Dhaka ০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীতে ১০ কেজি চাল বিক্রয়ে নানা ছলচাতুরির অভিযোগ॥ ২ জনের ডিলারশীপ বাতিল

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৭:০২:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ এপ্রিল ২০২০
  • / ২০৮৪ জন সংবাদটি পড়েছেন

জনতার আদালত অনলাইন॥ নামে বেনামে তালিকা তৈরি, কার্ড থাকা সত্ত্বেও চাল না দেয়াসহ জনবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ১০ টাকা কেজি দরে চাল ক্রয় বিক্রয়ে নানা ছলচাতুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে প্রকৃত অর্থে যারা দুস্থ তারা বঞ্চিত হচ্ছে ১০ টাকা কেজি দরে চাল ক্রয় থেকে। সম্প্রতি রাজবাড়ী সদরে একজন এবং কালুখালী উপজেলায় একজনের ডিলারশীপ বাতিল হয়েছে এসব অভিযোগে।
কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নের লাড়িবাড়ি বাজারের ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির ডিলার ছিলেন আনছার আলী মাস্টার। তার তালিকায় ৫৪৮ জনের মধ্যে ২৪৮ জনের নামের মধ্যে কয়েকজন রয়েছেন মৃত, কয়েকজন থাকেন বিদেশে। আর বাকীদের মধ্যে অনেকেই আছেন তারা জানেনই না তালিকায় নাম আছে। এভাবে বিগত কয়েক বছর ধরে তিনি ১০ টাকা কেজি চাল তুলে আত্মসাৎ করছিলেন। সম্প্রতি এ বিষয়ে কালুখালী উপজেলা নির্ব্হাী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলে তার ডিলারশীপ বাতিল করে দেয়া হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লাড়িবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম মোল্লা, জলিল মোল্লা, শরিফুল ইসলাম, রনজিৎ কুমার, কৃষ্ণ কুমার, নব কুমার, মোজাহার ব্যাপারি, সাবু ব্যাপারি, মহাসিন মৃধা লাল্টু, জব্বার মন্ডল, সাত্তার খান, আলাউদ্দিন মোল্লা, সিদ্দিক মোল্লা, তিজারত মোল্লা গোলাপ খান, ফারক মন্ডল, আজিজ জোয়ার্দার, হাতেম বিশ্বাস, শহীদ বিশ্বাস, শাহাদাত কাজী, বকুল মন্ডল, চরপাতুরিয়া গ্রামের তৈয়ব বিশ্বাস, হাসেম আলী, জয়নাল মন্ডল, শুকুর মন্ডল, মালেক শেখ এমন অনেকের নাম তালিকায় থাকলেও তারা কেউ কিছুই জানেন না।
এবিষয়ে সাওরাইল ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম আলী বলেন, ডিলার আনছার আলীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে তার কিছু সত্যতা রয়েছে। আমার সাথে সমন্বয় না করে তার ইচ্ছে মতো তালিকা করেছে। অভিযোগ দেয়ার পর তার ডিলারশীপ বাতিল হয়। পুনরায় তালিকা করার কাজ চলছে।
কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ নুরুল আলম জানান, ডিলার আনছার আলীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তার ডিলারশীপ বাতিল করা হয়েছে। অভিযোগের তদন্ত চলছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ডিলার আনছার আলী শেখের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অপরদিকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানগঞ্জ ইউনিয়নের ডিলার শেখ আবু নাসিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ কার্ড থাকা সত্বেও কার্ডধারীদের তিনি চাল দেননা। তারও ডিলারশীপ বাতিল হয়েছে।
খানগঞ্জ ইউনয়টি পদ্মানদী ও চরাঞ্চল বেষ্টিত। এ অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষই হতদরিদ্র। এ ইউনিয়নের হাটবাড়িয়া শিবতলা গ্রামের দিনমজুর নজরুল সরদার জানান, বছর চারেক আগে তিনশ টাকার বিনিময়ে ১০ টাকা কেজি দরে চালের কার্ড করেছিলেন। কিন্তু কার্ড করেও তিনি আজ পর্যন্ত কোন চাল কিনতে পারনেনি। তার মত অনেকেই জানালেন, তাদের কার্ড রয়েছে কিন্তু চাল আনতে গেলে ডিলার দেয়না। কার্ডধারীরা এনিয়ে একজোট হয়ে বিক্ষোভও করেছে। তাদের অভিযোগ, শতাধিক কার্ডধারীর চাল কারা কীভাবে বছরের পর বছর নামে বেনামে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তারা কিছুই বুঝতে পারছেননা।
ডিলার শেখ আবু নাসির কোনো অনিয়ম করেননি দাবি করে জানান, তার কাছে ৪৬০ জনের ১০ টাকা কেজি দরের চালের কার্ড রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইদুজ্জামান খান জানান, খানগঞ্জ ইউনিয়নে ১০ টাকা কেজি দরের চাল নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর ডিলার শীপ বাতিল করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় আর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এবিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

