মারধরে গুরুতর আহত কৃষকের অর্থাভাবে হচ্ছে না চিকিৎসা
পাংশায় আওয়ামী লীগ নেতার বিচার দাবিতে ঝাড়– মিছিল
- প্রকাশের সময় : ০৮:৫৮:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৩
- / ১১২০ জন সংবাদটি পড়েছেন
মারধরে গুরুতর আহত হয়ে বিনা চিকিৎসায় বিছানায় কাতরাচ্ছেন মাজেদ মন্ডল নামে এক কৃষক। সালিশে চিকিৎসার খরচ বাবদ সাত লাখ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেননি অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল মাস্টার। ভুক্তভোগী মাজেদ মন্ডল পাংশা উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নের মুছিদহ গ্রামের বাসিন্দা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল মাস্টার ও তার ছেলের মারধরে মাজেদ মন্ডলের এ অবস্থা হয়েছে। তাদের বিচার দাবি করে সোমবার দুপুরে ঝাড়– মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী। অভিযুক্ত রবিউল পাট্টা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি।
পাট্টা ইউনিয়নের মুছিদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে সড়কে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, এলাকাবাসী ও নির্যাতিত অসহায় কৃষক মাজেদের পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। এসময় বক্তৃতা করেন পাট্টা ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ড সদস্য ফিরোজ খান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রবিউল ইসলাম, নির্যাতিত মাজেদের চাচা আকাম উদ্দিন মন্ডল, স্থানীয় হানিফ আলী খান, হামিদা বেগম, রেহানা বেগম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, পাট্টা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রবিউল মাস্টার এলাকায় প্রভাবশালী। তিনি ও তার ছেলেরা এলাকার অসহায় মানুষের ওপর নির্যাতন করেন। কোনো সালিশ বিচার মানেন না। রবিউল আগে বিএনপি করলেও এখন আওয়ামী লীগ করেন। গত ১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় কৃষক মাজেদ মন্ডলকে মারধর করে পা ও মুখের চোয়াল ভেঙে দিয়েছেন। ভুক্তভোগী মাজেদের চিকিৎসার খরচ দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি তা দেননি। অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসার বাড়িতে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন কৃষক মাজেদ।
৭ নং ওয়ার্ড মেম্বার ফিরোজ খান জানান, মাজেদ মন্ডল লোকটি খুবই অসহায় ও হতদরিদ্র। তার ছেলে সন্তান নেই। সংসারে উপার্জনক্ষম কেউ নেই। তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিউল মাস্টার তাকে বেধরক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। অর্থাভাবে তার চিকিৎসা বন্ধ। পরে স্থানীয় সালিশে রবিউল মাস্টার চিকিৎসাবাবদ মাজেদকে সাত লাখ টাকা দেবেন এমন সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তিনি কোনো টাকা পয়সা দেননি।
পাট্টা ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রব বিশ^াস জানান, বিষয়টি খুব দুঃখজনক। মাজেদের এমন অবস্থা করেছে যে, ১০ লাখ টাকার নিচে কোনো চিকিৎসা হবেনা। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বসে সালিশ করেছেন। কিন্তু সালিশের সিদ্ধান্তানুযায়ী চিকিৎসাবাবদ রবিউল মাস্টারের টাকা দেওয়ার কথা। কিন্তু তিনি তা দেননি। এটা রবিউল চরম অন্যায় করেছেন। তিনি বলেন, রবিউলের কার্যকলাপ আগে থেকেই খারাপ। সে আগে বিএনপি করতো। এক আওয়ামী লীগ নেতার অনুরোধে তাকে কমিটিতে রাখা হয়েছে। বিষয়টি তারা এমপি সাহেবকে জানাবেন।
অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল মাস্টার প্রকারান্তরে বিষয়য়টি স্বীকার করে জানান, মহিলাদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে তার ছেলে ইদ্রিস দুটি বাড়ি মারে মাজেদকে। মাজেদ সম্পর্কে তাদের আত্মীয়। সালিশ বৈঠকে তাকে সাত লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। এর বিরুদ্ধে তিনি চেয়ারম্যানের কাছে আপীল করেছেন। বর্তমানে তার (রবিউল মাস্টার) স্ত্রী খুবই অসুস্থ। তাকে নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছেন। তাই সালিশের টাকা দিতে দেরি হচ্ছে। বিষয়টি তিনি এমপিকে বলবেন। এমপি যে সিদ্ধান্ত দেবেন তা তিনি মাথা পেতে নেবেন।
আগে বিএনপি করা প্রসঙ্গে বলেন, ছাত্রজীবনে হোস্টেলে সিট পেতে কিছুদিন বিএনপির রাজনীতি করেছিলেন।