Dhaka ০১:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আঁধার কেটে যাবে। ফুটবে হাসি। ঈদ মোবারক

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৬:৩৫:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ মে ২০২০
  • / ১৬৫৬ জন সংবাদটি পড়েছেন

 

নুরে আলম সিদ্দিকী হক

সিয়াম সাধনার মাস রমজান শেষেই ঈদ। এবারের ঈদ অন্য যেকোন বারের চাইতে ভিন্ন। বাজারে কেনাকাটা নেই। বাইরে কোলাহল নেই। নেই ছুটির তাড়াও। ঘরবন্দী মানুষ। কারণটা সহজেই অনুমেয়। বাংলাদেশ এক করোনায় বিপর্যস্ত, এর পর পাশ কাটিয়ে গেছে ঘূর্ণিঝড় আম্পান। এ ঝড়েও ক্ষয়ক্ষতি কম হয়নি। করোনা আর আম্পানের অত্যাচারে মানুষ যখন বিপর্যস্ত, তখনই এসেছে ঈদ।

বরাবরের মত আকাশে সাদা মেঘের ভেলার পাশে এক ফালি ঈদের চাঁদ উঠবে নিয়ম করেই। হয়তো তার আনন্দটা ঘরে ঘরে পৌছাবে না।

দেশ আজ করোনার যাতাকলে অবরুদ্ধ। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা পৃথিবীর আজ একই অবস্থা। ইসলামের দেড় হাজার বছরের বেশি ইতিহাসে এই প্রথম ঈদের উৎসব হবে আনন্দহীনভাবে। ঈদের জামাত আগের মত হবে না। যেগুলো হবে তাতে নামাজিরা পরস্পরের কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রেখে বসবেন। নামাজ শেষে কোলাকুলি হবে না। দূর থেকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তারা পরস্পরের কাছ থেকে বিদায় নেবেন। ঈদের চাঁদ দেখার আনন্দে এবার শিশুদের মিলিত আনন্দ কলরব শোনা যাবে না।

এমন বিপর্যয় বাংলাদেশে এসেছে বহুবার। তবুও বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ চলেছে টানা নয় মাস। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলেছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলেছে। নিশ্চয় তার দৃঢ় নেতৃত্বে করোনাকে মোকাবেলা করে জয়ী হবে বাংলাদেশ। হাসবে মানুষ। হাসবে দেশ।

বিশ্বের ইতিহাসেও এমন বিপর্যয় এসেছে বারবার। শুধু প্রকৃতি নয়, মানুষ মানুষকেও নিধন করেছে। দুই দুটি বিশ্বযুদ্ধে কোটি কোটি মানুষ মারা গেছে। ভূমিকম্প, ঝড়, বন্যা, মহামারি ফিরে এসেছে একের পর এক। কিন্তু পৃথিবী ধ্বংস হয়নি, মানবতা ধ্বংস হয়নি। বারবার মানুষই জয়ী হয়েছে।

এবারের কভিড-১৯ করোনা ভাইরাস এর মতো সারা বিশ্বজুড়ে গোটা মানব সভ্যতার জন্য এমন মহাবিপদ আর কখনও আসেনি। কিন্তু এই বিপর্যয়ও মানব সভ্যতা কাটিয়ে উঠবে। ইতিহাসই সে কথা বলে, সে কথার সাক্ষ্য দেয়।

আমরা আশা নিয়ে বাঁচি। আমরা স্বপ্ন দেখি। সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন। নিশ্চয় এই আঁধার কেটে যাবে। বাংলার  আকাশে আবার ঈদের চাঁদ উঠবে।  ঈদের চাঁদ দেখে শিশুরা হাসবে। পাখি গান গাইবে। ঈদগাহে আবার মিলিত প্রাণের ঢল নামবে। সেই পুরনো রীতিতে ধনী-গরিব নির্বিশেষে মানুষ আবার নামাজ শেষে কোলাকুলি করবে। একসঙ্গে বসে উৎসবের খাওয়া খাবে।

দুর্যোগের মেঘ কেটে চারদিকে আলোর বিচ্ছুরণ ছড়িয়ে পড়ুক। জয় হোক মানবতার। সব অশুভের যবনিকাপাত ঘটুক। ঐতিহ্যের কল্যাণধর্মী মানবিক চেতনা বর্তমান বিশ্বের মানুষের এক পরম সম্পদ। এই ক্রান্তিকালে মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্যবোধ গড়ে উঠুক। একে অপরের সুখে দুঃখে যেন পাশে থাকে। সে কামনাই করি। আমি নুরে আলম সিদ্দিকী হক করোনাকালে  দীর্ঘ প্রায় দেড় মাস লকডাউনে গৃহবন্দী ছিলাম। সে অবস্থাতেই চেষ্টা করেছি মানুষের পাশে দাঁড়াতে। প্রিয় রাজবাড়ীবাসী, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করত চাই; আমি আপনাদের পাশে ছিলাম। পাশে আছি এবং পাশে থাকব।

সবার প্রতি অনুরোধ, আসুন আমরা নিয়ম মেনে চলি। যতটা সম্ভব সীমাবদ্ধতার মধ্যেই ঈদ উৎসব পালন করি। করোনা নয়, মানুষই জয়ী হবে। ইনশাল্লাহ।

এই ক্রান্তিকালেও মানুষের মনে ঈদের আনন্দ বজায় থাকুক। সবার জীবন সুন্দর হোক। আনন্দময় হোক। সবাইকে ঈদ শুভেচ্ছা।

ঈদ মোবারক।

নুরে আলম সিদ্দিকী হক

সম্পাদক

দৈনিক জনতার আদালত ও

সাবেক কেন্দ্রীয়  সাংগঠনিক সম্পাদক

বাংলাদেশ কৃষকলীগ

 

