Dhaka ০১:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

রহস্যে ঘেরা মৃত্যু ৬ মাসের শিশুর

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৩০:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ১১৩১ জন সংবাদটি পড়েছেন

রাজবাড়ীর পাংশায় আব্দুল্লাহ নামে ছয় মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। শিশুর বাবা আল আমিনের দাবি তার স্ত্রী মীম হত্যা করেছে। শিশুর মা মীম আক্তার দায় চাপাচ্ছেন তার শাশুড়ির উপর। পুলিশ বলছে, শিশুটির মৃত্যু স্বাভাবিক না অস্বাভাবিক তা এখনও তারা নিশ্চিত নন। সোমবার সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনা ঘটে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গিপাড়া গ্রামে। তারা একই গ্রামের বাসিন্দা।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সোমবার বেলা ১১টার দিকে আল আমিন ও তার বাবা হবিবর রহমান কাজের জন্য বাইরে যান। বাড়িতে আল আমিনের স্ত্রী মীম ও তার মা ছিলেন। দুপুরে মীম তার ছেলে আব্দুল্লাহকে নিজ ঘরে নিয়ে যান। বিকেলের দিকে হঠাৎ মীম চিৎকার চেচামেচি করে বলেন, আমার ছেলে মারা গেছে। খবর পেয়ে আল আমিন ও তার বাবা বাড়ি ফিরে এসে আব্দুল্লাহর মৃত্যুর জন্য স্ত্রী মীমকে দায়ী করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন ভিড় জমায় ওই বাড়িতে। সন্ধ্যার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত শিশুর লাশ উদ্ধার করে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশুর বাবা-মা, দাদা-দাদীকে থানায় নিয়ে যায়।

শিশুর বাবা আল আমিন জানান, বিয়ের পর থেকেই তার স্ত্রী সংসারে অশান্তি শুরু করে। তিন মাস আগে তার শিশু পুত্রকে রেখে বাবার বাড়ি চলে যায়। তার নামে আদালতে যৌতুক মামলা করেছে। মামলায় যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয়। সংসারের স্বার্থে তাকে ফিরিয়ে আনা হয় বাড়িতে। এর মধ্যে তার স্ত্রী তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। স্ত্রী মীমই তার ছেলেকে মেরে ফেলেছে।

শিশুর মা মীম জানান, তার ছেলে দুদিন ধরে অসুস্থ। তাকে ডাক্তারও দেখানো হয়েছে। সোমবার তার শাশুড়ি ছেলেকে ওষুধ খাওয়ানোর পর তাকে ঘরে ঘুম পাড়াতে নিয়ে যান। ঘুমিয়ে যাওয়ার পর তিনি ঘর থেকে বের হন। পরে ফিরে গিয়ে দেখেন মারা গেছে।

তবে মীমের শাশুড়ি ডলি বেগম জানান, তিনি তার নাতিকে আদর করতেন। ভালোবাসতেন। তার পুত্রবধূ প্রায়ই বলতো সে নিজেও মরবে, অন্যদেরও মারবে। আর ওষুধ তিনি নাতিকে খাওয়াননি। তার পুত্রবধূই নাতিকে ওষুধ খাইয়েছে।

আল আমিনের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা যায়, দুই বছর আগে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার উথুলিয়া গ্রামের মফিজ মিয়ার মেয়ে মীমের সাথে বিয়ে হয় আল আমিনের। বিয়ের পর থেকে নানা কারণে দাম্পত্য কলহ চলছিলো। তিন মাস আগে মীম তার শিশু পুত্রকে রেখেই বাবার বাড়ি চলে যায়। কুষ্টিয়ার আদালতে আল আমিনের বিরুদ্ধে যৌতুক মামলাও করেন। পরে মীমকে বুঝিয়ে বাড়ি নিয়ে আসেন আল আমিন।

পাংশা থানার ওসি মাসুদুর রহমান জানান, শিশুটির মৃত্যু স্বাভাবিক না অস্বাভাবিক তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শিশুর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। একারণে রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে শিশুর লাশ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সোমবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যাদের আনা হয়েছিল রাতেই তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

