Dhaka ০৪:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ:
একাত্তরের চেতনা ভুলিয়ে দিতে একটি মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত : মির্জা ফখরুল তৃতীয় দিনের মতো শহীদ মিনারে প্রাথমিক শিক্ষকদের অবস্থান একনেকে ৭ হাজার ১৫০ কোটি টাকার ১২ প্রকল্প অনুমোদন তিনবার পেছানোর পর শুরু হলো আবু সাঈদ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ঢাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে গুলি করে হত্যা, যা দেখা গেল সিসিটিভিতে সাবেক জিএমপি কমিশনার নাজমুল করিম খান বরখাস্ত এবার মৎস্য উপদেষ্টার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লক্ষ্য করে দুই ককটেল বিস্ফোরণ গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ মুন্সীগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব, প্রতিপক্ষের গুলিতে একজন নিহত নিষিদ্ধ সংগঠনগুলো বিক্ষোভের চেষ্টা করলে আইনের সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ হবে

বালিয়াকান্দিতে ৩ দিনের কন্যা সন্তান বিক্রি করে দিলেন এক দম্পতি

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৪৩:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ জুন ২০২০
  • / 554

জনতার আদালত অনলাইন॥ মাত্র ৫০ হাজার টাকায় তিন দিনের কন্যা সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছে সাহিবুল ও তার স্ত্রী। বছর দুয়েক আগে তারা আরও একটি কন্যা সন্তান বিক্রি করেছে বলে জানা গেছে। তবে তাদের ঔরসে জন্ম নেয়া ছেলে সন্তান দুটি রয়েছে তাদের কাছেই। পরপর দুটি কন্যা সন্তান বিক্রি করার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের তুলশী বরাট গ্রামে। পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে সাহিবুল ও তার স্ত্রী দুজনেই মানসিক প্রতিবন্ধী।
জানা গেছে, সাহিবুল দম্পতির পরপর দুটি ছেলে জন্মগ্রহণ করে। যাদের একজনের বয়স ছয় বছর, অন্যজনের বয়স চার। এই ছেলে দুটি তাদের কাছেই আছে। বছর দুয়েক আগে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়ার পর তাকে উপজেলার বেরুলি গ্রামের এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেয়। সর্বশেষ গত রোববার তিন দিনের কন্যা শিশুটিকে বিক্রি করা হয় সাতক্ষীরা জেলার এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে।
সাহিবুলের মা জমিরন বিবি জানান, তার ছেলে সাহিবুল ও পুত্রবধূ দুজনই মানসিক প্রতিবন্ধী। তারা সন্তানদের ঠিকমতো খাবার দিতে পারে না। একারণে সাতক্ষীরা জেলার দূরসম্পর্কের এক আত্মীয়ের কাছে দেয়া হয়েছে। কত টাকার বিনিময়ে দেয়া হলো- এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ওরা খুশী হয়ে যা দেয়।
সাহিবুলের ভাইয়ের স্ত্রী আম্বিয়া বেগমও জানান, স্বামী-স্ত্রী দুজনেই প্রতিবন্ধী হওয়ায় তিন দিনের কন্যা শিশুটিকে সাতক্ষীরায় জনৈক এক ব্যক্তিকে দিয়েছেন। টাকার বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি। তবে ইতিপূর্বে আরও একটি কন্যা সন্তানকেও উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের বেরুলী গ্রামে বিক্রি করা হয়েছে বলে স্বীকার করেন। তিনি আরও জানান, ভাসুর সাহিবুলের দুই ছেলেকে তারাই লালন পালন করছেন।
সাহিবুল ও তার স্ত্রীর জানান, ছেলেমেয়েদের ঠিকমতো খাবার দিতে পারি না। তাই দিয়ে দিয়েছি।
জামালপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আবুল কালাম আজাদ জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। এর আগেও তারা একটি কন্যা সন্তান বিক্রি করেছে। খোঁজ খবর নিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা চালাবেন বলে জানান তিনি।
জামালপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুস আলী সর্দার জানান, সোমবার সকালে বিষয়টি তিনি জেনেছেন। যারা সন্তান নিয়েছে তাদেরকে ফেরৎ দিয়ে দিতে বলেছি।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, শিশু সন্তান বিক্রি সামাজিক অপরাধ। যদি কেউ পালন করার জন্য নিয়ে থাকে সেটা আইনানুযায়ী নেওয়া উচিত ছিল। খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে ছয় বছরের ব্যবধানে ওই দম্পতির চার সন্তান জন্ম নেয়ায় এলাকাবাসী উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা অফিসের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ওই এলাকায় পরিবার পরিকল্পনা অফিসের লোকজনকে কখনও দেখা যায়নি বলে জানায় এলাকাবাসী।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এসএম আল কামাল জানান, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে পরিবার পরিকল্পনা কর্মীর পদ শূন্য রয়েছে। একটি এনজিওকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

