৫ পিস ইয়াবাসহ সিলেটের এক দম্পতিকে আটক করে র‌্যাব। জৈন্তাপুর উপজেলার মোহাম্মদপুর চৈলাখেল তৃতীয় খ গ্রামের শফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সাবরিনা কায়সার লস্কর পাপিয়া পুলিশকে জানায়, উদ্ধার করা ইয়াবার চালানটি জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে সিলেট এসেছিল। গত ১৭ জানুয়ারি জকিগঞ্জের লোহারমহল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১ হাজার পিস ইয়াবাসহ পুলিশ একই উপজেলার কাপ্তানপুর গ্রামের মৃত ফয়জুল হকের ছেলে সোলেমান আহমদকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে গোলাপগঞ্জ উপজেলার হেতিমগঞ্জ বাজার থেকে ২১৮৫ পিস ইয়াবাসহ র‌্যাব আটক করে জকিগঞ্জ উপজেলার মৃত মেকাই মিয়ার ছেলে আবদুল মুতলিবকে। ৪ জানুয়ারি জকিগঞ্জ পৌর শহরের দক্ষিণ নোয়াগ্রামে অভিযান চালিয়ে ১২০০ পিস ইয়াবাসহ নিজ বসতঘর থেকে তারেক আহমদ নামের এক মাদককারবারিকে আটক করে পুলিশ।

এ প্রসঙ্গে সিলেট জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার, সহকারী পুলিশ সুপার মো. সম্রাট তালুকদার জানান, জকিগঞ্জ সীমান্তে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। গোয়েন্দা তৎপরতার কারণে সম্প্রতি কয়েকটি চালানও ধরা পড়েছে। মাদক পাচাররোধসহ সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকা বন্ধে থানাগুলোর সক্ষমতাও বাড়ানো হচ্ছে।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

পুরনো রুটে ফের সক্রিয় মাদক কারবারিরা

ভারত হয়ে আসছে ইয়াবা

প্রকাশের সময় : ১১:৫৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫

ইয়াবা কারবারে সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত রুটে ফের সক্রিয় হয়ে উঠছে মাদককারবারি চক্র। জকিগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে আসছে ইয়াবার চালান। দীর্ঘদিন এই রুটে ইয়াবা পাচার প্রায় বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি র‌্যাব-পুলিশের হাতে কয়েকটি চালান ধরা পড়েছে। ফলে আবার আলোচনায় এসেছে জকিগঞ্জ সীমান্ত। ভারতের সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত ও সিলেট শহরের সঙ্গে একাধিক সড়ক যোগাযোগ থাকায় মাদককারবারিরা বারবার জকিগঞ্জকে তাদের নিরাপদ রুট হিসেবে বেছে নেয়। সিলেট শহরে আসার পর ইয়াবার চালান হাত বদল হয়ে ছড়িয়ে যায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

সূত্র জানায়, একসময় টেকনাফ ছিল ইয়াবা পাচারের সবচেয়ে বড় রুট। ওই রুট দিয়েই মিয়ানমার থেকে অবাধে আসত ইয়াবার চালান। কিন্তু গেল কয়েক বছর ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের পর আন্তর্জাতিক মাদককারবারি চক্রের সদস্যরা পাচারের নতুন নতুন রুট তৈরি করেছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সিলেটের জকিগঞ্জ। সূত্রমতে, মিয়ানমারের মান্দালে-সাগাইং-মনেয়া ও কালে অঞ্চল হয়ে ইয়াবার চালান ঢোকে ভারতে। এর পর ভারতের মণিপুরের মোরে-মিজোরামের আইজল-ত্রিপুরার পানিসাগর-মেঘালয়ের শিলং ও আসামের করিমগঞ্জ হয়ে সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ইয়াবার বৃহৎ চালান প্রবেশ করে বাংলাদেশে। সীমান্ত নদী কুশিয়ারা পার করে কারবারিরা সহজেই ইয়াবার চালান নিয়ে আসত জকিগঞ্জে। এতে মাদককারবারিরা রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাওয়ায় দিন দিন তাদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। নিষিদ্ধ এই কারবারে জড়িয়ে পড়েন অনেক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও জনপ্রতিনিধি। একদা র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবির অভিযানে এই রুট দিয়ে আসা ইয়াবার চালান প্রায়ই ধরা পড়ত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি ও সাঁড়াশি অভিযানের ফলে গত দুই বছরে এই রুটে ইয়াবা পাচার কমে আসে। সম্প্রতি এই রুটে আবার ইয়াবা পাচার শুরু হয়। র‌্যাব ও পুলিশের হাতে কয়েকটি চালান ধরাও পড়ে। সর্বশেষ ১৮ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর থানা এলাকা থেকে ৯ হাজার ৪৭৫ পিস ইয়াবাসহ সিলেটের এক দম্পতিকে আটক করে র‌্যাব। জৈন্তাপুর উপজেলার মোহাম্মদপুর চৈলাখেল তৃতীয় খ গ্রামের শফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সাবরিনা কায়সার লস্কর পাপিয়া পুলিশকে জানায়, উদ্ধার করা ইয়াবার চালানটি জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে সিলেট এসেছিল। গত ১৭ জানুয়ারি জকিগঞ্জের লোহারমহল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১ হাজার পিস ইয়াবাসহ পুলিশ একই উপজেলার কাপ্তানপুর গ্রামের মৃত ফয়জুল হকের ছেলে সোলেমান আহমদকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে গোলাপগঞ্জ উপজেলার হেতিমগঞ্জ বাজার থেকে ২১৮৫ পিস ইয়াবাসহ র‌্যাব আটক করে জকিগঞ্জ উপজেলার মৃত মেকাই মিয়ার ছেলে আবদুল মুতলিবকে। ৪ জানুয়ারি জকিগঞ্জ পৌর শহরের দক্ষিণ নোয়াগ্রামে অভিযান চালিয়ে ১২০০ পিস ইয়াবাসহ নিজ বসতঘর থেকে তারেক আহমদ নামের এক মাদককারবারিকে আটক করে পুলিশ।

এ প্রসঙ্গে সিলেট জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার, সহকারী পুলিশ সুপার মো. সম্রাট তালুকদার জানান, জকিগঞ্জ সীমান্তে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। গোয়েন্দা তৎপরতার কারণে সম্প্রতি কয়েকটি চালানও ধরা পড়েছে। মাদক পাচাররোধসহ সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকা বন্ধে থানাগুলোর সক্ষমতাও বাড়ানো হচ্ছে।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন