Dhaka ০৫:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীতে এসএসসি ৯০,৯১,৯২ ব্যাচের পুনর্মিলনী ।। যেন ফিরে এলো শৈশব

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৬:৪২:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ১২৬২ জন সংবাদটি পড়েছেন

জনতার আদালত অনলাইন ॥  শৈশবের স্মৃতি, কৈশোরের স্বপ্ন সব যেন ফিরে এসেছিলো এদিন।  মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিলো রাজবাড়ী বেড়াডাঙ্গার শিশুপার্ক। রাজবাড়ী শহরের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আরএসকে ইনস্টিটিউশন ও ইয়াছিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯৯০, ৯১ ও ৯২ সালে এসএসসি  ব্যাচের পরীক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো  পুনর্মিলনী। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে মুখর হয়ে ওঠে শিশুপার্ক।

এসব অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল মশার কয়েল ফানি গেম, এইম ইন লাইফ, ডোন্ট মাইন্ড মোসট ওয়ান্টেড ফানি গেম এবং সোলজার ব্যান্ডের পরিবেশনায় কনসার্ট। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রাজবাড়ী কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজির শিক্ষক নাদিম আহমেদ। রাজবাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ১৯০ জন  বন্ধু অংশগ্রহণ করেন এ অনুষ্ঠানে।

আয়োজক কাজী শাখাওয়াত হোসেন জানান, অনেকদিন ধরেই তারা কয়েক বন্ধু মিলে অনুষ্ঠানটি আয়োজনের কথা  ভাবছিলেন। প্রথমে ছোট পরিসরে বারবিকিউ পার্টির কথা ভেবেছিলেন। পরে অনুষ্ঠানের পরিসর বাড়তে বাড়তে ৯০,৯১,৯২ সালের এসএসসি  ব্যাচে গিয়ে পরিণত হয়। শুধু তাই নয়, এই ব্যাচ  একটি স্কুলে সীমাবদ্ধ রাখা যায়নি। পারিপাশির্^ক অবস্থায় সবার  আবেদনে শহরের রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আরএসকে ইনস্টিটিউশন ও ইয়াছিন উচ্চ বিদ্যালয়কে সম্পৃক্ত করা হয়। মূলত  নব্বইয়ের দশকে ফিরে যাওয়া,  পুরনো বন্ধুদের সাথে কিছু সুন্দর সময় কাটানো, সব কিছু ভুলে সময়টাকে উপভোগ করাই  এ অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য। এছাড়া  আমাদের মধ্য থেকে ডা. তুহিন, ফরিদ, পারভেজ, বকুলসহ অনেক বন্ধু বিদায় নিয়েছেন। তাদেরকেও স্মরণ করা।

পুনর্মিলনীতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নায়েমের টিচার ট্রেইনার তৌহিদ  হাসান মধু বলেন,  ১৯৯১ সালে তিনি রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ ৩১ বছর। এর মধ্যে অনেকেই অনেক জায়গায় চলে গেছে। কারও সাথে দেখা সাক্ষাৎ হয়নি। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন করে তাদের সাথে একটি  যোগাযোগের ক্ষেত্র তৈরি হলো।  আয়োজকদের আমন্ত্রণে বন্ধুরা সাড়া দিয়ে আন্তরিকতা দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছে তাদের ধন্যবাদ। বন্ধুর মর্যাদা তারা রক্ষা করেছে। আর এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের প্রজন্ম তার অভিভাবকের বন্ধুদের দেখবে। আমরাও আমাদের বন্ধুদের নিয়ে কেন গর্ব করি তারা সেটা বুঝতে পারবে। সর্বোপরি  আমরা পুরনো বন্ধুদের এক সূতোয় গাঁথতে চাই।

ঢাকা থেকে আসা ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন আহমেদ নিউটন বলেন, এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অনেক দিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। বিস্মৃত হয়ে যাওয়া স্মৃতিগুলো আবার জেগে উঠেছে। কৈশোর হৈহুল্লোড়, খেলাধুলা সব স্মৃতি জেগে উঠছে। বিশেষ করে ছেলেবেলার বন্ধুদের সাথে অনেক দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। তাদেরকে অনেকদিন পর দেখে ভালো লাগছে। নতুন করে তাদের সাথে পরিচিত হয়ে খুবই ভালো লাগছে। অনুষ্ঠানটি  আয়োজন করতে যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।

শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ আশুলিয়া অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মশিউদৌলা রেজা জুয়েল বলেন, শত ব্যস্ততার মাঝেও বন্ধুদের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে এ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। সত্যিই খুব ভালো লাগছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সময় কোন দিক দিয়ে চলে গেছে টেরই পাওয়া যায়নি। আর সবচেয়ে  বড় কথা হলো পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ হওয়ার এটাই  সবচেয়ে বড় মাধ্যম। এমন সুযোগ সব সময় আসেনা। পুরনো মুখগুলো দেখতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। আমরা সবাই যেন আমৃত্যু একসঙ্গে থাকতে পারি।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