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

আঁধার কেটে যাবে। ফুটবে হাসি। ঈদ মোবারক

প্রকাশের সময় : ০৬:৩৫:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ মে ২০২০

 

নুরে আলম সিদ্দিকী হক

সিয়াম সাধনার মাস রমজান শেষেই ঈদ। এবারের ঈদ অন্য যেকোন বারের চাইতে ভিন্ন। বাজারে কেনাকাটা নেই। বাইরে কোলাহল নেই। নেই ছুটির তাড়াও। ঘরবন্দী মানুষ। কারণটা সহজেই অনুমেয়। বাংলাদেশ এক করোনায় বিপর্যস্ত, এর পর পাশ কাটিয়ে গেছে ঘূর্ণিঝড় আম্পান। এ ঝড়েও ক্ষয়ক্ষতি কম হয়নি। করোনা আর আম্পানের অত্যাচারে মানুষ যখন বিপর্যস্ত, তখনই এসেছে ঈদ।

বরাবরের মত আকাশে সাদা মেঘের ভেলার পাশে এক ফালি ঈদের চাঁদ উঠবে নিয়ম করেই। হয়তো তার আনন্দটা ঘরে ঘরে পৌছাবে না।

দেশ আজ করোনার যাতাকলে অবরুদ্ধ। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা পৃথিবীর আজ একই অবস্থা। ইসলামের দেড় হাজার বছরের বেশি ইতিহাসে এই প্রথম ঈদের উৎসব হবে আনন্দহীনভাবে। ঈদের জামাত আগের মত হবে না। যেগুলো হবে তাতে নামাজিরা পরস্পরের কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রেখে বসবেন। নামাজ শেষে কোলাকুলি হবে না। দূর থেকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তারা পরস্পরের কাছ থেকে বিদায় নেবেন। ঈদের চাঁদ দেখার আনন্দে এবার শিশুদের মিলিত আনন্দ কলরব শোনা যাবে না।

এমন বিপর্যয় বাংলাদেশে এসেছে বহুবার। তবুও বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ চলেছে টানা নয় মাস। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলেছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলেছে। নিশ্চয় তার দৃঢ় নেতৃত্বে করোনাকে মোকাবেলা করে জয়ী হবে বাংলাদেশ। হাসবে মানুষ। হাসবে দেশ।

বিশ্বের ইতিহাসেও এমন বিপর্যয় এসেছে বারবার। শুধু প্রকৃতি নয়, মানুষ মানুষকেও নিধন করেছে। দুই দুটি বিশ্বযুদ্ধে কোটি কোটি মানুষ মারা গেছে। ভূমিকম্প, ঝড়, বন্যা, মহামারি ফিরে এসেছে একের পর এক। কিন্তু পৃথিবী ধ্বংস হয়নি, মানবতা ধ্বংস হয়নি। বারবার মানুষই জয়ী হয়েছে।

এবারের কভিড-১৯ করোনা ভাইরাস এর মতো সারা বিশ্বজুড়ে গোটা মানব সভ্যতার জন্য এমন মহাবিপদ আর কখনও আসেনি। কিন্তু এই বিপর্যয়ও মানব সভ্যতা কাটিয়ে উঠবে। ইতিহাসই সে কথা বলে, সে কথার সাক্ষ্য দেয়।

আমরা আশা নিয়ে বাঁচি। আমরা স্বপ্ন দেখি। সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন। নিশ্চয় এই আঁধার কেটে যাবে। বাংলার  আকাশে আবার ঈদের চাঁদ উঠবে।  ঈদের চাঁদ দেখে শিশুরা হাসবে। পাখি গান গাইবে। ঈদগাহে আবার মিলিত প্রাণের ঢল নামবে। সেই পুরনো রীতিতে ধনী-গরিব নির্বিশেষে মানুষ আবার নামাজ শেষে কোলাকুলি করবে। একসঙ্গে বসে উৎসবের খাওয়া খাবে।

দুর্যোগের মেঘ কেটে চারদিকে আলোর বিচ্ছুরণ ছড়িয়ে পড়ুক। জয় হোক মানবতার। সব অশুভের যবনিকাপাত ঘটুক। ঐতিহ্যের কল্যাণধর্মী মানবিক চেতনা বর্তমান বিশ্বের মানুষের এক পরম সম্পদ। এই ক্রান্তিকালে মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্যবোধ গড়ে উঠুক। একে অপরের সুখে দুঃখে যেন পাশে থাকে। সে কামনাই করি। আমি নুরে আলম সিদ্দিকী হক করোনাকালে  দীর্ঘ প্রায় দেড় মাস লকডাউনে গৃহবন্দী ছিলাম। সে অবস্থাতেই চেষ্টা করেছি মানুষের পাশে দাঁড়াতে। প্রিয় রাজবাড়ীবাসী, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করত চাই; আমি আপনাদের পাশে ছিলাম। পাশে আছি এবং পাশে থাকব।

সবার প্রতি অনুরোধ, আসুন আমরা নিয়ম মেনে চলি। যতটা সম্ভব সীমাবদ্ধতার মধ্যেই ঈদ উৎসব পালন করি। করোনা নয়, মানুষই জয়ী হবে। ইনশাল্লাহ।

এই ক্রান্তিকালেও মানুষের মনে ঈদের আনন্দ বজায় থাকুক। সবার জীবন সুন্দর হোক। আনন্দময় হোক। সবাইকে ঈদ শুভেচ্ছা।

ঈদ মোবারক।

নুরে আলম সিদ্দিকী হক

সম্পাদক

দৈনিক জনতার আদালত ও

সাবেক কেন্দ্রীয়  সাংগঠনিক সম্পাদক

বাংলাদেশ কৃষকলীগ