বালিয়াকান্দিতে আরেক বিকাশ প্রতারক গ্রেপ্তার
- প্রকাশের সময় : ০৭:৪৫:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ জুলাই ২০২১
- / ১৫৪৬ জন সংবাদটি পড়েছেন
জনতার আদালত অনলাইন ॥ কখনও ব্যবসায়ী সেজে, কখনও বিকাশ এজেন্ট পরিচয় আবার বিকাশ অফিসের কর্মকর্তা বলে দীর্ঘদিন ধরে মানুষের সাথে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। এই চক্রের গুরুত্বপূর্ণ এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে বালিয়াকান্দি থানার পুলিশ। তার নাম মিরাজ হোসেন। সে উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের নারুয়া মদনডাঙ্গী গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিরাজের বাবা শুকুর আলী পেশায় একজন ভ্যানচালক। খুব টানাটানি করে চলতো তাদের সংসার। কিন্তু হঠাৎ করেই মিরাজের চালচলন ও বেশভূষায় আমূল পরিবর্তন আসে। সম্প্রতি দামী একটি মোটরসাইকেলও কিনেছে সে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রতারক চক্রটি বিভিন্নভাবে মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এদের খপ্পড়ে পড়ে অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়েছে। আবার কখনোও গভীর রাতে সুমধুর নারী ও পুরুষ কন্ঠে নানা ধর্মীয় ও স্বর্ণালংকার পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়। এভাবে প্রতারণা করে অনেকেই হয়ে গেছে কোটিপতি।
বালিয়াকান্দি থানা সূত্র জানায়, বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের নারুয়া, বাকসাডাঙ্গী, মধুপুর, চরটাকাপোড়া, চরঘিকমলা, মরাবিলা, কোনাগ্রাম, সোনাকান্দর, গাড়াকোলা, খাটিয়াগাড়া ও জঙ্গল ইউনিয়নের অলংকারপুর, ঢোলজানি, সমাধিনগর, পুষআমলাসহ বিভিন্ন গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে বিকাশ প্রতারক চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এরা একসাথেকাজ করে। কেউ বিকাশের দোকানের খাতার ছবি সংগ্রহ, মোবাইলে টাকা হাতানো, টাকা উত্তোলন, কেউ প্রশাসন প্রবেশে নজরদারী, বিকাশ সিম সংগ্রহ করার কাজে ভিন্ন ভিন্ন প্রতারকরা কাজ করে।
বালিয়াকান্দি থানার ওসি তারেকুজ্জামান জানান, গ্রেপ্তারকৃত মিরাজ হোসেন বিকাশ প্রতারক চক্রের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। একটি প্রতারণা মামলার রেফারেন্সে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই চক্রটি সম্মিলিতভাবে কাজ করে। মোবাইল ফোনে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে, বিকাশ অফিসের স্ফুটনিক নাম্বার দিয়ে তারা মানুষকে ফোন দিয়ে বিভ্রান্ত করে টাকা হাতিয়ে নেয়। এভাবে তারা দীর্ঘদিন ধরে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে। গত দুই মাস অনুসন্ধানের পর এই প্রতারক চক্রকে চিহ্নিত করতে পেরেছি। গত রোববার প্রতারক চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছি। সে ১৬৪ ধারায় তার দোষ স্বীকার করেছে। সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয় মিরাজকে।
তিনি আরও জানান, সময়ের সাথে সাথে এরা প্রতারণার ধরনও পাল্টায়। যেমন একজন ব্যবসায়ীকে ফোন দিয়ে বলে, আপনার নাম্বারে টাকা পাঠানো হয়েছে। টাকাটা ভুল করে চলে গেছে। আমি বিকাশ নম্বরে ফোন দিয়েছি। আপনার নাম্বার বন্ধ হয়ে যাবে। বিকাশ অফিস থেকে ফোন করলে কথা বলবেন। এরপর বিকাশের যে নম্বর ১৬২৪৭ এই নাম্বারটি স্ফুটনিক করে ফোন দেয়। পার্থক্য হলো প্রতারকরা বিকাশের যে নাম্বার ব্যবহার করে ফোন দেয় তার আগে একটি (+) চিহ্ন থাকে। কিন্তু গ্রাহকরা এটি ধরতে পারেনা বলেই সহজে ফাঁদে পড়ে প্রতারণার শিকার হয়। সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে প্রতারক মিরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে দুটি মোবাইল সেট ও সাতটি সীম কার্ড জব্দ করা হয়। মিরাজকে মঙ্গলবার রাজবাড়ীর আদালতে চালান করা হয়েছে।