রাজবাড়ীতে এসএসসি ৯০,৯১,৯২ ব্যাচের পুনর্মিলনী ।। যেন ফিরে এলো শৈশব

প্রকাশের সময় : ০৬:৪২:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১

জনতার আদালত অনলাইন ॥  শৈশবের স্মৃতি, কৈশোরের স্বপ্ন সব যেন ফিরে এসেছিলো এদিন।  মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিলো রাজবাড়ী বেড়াডাঙ্গার শিশুপার্ক। রাজবাড়ী শহরের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আরএসকে ইনস্টিটিউশন ও ইয়াছিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯৯০, ৯১ ও ৯২ সালে এসএসসি  ব্যাচের পরীক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো  পুনর্মিলনী। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে মুখর হয়ে ওঠে শিশুপার্ক।

এসব অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল মশার কয়েল ফানি গেম, এইম ইন লাইফ, ডোন্ট মাইন্ড মোসট ওয়ান্টেড ফানি গেম এবং সোলজার ব্যান্ডের পরিবেশনায় কনসার্ট। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রাজবাড়ী কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজির শিক্ষক নাদিম আহমেদ। রাজবাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ১৯০ জন  বন্ধু অংশগ্রহণ করেন এ অনুষ্ঠানে।

আয়োজক কাজী শাখাওয়াত হোসেন জানান, অনেকদিন ধরেই তারা কয়েক বন্ধু মিলে অনুষ্ঠানটি আয়োজনের কথা  ভাবছিলেন। প্রথমে ছোট পরিসরে বারবিকিউ পার্টির কথা ভেবেছিলেন। পরে অনুষ্ঠানের পরিসর বাড়তে বাড়তে ৯০,৯১,৯২ সালের এসএসসি  ব্যাচে গিয়ে পরিণত হয়। শুধু তাই নয়, এই ব্যাচ  একটি স্কুলে সীমাবদ্ধ রাখা যায়নি। পারিপাশির্^ক অবস্থায় সবার  আবেদনে শহরের রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আরএসকে ইনস্টিটিউশন ও ইয়াছিন উচ্চ বিদ্যালয়কে সম্পৃক্ত করা হয়। মূলত  নব্বইয়ের দশকে ফিরে যাওয়া,  পুরনো বন্ধুদের সাথে কিছু সুন্দর সময় কাটানো, সব কিছু ভুলে সময়টাকে উপভোগ করাই  এ অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য। এছাড়া  আমাদের মধ্য থেকে ডা. তুহিন, ফরিদ, পারভেজ, বকুলসহ অনেক বন্ধু বিদায় নিয়েছেন। তাদেরকেও স্মরণ করা।

পুনর্মিলনীতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নায়েমের টিচার ট্রেইনার তৌহিদ  হাসান মধু বলেন,  ১৯৯১ সালে তিনি রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ ৩১ বছর। এর মধ্যে অনেকেই অনেক জায়গায় চলে গেছে। কারও সাথে দেখা সাক্ষাৎ হয়নি। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন করে তাদের সাথে একটি  যোগাযোগের ক্ষেত্র তৈরি হলো।  আয়োজকদের আমন্ত্রণে বন্ধুরা সাড়া দিয়ে আন্তরিকতা দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছে তাদের ধন্যবাদ। বন্ধুর মর্যাদা তারা রক্ষা করেছে। আর এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের প্রজন্ম তার অভিভাবকের বন্ধুদের দেখবে। আমরাও আমাদের বন্ধুদের নিয়ে কেন গর্ব করি তারা সেটা বুঝতে পারবে। সর্বোপরি  আমরা পুরনো বন্ধুদের এক সূতোয় গাঁথতে চাই।

ঢাকা থেকে আসা ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন আহমেদ নিউটন বলেন, এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অনেক দিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। বিস্মৃত হয়ে যাওয়া স্মৃতিগুলো আবার জেগে উঠেছে। কৈশোর হৈহুল্লোড়, খেলাধুলা সব স্মৃতি জেগে উঠছে। বিশেষ করে ছেলেবেলার বন্ধুদের সাথে অনেক দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। তাদেরকে অনেকদিন পর দেখে ভালো লাগছে। নতুন করে তাদের সাথে পরিচিত হয়ে খুবই ভালো লাগছে। অনুষ্ঠানটি  আয়োজন করতে যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।

শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ আশুলিয়া অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মশিউদৌলা রেজা জুয়েল বলেন, শত ব্যস্ততার মাঝেও বন্ধুদের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে এ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। সত্যিই খুব ভালো লাগছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সময় কোন দিক দিয়ে চলে গেছে টেরই পাওয়া যায়নি। আর সবচেয়ে  বড় কথা হলো পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ হওয়ার এটাই  সবচেয়ে বড় মাধ্যম। এমন সুযোগ সব সময় আসেনা। পুরনো মুখগুলো দেখতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। আমরা সবাই যেন আমৃত্যু একসঙ্গে থাকতে পারি।