হত্যার পর টুকরো করে বস্তাবন্দী লাশ ফেলা হয় বিলে, ডিএনএ পরীক্ষায় মিলল পরিচয় । গ্রেফতার ২
- প্রকাশের সময় : ০৯:২১:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ১১১৫ জন সংবাদটি পড়েছেন
ফরিদপুরের মধুখালী থানা এলাকায় মাথার খুলি ও বেশ কিছু খন্ডিত হাড়ের ডিএনএ পরীক্ষা শেষে লাশ সনাক্ত করে নির্মম হত্যাকান্ডের রহস্য উৎঘাটনসহ মুল দুই আসামীকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।
শনিবার দুপুর ১টায় ফরিদপুর পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে হত্যার রহস্য উৎঘাটন ও আসামী গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মো: শাহজাহান (বিপিএম সেবা)।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বিন কালাম, মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: শহিদুল ইসলাম সহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় পুলিশ সুপার মো: শাহজাহান জানান ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজবাড়ি জেলার বালিয়াকান্দি থানার খর্দ্দ মেঘচামী খাসকান্দি গ্রামের আকিদুল মোল্যার ছেলে আল আমিন মোল্য (১৭) নিখোজ হয়। এর প্রায় তিন মাস পরে পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার ছাইভাঙ্গার বিলে অজ্ঞাত একটি লাশের মাথার খুলিসহ কয়েক টুকরা হাড়গোর উদ্ধার করে মধুখালী থানা পুলিশ।
নিখোজ নিহত আলামিনের প্যান্টের বেল্ট দেখে ছেলের হাড়গোর বলে দাবি করে তার পিতা। নিহতের পিতা আকিদুল মোল্যা ২০২২ সালের ৩১ নভেম্বর বাদী হয়ে মধুখালী থানায় মামলা করে। ঢাকার ফরেনসিক ল্যাবে পিতামাতার ডিএনএ এবং উদ্ধার হওয়া হাড়গোড়ের ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফলে উদ্ধার হওয়া আলামত তাদের ছেলের বলে নিশ্চিত হয় পুলিশ।
তারা হত্যার রহস্য উৎঘাটন শেষে গতকাল ১৫ সেপ্টেম্বর ২৩ শুক্রবার বিকেলে রাজবাড়ির বালিয়াকান্দি থেকে আসামী আলমগীর হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার দেয়া তথ্য মতে ১৬ সেপ্টেম্বর ২৩ শনিবার ভোরে ২টার সময় অপর আসামী মনির শেখকে বালিয়াকান্দির নিজ বাড়ি থেকে আটক করে। তার দেয়া তথ্য মতে হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়।
আসামীরা এই হত্যার কথা স্বীকার করে লোমহর্ষক ও নির্মম এই হত্যাকান্ডে ঘটনা বর্ণনা করে। তারা জানায়, নিহত আলামিন ও আসামী আলমগীর একসাথে তাদের একালায় মিজানের মুরগির ফার্মে কাজ করতো। নিহতের পিতার সাথে ঐ এলাকার কাছিম মোল্যার সুদের টাকা-পয়সা ও জমি-জমা নিয়ে বিরোধ ছিলো। অপরদিকে মুরগির ফার্মের কিছু মালামাল চুরির ঘটনায় নিহত আলামিন জড়িত এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মুরগি ফার্মের কর্মচারীদেরকে টাকা দিয়ে কাছিম মোল্যা অপর দুই সহযোগী আলমগীর হোসেন ও মনির শেখকে সাথে নিয়ে আলামিনকে ধরে নিয়ে ছাইডাঙ্গা বিলের কাছে নিয়ে তাকে হত্যা করে। লাশ গুম করার জন্য তার শরীর চাপাতি দিয়ে কয়েক টুকরো করে বস্তায় ভরে পাশের বিলের মধ্যে ফেলে পালিয়ে যায়।
প্রায় তিন মাস পরে বিলের পানি শুকানোর পরে স্থানীয়রা একটি ছেড়া বস্তায় মানুষের হাড়গোড় দেখতে পেয়ে স্থানীয় মধুখালি থানা পুলিশকে খবর দেয়। আল আমিনকে হত্যার মধ্যে মুল পরিকল্পনাকারী কাছিম গ্রেফতার হওয়ার পূর্বেই মারা যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়। মামলা তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।