রহস্যে ঘেরা মৃত্যু ৬ মাসের শিশুর

প্রকাশের সময় : ০৮:৩০:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

রাজবাড়ীর পাংশায় আব্দুল্লাহ নামে ছয় মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। শিশুর বাবা আল আমিনের দাবি তার স্ত্রী মীম হত্যা করেছে। শিশুর মা মীম আক্তার দায় চাপাচ্ছেন তার শাশুড়ির উপর। পুলিশ বলছে, শিশুটির মৃত্যু স্বাভাবিক না অস্বাভাবিক তা এখনও তারা নিশ্চিত নন। সোমবার সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনা ঘটে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গিপাড়া গ্রামে। তারা একই গ্রামের বাসিন্দা।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সোমবার বেলা ১১টার দিকে আল আমিন ও তার বাবা হবিবর রহমান কাজের জন্য বাইরে যান। বাড়িতে আল আমিনের স্ত্রী মীম ও তার মা ছিলেন। দুপুরে মীম তার ছেলে আব্দুল্লাহকে নিজ ঘরে নিয়ে যান। বিকেলের দিকে হঠাৎ মীম চিৎকার চেচামেচি করে বলেন, আমার ছেলে মারা গেছে। খবর পেয়ে আল আমিন ও তার বাবা বাড়ি ফিরে এসে আব্দুল্লাহর মৃত্যুর জন্য স্ত্রী মীমকে দায়ী করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন ভিড় জমায় ওই বাড়িতে। সন্ধ্যার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত শিশুর লাশ উদ্ধার করে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশুর বাবা-মা, দাদা-দাদীকে থানায় নিয়ে যায়।

শিশুর বাবা আল আমিন জানান, বিয়ের পর থেকেই তার স্ত্রী সংসারে অশান্তি শুরু করে। তিন মাস আগে তার শিশু পুত্রকে রেখে বাবার বাড়ি চলে যায়। তার নামে আদালতে যৌতুক মামলা করেছে। মামলায় যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয়। সংসারের স্বার্থে তাকে ফিরিয়ে আনা হয় বাড়িতে। এর মধ্যে তার স্ত্রী তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। স্ত্রী মীমই তার ছেলেকে মেরে ফেলেছে।

শিশুর মা মীম জানান, তার ছেলে দুদিন ধরে অসুস্থ। তাকে ডাক্তারও দেখানো হয়েছে। সোমবার তার শাশুড়ি ছেলেকে ওষুধ খাওয়ানোর পর তাকে ঘরে ঘুম পাড়াতে নিয়ে যান। ঘুমিয়ে যাওয়ার পর তিনি ঘর থেকে বের হন। পরে ফিরে গিয়ে দেখেন মারা গেছে।

তবে মীমের শাশুড়ি ডলি বেগম জানান, তিনি তার নাতিকে আদর করতেন। ভালোবাসতেন। তার পুত্রবধূ প্রায়ই বলতো সে নিজেও মরবে, অন্যদেরও মারবে। আর ওষুধ তিনি নাতিকে খাওয়াননি। তার পুত্রবধূই নাতিকে ওষুধ খাইয়েছে।

আল আমিনের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা যায়, দুই বছর আগে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার উথুলিয়া গ্রামের মফিজ মিয়ার মেয়ে মীমের সাথে বিয়ে হয় আল আমিনের। বিয়ের পর থেকে নানা কারণে দাম্পত্য কলহ চলছিলো। তিন মাস আগে মীম তার শিশু পুত্রকে রেখেই বাবার বাড়ি চলে যায়। কুষ্টিয়ার আদালতে আল আমিনের বিরুদ্ধে যৌতুক মামলাও করেন। পরে মীমকে বুঝিয়ে বাড়ি নিয়ে আসেন আল আমিন।

পাংশা থানার ওসি মাসুদুর রহমান জানান, শিশুটির মৃত্যু স্বাভাবিক না অস্বাভাবিক তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শিশুর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। একারণে রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে শিশুর লাশ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সোমবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যাদের আনা হয়েছিল রাতেই তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।