জিনের ভয় দেখিয়ে ২ কিশোরীকে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ
- প্রকাশের সময় : ১১:৩৭:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১
- / ১৬৭৭ জন সংবাদটি পড়েছেন
Man's hand holding a woman hand for rape and sexual abuse concept, Wound domestic violence rape, concept photo of sexual assault, International Women's Day
জনতার আদালত অনলাইন ॥ জ¦ীনের ভয় দেখিয়ে নানা কৌশলে দুই কিশোরীকে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে আসছিলো সবুর মন্ডল নামে এক ভন্ড প্রতারক। শুধু তাই নয়, মানুষের সমস্যা সমাধানের কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের প্রাণপুর গ্রামে। সে একই গ্রামের বাসিন্দা। এঘটনায় নিপীড়নের শিকার দুই কিশোরীর পরিবার রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে সবুর মন্ডলের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে। এলাকায় ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই পলাতক সবুর মন্ডল।
নিপীড়নের শিকার এক কিশোরীর ভাষ্য, সবুর মন্ডল তার বাড়িতে জ¦ীনের আসন বসায়। সেই আসনে আমাকে যেতে বলেছিল। আমি যেতে না চাওয়ায় সবুর বলেছিল না গেলে তোমার ও তোমার ভগ্নিপতির ক্ষতি হবে। এই ভয়ে একদিন রাতে তার আসনে গেলে আমাকে দুই রাকাত নামাজ পড়তে বলে। নামাজ শেষ করার আগেই ঘরের আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। এরপর সবুর মন্ডল একটি জুব্বা পড়ে এসে আমার শরীরে হাত দেয়। আমি বাধা দিলে বলে ‘আমি জ¦ীন সবুরের শরীরে তোমার কাছে এসেছি। আমার খায়েশ মিটিয়ে দাও। তোমার সকল আশা পূরণ হবে।’ এরপর আমাকে জোর করে ধর্ষণ করে। চিৎকার দিতে চাইলে মুখ চেপে ধরে। ওইদিনের পর নানান ভয়ভীতি দেখিয়ে আরও চারবার সে আমাকে ধর্ষণ করেছে। পরে বিষয়টি আমার বড় বোনকে জানাই। এটা বুঝতে পেরে সবুর আমার বাড়িতে লোক পাঠিয়ে হুমকি দেয়। নিপীড়নের শিকার অপর কিশোরী জানান, মাসখানেক আগে আমার বাবাকে ধনী করে দেবে এমন কথা বলে এক গ্লাস পানি নিয়ে রাতের বেলায় নির্জন তালগাছের নীচে যেতে বলে। আমি সেখানে যাওয়ার পর আমার হাত বেঁধে জোর করে আমাকে ধর্ষণ করে। আমি চিৎকার দিতে গেলে বলে, জ¦ীন তোমার বাবাকে মেরে ফেলবে। ধর্ষণের ঘটনা কাউকে জানালে পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে যাবে। এরপর নানান ভয়ভীতি দেখিয়ে আরও বেশ কয়েকবার সে ধর্ষণ করেছে। প্রতারক সবুর মন্ডলের বিষয়ে স্থানীয় যুবলীগ কর্মী পেশায় ফার্নিচার ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম জানান, সবুরের দৃশ্যত কোনো পেশা নেই। লোক ঠকানোই তার কাজ। জ¦ীনের মাধ্যমে চাকরী পাইয়ে দেওয়া, মামলা থেকে রেহাই পাওয়া, জমি উদ্ধারসহ বিভিন্ন কথা বলে মানুষের কাছ থেকে সে টাকা নিয়েছে। বিষয়গুলো এলাকার মানুষ জানলেও কেউ কিছু বলতো না। সর্বশেষ মেয়েদের সাথে যেটা ঘটেছে এটা আর কেউ মেনে নিতে পারেনি। লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে বুঝতে পেরে সে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। তিন দিন আগে এলাকার এক ব্যক্তি সবুরকে ভ্যানে করে মাছপাড়ার দিকে যেতে দেখেছেন। এরপর আর তাকে দেখা যায়নি। সবুর মন্ডলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি। এক এলাকাবাসী জানায়, সবুর চতুর প্রকৃতির লোক। বেশ কয়েক বছর আগে ডাকাতি করতে গিয়ে ধরা পড়ে জেল খেটেছে সবুর। পাংশা থানার ওসি একেএম শাহাদত হোসেন জানান, এখনও এবিষয়ে কেউ অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেনি। আদালতের মামলায় যে নির্দেশনা দেওয়া হবে সে অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত সবুর মন্ডলের সাথে কথা বলার জন্য তার মোবাইল ফোনে অনেকবার কল দেওয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। তার বাড়িতে গিয়েও তাকে পায়নি। তার পরিবারের কেউ এসব বিষয়ে কথা বলতে রাজী হয়নি।