Dhaka ০৯:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএনপি নেতার নেতৃত্বে সরকারি দিঘি থেকে মাছ লুট

ডেস্ক নিউজ
  • প্রকাশের সময় : ১২:৩৫:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 30

 

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে দুই বিএনপি নেতার নেতৃত্বে ১৪ বিঘা আয়তনের কালিঞ্চি সরকারি দিঘি থেকে লক্ষাধিক টাকার মাছ লুটের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকালে উপজেলার কালিঞ্চি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ দুই নেতা হলেন উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ ও অর্থ সম্পাদক সোহরাব আলী। মাছ ধরায় বাধা দিলে তারা দাবি করেন, পাঁচ বছর আগে দিঘিটি লিজ নিয়ে মাছ ছাড়া হয়েছিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোরে ১০/১২ জন জেলে নিয়ে কালিঞ্চি সরকারি দিঘিতে জাল টানতে শুরু করেন প্রশান্ত, সুকুমার ও শাহিন। এতে বাধা দিলে তারা বিএনপি নেতা সোহরাব আলীর নির্দেশে মাছ ধরার কথা জানান। জাল টেনে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরে স্থানীয় সোনারমোড় মৎস্য আড়তে নিয়ে বিক্রি করেন তারা।

ইউপি সদস্য আজগর আলী বুলু জানান, বহিরাগত জেলেদের নিয়ে সকাল থেকে মাছ লুট করা হয়। তিনটি মোটরসাইকেলযোগে ছয়টির বেশি বস্তায় করে এসব মাছ আড়তে নিয়ে বিক্রি করা হয়। কয়েকটি ভেটকি মাছ ২০ কেজিরও বেশি ওজনের। তিনি বলেন, আশপাশের ছয় গ্রামের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ এই দিঘির পানি ব্যবহার করে। এভাবে জাল টেনে মাছ ধরায় তারা দিঘি থেকে খাওয়ার উপযোগী পানি নিতে পারছেন না।

মাছ ধরার বিষয়ে সুকুমার মণ্ডলের ভাষ্য, প্রায় পাঁচ বছর আগে দিঘিতে এসব মাছ ছাড়েন সোহরাব আলী। তাঁর নির্দেশেই তারা মাছ ধরেছেন। এ বিষয়ে সোহরাব আলী বলেন, অসুস্থতার কারণে তিনি বাড়িতে অবস্থান করছেন। তবে জেলা পরিষদের এ দিঘি লিজ নিয়ে বিএনপি নেতা আবদুল মজিদ ও ছাত্রদল নেতা রাকিব হোসেন মাছ ছেড়েছিলেন।

আবদুল মজিদ দাবি করেন, মাছ ধরার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তবে সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা রাকিব তাঁকে মাছ ধরার কথা জানিয়েছিলেন।

নিজেকে জেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা পরিচয় দিয়ে রাকিব হোসেন বলেন, সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফা মুকুল জেলা পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তাঁর ডাকের দিঘির মাছ লুট করে নিয়েছিলেন। বাধ্য হয়ে তিনি তাঁর ছাড়া মাছ এতদিন পর তুলে নিয়েছেন।

সরকারি দিঘিতে এভাবে মাছ ধরার কথা না জানিয়ে জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মো. খলিল হোসেন বলেন, দিঘি কাউকে ইজারা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তত্ত্বাবধায়ককে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

বিএনপি নেতার নেতৃত্বে সরকারি দিঘি থেকে মাছ লুট

প্রকাশের সময় : ১২:৩৫:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

 

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে দুই বিএনপি নেতার নেতৃত্বে ১৪ বিঘা আয়তনের কালিঞ্চি সরকারি দিঘি থেকে লক্ষাধিক টাকার মাছ লুটের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকালে উপজেলার কালিঞ্চি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ দুই নেতা হলেন উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ ও অর্থ সম্পাদক সোহরাব আলী। মাছ ধরায় বাধা দিলে তারা দাবি করেন, পাঁচ বছর আগে দিঘিটি লিজ নিয়ে মাছ ছাড়া হয়েছিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোরে ১০/১২ জন জেলে নিয়ে কালিঞ্চি সরকারি দিঘিতে জাল টানতে শুরু করেন প্রশান্ত, সুকুমার ও শাহিন। এতে বাধা দিলে তারা বিএনপি নেতা সোহরাব আলীর নির্দেশে মাছ ধরার কথা জানান। জাল টেনে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরে স্থানীয় সোনারমোড় মৎস্য আড়তে নিয়ে বিক্রি করেন তারা।

ইউপি সদস্য আজগর আলী বুলু জানান, বহিরাগত জেলেদের নিয়ে সকাল থেকে মাছ লুট করা হয়। তিনটি মোটরসাইকেলযোগে ছয়টির বেশি বস্তায় করে এসব মাছ আড়তে নিয়ে বিক্রি করা হয়। কয়েকটি ভেটকি মাছ ২০ কেজিরও বেশি ওজনের। তিনি বলেন, আশপাশের ছয় গ্রামের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ এই দিঘির পানি ব্যবহার করে। এভাবে জাল টেনে মাছ ধরায় তারা দিঘি থেকে খাওয়ার উপযোগী পানি নিতে পারছেন না।

মাছ ধরার বিষয়ে সুকুমার মণ্ডলের ভাষ্য, প্রায় পাঁচ বছর আগে দিঘিতে এসব মাছ ছাড়েন সোহরাব আলী। তাঁর নির্দেশেই তারা মাছ ধরেছেন। এ বিষয়ে সোহরাব আলী বলেন, অসুস্থতার কারণে তিনি বাড়িতে অবস্থান করছেন। তবে জেলা পরিষদের এ দিঘি লিজ নিয়ে বিএনপি নেতা আবদুল মজিদ ও ছাত্রদল নেতা রাকিব হোসেন মাছ ছেড়েছিলেন।

আবদুল মজিদ দাবি করেন, মাছ ধরার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তবে সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা রাকিব তাঁকে মাছ ধরার কথা জানিয়েছিলেন।

নিজেকে জেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা পরিচয় দিয়ে রাকিব হোসেন বলেন, সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফা মুকুল জেলা পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তাঁর ডাকের দিঘির মাছ লুট করে নিয়েছিলেন। বাধ্য হয়ে তিনি তাঁর ছাড়া মাছ এতদিন পর তুলে নিয়েছেন।

সরকারি দিঘিতে এভাবে মাছ ধরার কথা না জানিয়ে জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মো. খলিল হোসেন বলেন, দিঘি কাউকে ইজারা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তত্ত্বাবধায়ককে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।