Dhaka ১০:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আপত্তির মুখে বন্ধ হলো লালন মেলা

ডেস্ক নিউজ
  • প্রকাশের সময় : ০৮:১৩:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
  • / ১০২৫ জন সংবাদটি পড়েছেন

নারায়ণগঞ্জে স্থানীয় মুসল্লি ও বিভিন্ন ইসলামি দলের আপত্তির মুখে দুই দিনব্যাপী ‘মহতী সাধুসঙ্গ ও লালন মেলা’ বন্ধ হয়ে গেছে। সদর উপজেলার মধ্য নরসিংহপুর এলাকায় ‘মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমি’ প্রাঙ্গণে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছিল।

শুক্রবার (২৩ নভেম্বর) ও শনিবার (২৪ নভেম্বর) মেলা ও সাধুসঙ্গ হওয়ার কথা ছিল। এ উপলক্ষে কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সাধু-গুরু ও লালন–ভক্তরা নারায়ণগঞ্জে এসেছিলেন। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় মেলা পরিচালনার অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। এদিকে মেলা বন্ধের ঘটনায় লালন–ভক্ত ও নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, ‘লালন মেলা আয়োজন নিয়ে স্থানীয় মসজিদের ইমাম, মুসল্লি ও বিভিন্ন ইসলামি দলের তীব্র আপত্তি আছে। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেদন চাইলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা আছে বলে পুলিশ প্রতিবেদন দেয়। এ জন্য মেলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। ’

স্থানীয় নরসিংহপুর বাইতুস সালাত জামে মসজিদের ইমাম আবদুল কাইয়ুম বলেন, এই মেলায় ইমানবিধ্বংসী কাজ হয়। সেখানে নাচ–গানসহ অনৈসলামিক কার্যক্রম চলে। ওই মেলা প্রতিহত করা সবার ইমানি দায়িত্ব।

শনিবার লালন একাডেমির সামনে গেলে ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দলকে টহল দিতে দেখা যায়।

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফুল ইসলাম জানান, সেখানে মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। লালন–ভক্তদের যাতে কেউ ক্ষতি না করতে পারে, সে জন্য তাদের নিরাপত্তায় সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।

মেলা বন্ধ ও নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ফকির শাহ্ জালাল বলেন, ‘আমরা তো এখানে মারামারি করার জন্য আসিনি। আমরা তো শান্তি চাই। ’

প্রসঙ্গত, প্রতিবছর মধ্য নরসিংহপুর এলাকায় ‘মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমি’ প্রাঙ্গণে সাধুসঙ্গ ও লালন মেলার আয়োজন করা হয়। এবারও মেলা আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল আশ্রম কর্তৃপক্ষ। সেই উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে প্যান্ডেল তৈরিসহ নানা প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কিন্তু ১৫ নভেম্বর মেলা বন্ধের দাবিতে তৌহিদি জনতার ব্যানারে মধ্য নরসিংহপুর এলাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচি করেন হেফাজতে ইসলামের নেতা–কর্মীরা। কর্মসূচি থেকে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আবদুল আউয়াল এই মেলাকে ইমানবিধ্বংসী আখ্যা দিয়ে প্রতিহত করার ঘোষণা করেন।

২০ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করেন মুক্তিধাম আশ্রমের লোকজন ও নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিরা। তবে স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও ইসলামি দলের আপত্তির মুখে মেলা চালানোর অনুমতি দেয়নি প্রশাসন।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

আপত্তির মুখে বন্ধ হলো লালন মেলা

প্রকাশের সময় : ০৮:১৩:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

নারায়ণগঞ্জে স্থানীয় মুসল্লি ও বিভিন্ন ইসলামি দলের আপত্তির মুখে দুই দিনব্যাপী ‘মহতী সাধুসঙ্গ ও লালন মেলা’ বন্ধ হয়ে গেছে। সদর উপজেলার মধ্য নরসিংহপুর এলাকায় ‘মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমি’ প্রাঙ্গণে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছিল।

শুক্রবার (২৩ নভেম্বর) ও শনিবার (২৪ নভেম্বর) মেলা ও সাধুসঙ্গ হওয়ার কথা ছিল। এ উপলক্ষে কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সাধু-গুরু ও লালন–ভক্তরা নারায়ণগঞ্জে এসেছিলেন। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় মেলা পরিচালনার অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। এদিকে মেলা বন্ধের ঘটনায় লালন–ভক্ত ও নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, ‘লালন মেলা আয়োজন নিয়ে স্থানীয় মসজিদের ইমাম, মুসল্লি ও বিভিন্ন ইসলামি দলের তীব্র আপত্তি আছে। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেদন চাইলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা আছে বলে পুলিশ প্রতিবেদন দেয়। এ জন্য মেলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। ’

স্থানীয় নরসিংহপুর বাইতুস সালাত জামে মসজিদের ইমাম আবদুল কাইয়ুম বলেন, এই মেলায় ইমানবিধ্বংসী কাজ হয়। সেখানে নাচ–গানসহ অনৈসলামিক কার্যক্রম চলে। ওই মেলা প্রতিহত করা সবার ইমানি দায়িত্ব।

শনিবার লালন একাডেমির সামনে গেলে ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দলকে টহল দিতে দেখা যায়।

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফুল ইসলাম জানান, সেখানে মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। লালন–ভক্তদের যাতে কেউ ক্ষতি না করতে পারে, সে জন্য তাদের নিরাপত্তায় সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।

মেলা বন্ধ ও নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ফকির শাহ্ জালাল বলেন, ‘আমরা তো এখানে মারামারি করার জন্য আসিনি। আমরা তো শান্তি চাই। ’

প্রসঙ্গত, প্রতিবছর মধ্য নরসিংহপুর এলাকায় ‘মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমি’ প্রাঙ্গণে সাধুসঙ্গ ও লালন মেলার আয়োজন করা হয়। এবারও মেলা আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল আশ্রম কর্তৃপক্ষ। সেই উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে প্যান্ডেল তৈরিসহ নানা প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কিন্তু ১৫ নভেম্বর মেলা বন্ধের দাবিতে তৌহিদি জনতার ব্যানারে মধ্য নরসিংহপুর এলাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচি করেন হেফাজতে ইসলামের নেতা–কর্মীরা। কর্মসূচি থেকে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আবদুল আউয়াল এই মেলাকে ইমানবিধ্বংসী আখ্যা দিয়ে প্রতিহত করার ঘোষণা করেন।

২০ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করেন মুক্তিধাম আশ্রমের লোকজন ও নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিরা। তবে স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও ইসলামি দলের আপত্তির মুখে মেলা চালানোর অনুমতি দেয়নি প্রশাসন।