রাজবাড়ীতে ১০ কেজি চাল বিক্রয়ে নানা ছলচাতুরির অভিযোগ॥ ২ জনের ডিলারশীপ বাতিল

প্রকাশের সময় : ০৭:০২:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ এপ্রিল ২০২০

জনতার আদালত অনলাইন॥ নামে বেনামে তালিকা তৈরি, কার্ড থাকা সত্ত্বেও চাল না দেয়াসহ জনবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ১০ টাকা কেজি দরে চাল ক্রয় বিক্রয়ে নানা ছলচাতুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে প্রকৃত অর্থে যারা দুস্থ তারা বঞ্চিত হচ্ছে ১০ টাকা কেজি দরে চাল ক্রয় থেকে। সম্প্রতি রাজবাড়ী সদরে একজন এবং কালুখালী উপজেলায় একজনের ডিলারশীপ বাতিল হয়েছে এসব অভিযোগে।
কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নের লাড়িবাড়ি বাজারের ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির ডিলার ছিলেন আনছার আলী মাস্টার। তার তালিকায় ৫৪৮ জনের মধ্যে ২৪৮ জনের নামের মধ্যে কয়েকজন রয়েছেন মৃত, কয়েকজন থাকেন বিদেশে। আর বাকীদের মধ্যে অনেকেই আছেন তারা জানেনই না তালিকায় নাম আছে। এভাবে বিগত কয়েক বছর ধরে তিনি ১০ টাকা কেজি চাল তুলে আত্মসাৎ করছিলেন। সম্প্রতি এ বিষয়ে কালুখালী উপজেলা নির্ব্হাী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলে তার ডিলারশীপ বাতিল করে দেয়া হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লাড়িবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম মোল্লা, জলিল মোল্লা, শরিফুল ইসলাম, রনজিৎ কুমার, কৃষ্ণ কুমার, নব কুমার, মোজাহার ব্যাপারি, সাবু ব্যাপারি, মহাসিন মৃধা লাল্টু, জব্বার মন্ডল, সাত্তার খান, আলাউদ্দিন মোল্লা, সিদ্দিক মোল্লা, তিজারত মোল্লা গোলাপ খান, ফারক মন্ডল, আজিজ জোয়ার্দার, হাতেম বিশ্বাস, শহীদ বিশ্বাস, শাহাদাত কাজী, বকুল মন্ডল, চরপাতুরিয়া গ্রামের তৈয়ব বিশ্বাস, হাসেম আলী, জয়নাল মন্ডল, শুকুর মন্ডল, মালেক শেখ এমন অনেকের নাম তালিকায় থাকলেও তারা কেউ কিছুই জানেন না।
এবিষয়ে সাওরাইল ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম আলী বলেন, ডিলার আনছার আলীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে তার কিছু সত্যতা রয়েছে। আমার সাথে সমন্বয় না করে তার ইচ্ছে মতো তালিকা করেছে। অভিযোগ দেয়ার পর তার ডিলারশীপ বাতিল হয়। পুনরায় তালিকা করার কাজ চলছে।
কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ নুরুল আলম জানান, ডিলার আনছার আলীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তার ডিলারশীপ বাতিল করা হয়েছে। অভিযোগের তদন্ত চলছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ডিলার আনছার আলী শেখের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অপরদিকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানগঞ্জ ইউনিয়নের ডিলার শেখ আবু নাসিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ কার্ড থাকা সত্বেও কার্ডধারীদের তিনি চাল দেননা। তারও ডিলারশীপ বাতিল হয়েছে।
খানগঞ্জ ইউনয়টি পদ্মানদী ও চরাঞ্চল বেষ্টিত। এ অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষই হতদরিদ্র। এ ইউনিয়নের হাটবাড়িয়া শিবতলা গ্রামের দিনমজুর নজরুল সরদার জানান, বছর চারেক আগে তিনশ টাকার বিনিময়ে ১০ টাকা কেজি দরে চালের কার্ড করেছিলেন। কিন্তু কার্ড করেও তিনি আজ পর্যন্ত কোন চাল কিনতে পারনেনি। তার মত অনেকেই জানালেন, তাদের কার্ড রয়েছে কিন্তু চাল আনতে গেলে ডিলার দেয়না। কার্ডধারীরা এনিয়ে একজোট হয়ে বিক্ষোভও করেছে। তাদের অভিযোগ, শতাধিক কার্ডধারীর চাল কারা কীভাবে বছরের পর বছর নামে বেনামে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তারা কিছুই বুঝতে পারছেননা।
ডিলার শেখ আবু নাসির কোনো অনিয়ম করেননি দাবি করে জানান, তার কাছে ৪৬০ জনের ১০ টাকা কেজি দরের চালের কার্ড রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইদুজ্জামান খান জানান, খানগঞ্জ ইউনিয়নে ১০ টাকা কেজি দরের চাল নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর ডিলার শীপ বাতিল করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় আর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এবিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।