Dhaka ০২:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোয়ালন্দে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে সোলার লাইট

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৯:২৭:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০১৯
  • / ২১৩৬ জন সংবাদটি পড়েছেন

জনতার আদালত অনলাইন ॥ গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের আরপিডিএস আশ্রয় কেন্দ্রের একমাত্র সোলার লাইটটি মঙ্গলবার সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এতে করে পুরো অন্ধকারের মধ্যে পড়ে গেছে নদী ভাঙনের শিকার অসহায় ২৮টি পরিবার।
সোলারটি সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, সোলার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা শক্তি ফাউন্ডেশন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোলারটিকে ওই আশ্রয় কেন্দ্রেই আরো মজবুত করে স্থাপন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আশ্রয় কেন্দ্রের বাসিন্দারা জানান, এক মাস আগে নদী ভাঙনে সব হারিয়ে আমরা ২৮টি পরিবার এই আশ্রয় কেন্দ্রের খোলা মাঠে এসে আশ্রয় নেই। এখানে আলোর সমস্যা দুর করতে ভাঙনের মুখে থাকা সোলার লাইটটি ইউএনও স্যারের নির্দেশে এখানে এনে স্থাপন করা হয়। এই আলোই আমাদের এখানে একমাত্র ভরসা। এই সোলারের নীচে বসে আশ্রয় কেন্দ্রের ছেলেমেয়েরা কোন রকমে লেখাপড়া করে। চোর-ডাকাতদের উৎপাত হতে গবাদী পশুগুলোর রেহাইও মেলে এই আলোর কারণে। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরে এলাকার মেম্বর ও কিছু লোকজন সোলারটি তুলে নিয়ে নদীর পাড়ে অনেকটা জনমানবহীন আজিজ সরদারের পাড়ায় স্থাপন করে।
আশ্রয় কেন্দ্রের অবস্থানকারী আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার্থী রুমা আক্তার জানান, নদী ভাঙনের কারণে আমরা এখানে আশ্রয় নেয়া সবাই সর্বশান্ত হয়ে গেছি। রাতে আলো জ্বালিয়ে পড়ার জন্য আমার বাবার কেরোসিন তেল কেনার সামর্থ্য নেই। সোলারের আলোতেই কোনমতে পড়ছিলাম। কিন্তু আজ রাতে পড়তে পারবো না। সোলারটি নিয়ে যাওয়ায় আমাদের নানা ধরণের সমস্যায় পড়তে হবে।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলায় সোলার তত্বাবধানকারী শক্তি ফাউন্ডেশনের ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম জানান, আমি এলাকায় নেই। তবে শুনেছি এলাকার চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম ও মেম্বর আবুল কালাম আজাদ সোলারটি সরিয়ে পূর্বের জায়গায় নিয়ে গেছে।
দেবগ্রামের ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তবে শুনেছি সোলার তত্ত্বাবধানকারী এনজিও’র লোকজন এটি সরিয়ে নিয়েছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু সাইদ মন্ডল বলেন, সোলারটি সরানোর ব্যাপারে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। তবে জানতে পেরেছি এলাকার চেয়ারম্যানের নির্দেশে সেটি সরানো হয়। কিন্তু নদী ভাঙনের শিকার অতোগুলো অসহায় পরিবারকে অন্ধকারে ফেলে সোলারটি সরিয়ে নেয়া ঠিক হয়নি। এটাকে আরো ভালভাবে আশ্রয় কেন্দ্রের মাঠেই স্থাপন করা হবে।
এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবায়েত হায়াত শিপলু বলেন, সোলারটি সরিয়ে নেয়ার কথা শুনেছি। কাজটি ঠিক হয়নি। ওটাকে নিয়ে এসে আশ্রয় কেন্দ্রের মাঠেই স্থায়ীভাবে স্থাপন করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

গোয়ালন্দে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে সোলার লাইট

প্রকাশের সময় : ০৯:২৭:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০১৯

জনতার আদালত অনলাইন ॥ গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের আরপিডিএস আশ্রয় কেন্দ্রের একমাত্র সোলার লাইটটি মঙ্গলবার সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এতে করে পুরো অন্ধকারের মধ্যে পড়ে গেছে নদী ভাঙনের শিকার অসহায় ২৮টি পরিবার।
সোলারটি সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, সোলার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা শক্তি ফাউন্ডেশন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোলারটিকে ওই আশ্রয় কেন্দ্রেই আরো মজবুত করে স্থাপন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আশ্রয় কেন্দ্রের বাসিন্দারা জানান, এক মাস আগে নদী ভাঙনে সব হারিয়ে আমরা ২৮টি পরিবার এই আশ্রয় কেন্দ্রের খোলা মাঠে এসে আশ্রয় নেই। এখানে আলোর সমস্যা দুর করতে ভাঙনের মুখে থাকা সোলার লাইটটি ইউএনও স্যারের নির্দেশে এখানে এনে স্থাপন করা হয়। এই আলোই আমাদের এখানে একমাত্র ভরসা। এই সোলারের নীচে বসে আশ্রয় কেন্দ্রের ছেলেমেয়েরা কোন রকমে লেখাপড়া করে। চোর-ডাকাতদের উৎপাত হতে গবাদী পশুগুলোর রেহাইও মেলে এই আলোর কারণে। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরে এলাকার মেম্বর ও কিছু লোকজন সোলারটি তুলে নিয়ে নদীর পাড়ে অনেকটা জনমানবহীন আজিজ সরদারের পাড়ায় স্থাপন করে।
আশ্রয় কেন্দ্রের অবস্থানকারী আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার্থী রুমা আক্তার জানান, নদী ভাঙনের কারণে আমরা এখানে আশ্রয় নেয়া সবাই সর্বশান্ত হয়ে গেছি। রাতে আলো জ্বালিয়ে পড়ার জন্য আমার বাবার কেরোসিন তেল কেনার সামর্থ্য নেই। সোলারের আলোতেই কোনমতে পড়ছিলাম। কিন্তু আজ রাতে পড়তে পারবো না। সোলারটি নিয়ে যাওয়ায় আমাদের নানা ধরণের সমস্যায় পড়তে হবে।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলায় সোলার তত্বাবধানকারী শক্তি ফাউন্ডেশনের ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম জানান, আমি এলাকায় নেই। তবে শুনেছি এলাকার চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম ও মেম্বর আবুল কালাম আজাদ সোলারটি সরিয়ে পূর্বের জায়গায় নিয়ে গেছে।
দেবগ্রামের ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তবে শুনেছি সোলার তত্ত্বাবধানকারী এনজিও’র লোকজন এটি সরিয়ে নিয়েছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু সাইদ মন্ডল বলেন, সোলারটি সরানোর ব্যাপারে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। তবে জানতে পেরেছি এলাকার চেয়ারম্যানের নির্দেশে সেটি সরানো হয়। কিন্তু নদী ভাঙনের শিকার অতোগুলো অসহায় পরিবারকে অন্ধকারে ফেলে সোলারটি সরিয়ে নেয়া ঠিক হয়নি। এটাকে আরো ভালভাবে আশ্রয় কেন্দ্রের মাঠেই স্থাপন করা হবে।
এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবায়েত হায়াত শিপলু বলেন, সোলারটি সরিয়ে নেয়ার কথা শুনেছি। কাজটি ঠিক হয়নি। ওটাকে নিয়ে এসে আশ্রয় কেন্দ্রের মাঠেই স্থায়ীভাবে স্থাপন করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।