রাজবাড়ীতে উদীচীর প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ

- প্রকাশের সময় : ০৫:৫৩:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫
- / 189
রাজবাড়ীতে ‘বিচারহীনতার ২৬ বছর’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে যশোরে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলনে বোমা হামলা ও হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী রাজবাড়ী জেলা সংসদের উদ্যোগে শহরের আজাদী ময়দান এলাকায় এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সহসভাপতি আজিজুল হাসান। পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এজাজ আহম্মেদ। এতে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) রাজবাড়ী জেলা কমিটির সভাপতি আবদুস সামাদ মিয়া, নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফকীর শাহাদত হোসেন, ফরিদপুর চিনিকলের সাবেক ব্যবস্থাপক কমল কান্তি সরকার, জেলা কৃষক সমিতির সভাপতি আবদুস সাত্তার মন্ডল, জেলা উদীচীর সাংগঠনিক সম্পাদক ধীরেন্দ্রনাথ দাস, দপ্তর সম্পাদক সুমা কর্মকার, সংগীত বিষয়ক সম্পাদক মো. আবদুল জব্বার। সমাবেশের শুরুতে বোমা হামলায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
আলোচনা শেষে সংগঠন সংগীত ‘আরশীর সামনে একা একা দাঁড়িয়ে… গান দিয়ে সাংস্কৃতিক পর্ব শুরু করা হয়। এরপর ‘ভয় কি মরণে, কারার ওই লৌহ কপাট, তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর..’ প্রভৃতি গণসংগীত পরিবেশন করা হয়। জাতীয় সংগীত পরিবেশন করার মধ্যে সাংস্কৃতিক পর্বের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
বক্তারা বলেন, ১৯৯৯ সালের ৬ মার্চ যশোর টাউন হল মাঠে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলনের শেষ দিন বাউল গানের অনুষ্ঠানে পরপর দুই দফায় মঞ্চের নিচে শক্তিশালী বোমা হামলা করা হয়। বোমার আঘাতে শিল্পীসহ ১০ জন নিহত ও আড়াই শতাধিক মানুষ আহত হন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন নূর ইসলাম, নাজমুল হুদা, সন্ধ্যা রানী ঘোষ, ইলিয়াস মুন্সী, শাহ আলম বাবুল, বাবুল সূত্রধর, শাহ আলম, বুলু, রতন রায় ও রামকৃষ্ণ। বোমা হামলার পর দীর্ঘ ২৬ বছর অতিক্রান্ত হলেও এখনো বিচারকাজ সম্পন্ন করা হয়নি। বিচার করতে না পারার রাষ্ট্রের একটি দুর্বলতা। সেই দুর্বলতার সুযোগেই জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো তাদের বিস্তার ঘটিয়েছে। ২৬ বছর ধরে যে বিচারহীনতার আবর্তে আমরা ঘুরপাক খাচ্ছি, তা পেছনে ফেলে আবার ঘটনার সঠিক তদন্ত করে তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা ও বিচার করার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করা হয়।
প্রসঙ্গত, যশোরে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলনে বোমা হামলার ঘটনায় মামলা হয়। তদন্ত শেষে ওই বছরের ১৪ ডিসেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে সিআইডি আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। ২০০৬ সালের ৩০ মে মামলার রায়ে সব আসামিকে বেকসুর খালাস দেন যশোরের বিচারিক আদালত।