Dhaka ০৫:১২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শহীদ ড. জোহা দিবসকে ‘জাতীয় শিক্ষক দিবস’ ঘোষণার দাবি

রাবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশের সময় : ১০:৩৫:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 78

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট ১৮ ফেব্রুয়ারি শহীদ ড. জোহা দিবসকে ‘জাতীয় শিক্ষক দিবস’ ঘোষণা করার দাবিতে গণবিবৃতি আহ্বান ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, রাজনৈতিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছে এ দাবির সমর্থনে গণবিবৃতি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এ লক্ষ্যে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জোহা চত্বরে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালিত হবে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে সাংস্কৃতিক জোট।

গণ-অভ্যুত্থানের বীর শহীদ ড. জোহা, ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন রিডার (প্রক্টর) ও রসায়ন বিভাগের শিক্ষক ড. শামসুজ্জোহা পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে শহীদ হন। সেই সময় দেশজুড়ে আইয়ুব শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। ১৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক সভায় শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে ড. জোহা ঘোষণা দেন—”আজ আমি ছাত্রদের রক্তে রঞ্জিত। এর পর কোনো গুলি হলে তা ছাত্রকে না লেগে যেন আমার গায়ে লাগে।”

এরপর ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের রক্ষায় নিজের বুক পেতে দিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে শহীদ হন তিনি। এটি ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম কোনো শিক্ষক হত্যার ঘটনা, যা পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতা আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করে।

গণ-অভ্যুত্থান থেকে স্বাধীনতার পথে,ড. জোহা হত্যার পর দেশব্যাপী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। তার আগে থেকেই ১৯৬৯ সালের ছাত্র সংগ্রামে উত্তাল ছিল দেশ।২০ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে শহীদ হন ছাত্র নেতা আমানুল্লাহ আসাদুজ্জামান।২৪ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে নিহত হন নবকুমার ইন্সটিটিউটের ছাত্র মতিউর রহমান।১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে হত্যা করা হয় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অভিযুক্ত সার্জেন্ট জহুরুল হককে।১৮ ফেব্রুয়ারি শহীদ হলেন ড. শামসুজ্জোহা।

এই সব ঘটনাপ্রবাহ গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয় এবং এর মাধ্যমেই স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকারের পতন ঘটে, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথে অন্যতম মাইলফলক হয়ে ওঠে।

‘জাতীয় শিক্ষক দিবস’ ঘোষণার দাবি, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও শহীদ ড. জোহার আত্মত্যাগের যথাযথ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মেলেনি। তাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট ১৮ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শিক্ষক দিবস’ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে।

সংগঠনটির সভাপতি তোফায়েল আহমদ তোফা ও সাধারণ সম্পাদক রায়হান ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

শহীদ ড. জোহা দিবসকে ‘জাতীয় শিক্ষক দিবস’ ঘোষণার দাবি

প্রকাশের সময় : ১০:৩৫:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট ১৮ ফেব্রুয়ারি শহীদ ড. জোহা দিবসকে ‘জাতীয় শিক্ষক দিবস’ ঘোষণা করার দাবিতে গণবিবৃতি আহ্বান ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, রাজনৈতিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছে এ দাবির সমর্থনে গণবিবৃতি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এ লক্ষ্যে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জোহা চত্বরে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালিত হবে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে সাংস্কৃতিক জোট।

গণ-অভ্যুত্থানের বীর শহীদ ড. জোহা, ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন রিডার (প্রক্টর) ও রসায়ন বিভাগের শিক্ষক ড. শামসুজ্জোহা পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে শহীদ হন। সেই সময় দেশজুড়ে আইয়ুব শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। ১৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক সভায় শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে ড. জোহা ঘোষণা দেন—”আজ আমি ছাত্রদের রক্তে রঞ্জিত। এর পর কোনো গুলি হলে তা ছাত্রকে না লেগে যেন আমার গায়ে লাগে।”

এরপর ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের রক্ষায় নিজের বুক পেতে দিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে শহীদ হন তিনি। এটি ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম কোনো শিক্ষক হত্যার ঘটনা, যা পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতা আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করে।

গণ-অভ্যুত্থান থেকে স্বাধীনতার পথে,ড. জোহা হত্যার পর দেশব্যাপী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। তার আগে থেকেই ১৯৬৯ সালের ছাত্র সংগ্রামে উত্তাল ছিল দেশ।২০ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে শহীদ হন ছাত্র নেতা আমানুল্লাহ আসাদুজ্জামান।২৪ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে নিহত হন নবকুমার ইন্সটিটিউটের ছাত্র মতিউর রহমান।১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে হত্যা করা হয় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অভিযুক্ত সার্জেন্ট জহুরুল হককে।১৮ ফেব্রুয়ারি শহীদ হলেন ড. শামসুজ্জোহা।

এই সব ঘটনাপ্রবাহ গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয় এবং এর মাধ্যমেই স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকারের পতন ঘটে, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথে অন্যতম মাইলফলক হয়ে ওঠে।

‘জাতীয় শিক্ষক দিবস’ ঘোষণার দাবি, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও শহীদ ড. জোহার আত্মত্যাগের যথাযথ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মেলেনি। তাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট ১৮ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শিক্ষক দিবস’ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে।

সংগঠনটির সভাপতি তোফায়েল আহমদ তোফা ও সাধারণ সম্পাদক রায়হান ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।