Dhaka ০৯:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিক্ষার্থী ঝরে পড়া

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ১০:২৯:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ১১৭০ জন সংবাদটি পড়েছেন

অল্প বয়সে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীরা তাদের অর্জিত জ্ঞান কোনো কাজে লাগাতে পারে না। ফলে তারা সম্পদ হওয়ার পরিবর্তে সমাজের বোঝায় পরিণত হয়। শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার কারণগুলো বহুল আলোচিত। এখন সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে।

সোমবার রাজধানীতে একটি বেসরকারি সংস্থার সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ। বিষয়টি উদ্বেগজনক। জানা গেছে, মেয়ে ও ছেলেশিশুদের ১২ বছরের (উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত) গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে আছে। দেশে শিক্ষার্থীদের প্রাথমিকে ভর্তির হার বাড়ছে। এটি ইতিবাচক। শিক্ষার্থীরা যাতে অল্প বয়সে ঝরে না পড়ে সেজন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। ছেলে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার কারণ হিসাবে ধরে নেওয়া যায়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা শিশুশ্রমের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে।

অন্যদিকে মেয়ে শিক্ষার্থীদের অনেকেরই বাল্যবিয়ে হওয়ায় তারা ঝরে পড়ছে। সম্প্রতি অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের শিক্ষার ব্যয়ভার বহন করার ক্ষমতা হারিয়েছেন করোনা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে। শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার অন্যান্য কারণও উদঘাটিত হওয়া দরকার। কারণ যা-ই হোক না কেন, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনে এসব শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের জন্য ব্যবস্থা করতে হবে বিশেষ প্রণোদনার।

সমাজের দরিদ্রতম ব্যক্তিটিও চান তার সন্তান লেখাপড়া করুক। কিন্তু লেখাপড়ার ব্যয়ভার বহন করতে না পারার কারণেও অনেকের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না। দারিদ্র্য দূর করা না গেলে শিক্ষাক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করা কঠিন হবে। শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করা ও ধরে রাখার জন্য সরকার ইতোমধ্যে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে; বিনামূল্যে বইও দেওয়া হচ্ছে। তারপরও শিশুদের ধরে রাখা যাচ্ছে না।

এ অবস্থায় বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনেও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। ধরে নেওয়া যায়, তাদের অনেকে ঝরে পড়বে। প্রাথমিক-মাধ্যমিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ করতে হলে শিক্ষা খাতের অব্যবস্থাপনা, অদূরদর্শিতা, দুর্নীতি-এসবও দূর করতে হবে। মানুষের জীবনমান উন্নয়নের একটি গুরুত্বর্পূণ হাতিয়ার হলো শিক্ষা। কাজেই দেশে প্রত্যেক শিক্ষার্থী যাতে শিক্ষা সম্পন্ন করে সম্পদে পরিণত হতে পারে সেজন্য নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

শিক্ষার্থী ঝরে পড়া

প্রকাশের সময় : ১০:২৯:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২

অল্প বয়সে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীরা তাদের অর্জিত জ্ঞান কোনো কাজে লাগাতে পারে না। ফলে তারা সম্পদ হওয়ার পরিবর্তে সমাজের বোঝায় পরিণত হয়। শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার কারণগুলো বহুল আলোচিত। এখন সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে।

সোমবার রাজধানীতে একটি বেসরকারি সংস্থার সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ। বিষয়টি উদ্বেগজনক। জানা গেছে, মেয়ে ও ছেলেশিশুদের ১২ বছরের (উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত) গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে আছে। দেশে শিক্ষার্থীদের প্রাথমিকে ভর্তির হার বাড়ছে। এটি ইতিবাচক। শিক্ষার্থীরা যাতে অল্প বয়সে ঝরে না পড়ে সেজন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। ছেলে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার কারণ হিসাবে ধরে নেওয়া যায়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা শিশুশ্রমের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে।

অন্যদিকে মেয়ে শিক্ষার্থীদের অনেকেরই বাল্যবিয়ে হওয়ায় তারা ঝরে পড়ছে। সম্প্রতি অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের শিক্ষার ব্যয়ভার বহন করার ক্ষমতা হারিয়েছেন করোনা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে। শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার অন্যান্য কারণও উদঘাটিত হওয়া দরকার। কারণ যা-ই হোক না কেন, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনে এসব শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের জন্য ব্যবস্থা করতে হবে বিশেষ প্রণোদনার।

সমাজের দরিদ্রতম ব্যক্তিটিও চান তার সন্তান লেখাপড়া করুক। কিন্তু লেখাপড়ার ব্যয়ভার বহন করতে না পারার কারণেও অনেকের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না। দারিদ্র্য দূর করা না গেলে শিক্ষাক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করা কঠিন হবে। শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করা ও ধরে রাখার জন্য সরকার ইতোমধ্যে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে; বিনামূল্যে বইও দেওয়া হচ্ছে। তারপরও শিশুদের ধরে রাখা যাচ্ছে না।

এ অবস্থায় বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনেও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। ধরে নেওয়া যায়, তাদের অনেকে ঝরে পড়বে। প্রাথমিক-মাধ্যমিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ করতে হলে শিক্ষা খাতের অব্যবস্থাপনা, অদূরদর্শিতা, দুর্নীতি-এসবও দূর করতে হবে। মানুষের জীবনমান উন্নয়নের একটি গুরুত্বর্পূণ হাতিয়ার হলো শিক্ষা। কাজেই দেশে প্রত্যেক শিক্ষার্থী যাতে শিক্ষা সম্পন্ন করে সম্পদে পরিণত হতে পারে সেজন্য নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।