কালুখালীতে সালিসে বর্বর নির্যাতন, ইউপি চেয়ারম্যানসহ গ্রেপ্তার ২
- প্রকাশের সময় : ০৮:১৩:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২১
- / ১৪২১ জন সংবাদটি পড়েছেন
জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাশেদুল নামে এক যুবক দ্বিতীয় বিয়ে করেছে- প্রথম স্ত্রীর এমন অভিযোগ পেয়ে সালিস ডাকেন চেয়ারম্যান। সেখানে রাশেদুলকে আর্থিক জরিমানা, জুতাপেটা করার পর পুরুষাঙ্গে ইট বেঁধে ঘুরানো হয়। রক্তপাত শুরু হওয়ার পর তাকে যেতে দেওয়া হয়নি হাসপাতালে। পরে পুলিশ ৯৯৯ থেকে খবর পেয়ে রাশেদুলকে উদ্ধার ও ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম আলীকে গ্রেপ্তার করে। মধ্যযুগীয় বর্বর ঘটনাটি ঘটেছে রোববার সন্ধ্যায় রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নের চর পাতুরিয়া গ্রামে। ভুক্তভোগী রাশেদুল একই গ্রামের ইমান আলীর ছেলে। রাতে তাকে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গ্রেপ্তার শহিদুল ইসলাম আলী একই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। গ্রেপ্তার অপরজন তার সহযোগী রায়হান। তার বাড়ি একই ইউনিয়ন এলাকায়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রোববার সন্ধ্যার দিকে রাশেদুলের বিচার করার জন্য চর পাতুরিয়া স্কুল মাঠে সালিসের আয়োজন করেন সাওরাইল ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম আলী। সালিসে তাকে দোশী সাব্যস্ত করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও একশটি জুতার বাড়ির রায় দেওয়া হয়। পরে ক্ষুব্ধ হয়ে তার পুরুষাঙ্গে ইট বেঁধে ঘোরানো হয়। এক পর্যায়ে রাশেদুলের পুরুষাঙ্গ দিয়ে রক্তপাত হতে থাকে। ঘটনার ভয়াবহতায় হকচকিয়ে যায় চেয়ারম্যান ও তার লোকজন। রাশেদুলকে তড়িঘড়ি করে তার বাড়িতে নিয়ে যায় চেয়ারম্যানের লোকেরা।
কালুখালী থানার ওসি মাসুদুর রহমান জানান, দ্বিতীয় বিয়ে করার অপরাধে রাশেদুলকে সালিসি রায়ের নামে নির্যাতন করেছেন চেয়ারম্যান আলী। ৯৯৯ এ এমন খবর পেয়ে তিনি সেখানে যান। রাশেদুলের বাড়ি গিয়ে দেখেন রাশেদুলকে লেপ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। লেপের কভার রক্তে ভিজে গেছে। নির্যাতনে রক্তপাত শুরু হওয়ার পর হাসতপাতালে নিলে পুলিশ জেনে যাবে একারণে রাশেদুলকে তার নিজ বাড়িতে রেখে গ্রাম্য চিকিৎসক ডেকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বাড়ির চারপাশে পাহাড়া বসানো হয়েছিল। সেখান থেকে রাশেদুলকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে চেয়ারম্যান আলী ও তার সহযোগী রায়হানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এব্যাপারে ভুক্তভোগী রাশেদুলের বাবা ইমান আলী বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আলী ও রায়হানকে সোমবার রাজবাড়ীর আদালতে চালান করা হয়েছে। তিনি বলেন, এটি একটি মধ্যযুগীয় বর্বরতা।
এদিকে এমন নির্যাতনের ঘটনায় এলাকাবাসী তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা চেয়ারম্যান আলীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে। কিন্তু প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ নাম প্রকাশ করতে রাজী হয়নি।