বালিয়াকান্দিতে ৩ দিনের কন্যা সন্তান বিক্রি করে দিলেন এক দম্পতি

প্রকাশের সময় : ০৭:৪৩:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ জুন ২০২০

জনতার আদালত অনলাইন॥ মাত্র ৫০ হাজার টাকায় তিন দিনের কন্যা সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছে সাহিবুল ও তার স্ত্রী। বছর দুয়েক আগে তারা আরও একটি কন্যা সন্তান বিক্রি করেছে বলে জানা গেছে। তবে তাদের ঔরসে জন্ম নেয়া ছেলে সন্তান দুটি রয়েছে তাদের কাছেই। পরপর দুটি কন্যা সন্তান বিক্রি করার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের তুলশী বরাট গ্রামে। পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে সাহিবুল ও তার স্ত্রী দুজনেই মানসিক প্রতিবন্ধী।
জানা গেছে, সাহিবুল দম্পতির পরপর দুটি ছেলে জন্মগ্রহণ করে। যাদের একজনের বয়স ছয় বছর, অন্যজনের বয়স চার। এই ছেলে দুটি তাদের কাছেই আছে। বছর দুয়েক আগে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়ার পর তাকে উপজেলার বেরুলি গ্রামের এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেয়। সর্বশেষ গত রোববার তিন দিনের কন্যা শিশুটিকে বিক্রি করা হয় সাতক্ষীরা জেলার এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে।
সাহিবুলের মা জমিরন বিবি জানান, তার ছেলে সাহিবুল ও পুত্রবধূ দুজনই মানসিক প্রতিবন্ধী। তারা সন্তানদের ঠিকমতো খাবার দিতে পারে না। একারণে সাতক্ষীরা জেলার দূরসম্পর্কের এক আত্মীয়ের কাছে দেয়া হয়েছে। কত টাকার বিনিময়ে দেয়া হলো- এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ওরা খুশী হয়ে যা দেয়।
সাহিবুলের ভাইয়ের স্ত্রী আম্বিয়া বেগমও জানান, স্বামী-স্ত্রী দুজনেই প্রতিবন্ধী হওয়ায় তিন দিনের কন্যা শিশুটিকে সাতক্ষীরায় জনৈক এক ব্যক্তিকে দিয়েছেন। টাকার বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি। তবে ইতিপূর্বে আরও একটি কন্যা সন্তানকেও উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের বেরুলী গ্রামে বিক্রি করা হয়েছে বলে স্বীকার করেন। তিনি আরও জানান, ভাসুর সাহিবুলের দুই ছেলেকে তারাই লালন পালন করছেন।
সাহিবুল ও তার স্ত্রীর জানান, ছেলেমেয়েদের ঠিকমতো খাবার দিতে পারি না। তাই দিয়ে দিয়েছি।
জামালপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আবুল কালাম আজাদ জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। এর আগেও তারা একটি কন্যা সন্তান বিক্রি করেছে। খোঁজ খবর নিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা চালাবেন বলে জানান তিনি।
জামালপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুস আলী সর্দার জানান, সোমবার সকালে বিষয়টি তিনি জেনেছেন। যারা সন্তান নিয়েছে তাদেরকে ফেরৎ দিয়ে দিতে বলেছি।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, শিশু সন্তান বিক্রি সামাজিক অপরাধ। যদি কেউ পালন করার জন্য নিয়ে থাকে সেটা আইনানুযায়ী নেওয়া উচিত ছিল। খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে ছয় বছরের ব্যবধানে ওই দম্পতির চার সন্তান জন্ম নেয়ায় এলাকাবাসী উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা অফিসের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ওই এলাকায় পরিবার পরিকল্পনা অফিসের লোকজনকে কখনও দেখা যায়নি বলে জানায় এলাকাবাসী।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এসএম আল কামাল জানান, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে পরিবার পরিকল্পনা কর্মীর পদ শূন্য রয়েছে। একটি এনজিওকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল।