Dhaka ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিচার দাবিতে মানববন্ধন

এসএসসি পরীক্ষার্থীর রহস্যমৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশের সময় : ০৯:০৭:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ১০৯৯ জন সংবাদটি পড়েছেন

এসএসসি পরীক্ষার্থী নাইম খানকে হত্যার প্রতিবাদে ও বিচার দাবিতে শুক্রবার সকালে রাজবাড়ী শহরের মিলেনিয়াস মার্কেটের সামনে প্রধান সড়কে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ধুঞ্চি-গোদারবাজার এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। নাইম রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের ধুঞ্চি গোদারবাজার এলাকার মান্নান খানের ছেলে। চন্দনী বিএম কলেজের ছাত্র নাইম চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। নাইমের পরিবারের অভিযোগ, মা নাছরিন বেগম ও পরকীয়া প্রেমিক মো. রফিক তাকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেছে। এ ঘটনায় রাজবাড়ীর ১ নং আমলী আদালতে মামলাও করেছেন মান্নান খান। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত নাছরিন বেগম।

নাইমের বাবা মান্নান খান জানান, ২০০৬ সালে তিনি দুবাই যান। সেখান থেকে তার স্ত্রী নাছরিনের নামে টাকা পাঠাতেন। ২০১৩ সালে তিনি দেশে ফিরে টাকার হিসাব চাইলে সে নানান টালবাহানা করে। পরে জানতে পারেন তার স্ত্রী নাছরিন পরকীয়ায় আসক্ত। সব টাকা সে পরকীয়া প্রেমিক রফিককে দিয়েছে। এরপর তার স্ত্রী নাছরিন তাকে কিছু না বলেই বাবার বাড়ি চলে যায়। ২০১৪ সালে তার স্ত্রী নাছরিন বিদেশ চলে যায়। ১০ বছর পর ২০২৪ সালে দেশে ফিরে এসে ছেলে নাইমকে তার কাছে নিয়ে যায়। তারা সদর উপজেলার চন্দনী গ্রামে থাকত। সেখানে নাছরিনের পরকীয়া প্রেমিক রফিকের অবাধ যাতায়াত ছিল। কিন্তু নাইম বিষয়টি ভালো চোখে দেখত না। মাঝে মধ্যে নাইম প্রতিবাদ করত। একারণেই গত ১১ ফেব্রæয়ারি তারিখে রফিক ও নাছরিন তার ছেলে নাইমকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালিয়েছে। নাইমের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে জানান তিনি।

মানববন্ধনে উপস্থিত নাইমের সৎ মা রোজী আক্তার, চাচা রফিকুল ইসলাম, মামাতো বোন জুলেখা বেগম হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে নাছরিন ও রফিকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।

এবিষয়ে নাছরিন বেগম বলেন, মান্নান খানকে তিনি আরও ১০ বছর আগে তালাক দিয়েছেন। মান্নান খান অনেক টাকা ঋণী ছিল। তিনি (নাছরিন) জর্ডান গিয়ে সেসব টাকা শোধ করেছেন। দেশে ফিরে দেখেন মান্নান আর একটি বিয়ে করেছে। যেকারণে তিনি তার ছেলে মেয়ে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান। সেখানেই বসবাস করতেন। সেখানে থেকেই ছেলে মেয়েকে মানুষ করেছেন। রফিক নামে যাকে পরকীয়া প্রেমিক বলা হচ্ছে তিনি তার বৈধ স্বামী। এক বছর আগে পরিবারের সম্মতিতে তাকে বিয়ে করেছেন। তার ছেলে তার আপন বোনের মেয়েকে পছন্দ করতো। তাকে বিয়ে করতে চাইত। বিয়েতে মত না দেওয়ায় সে গলায় ফাঁস নিয়ে ্আত্মহত্যা করেছে। নাছরিন বেগম বলেন, নাইমকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছি। কোনো মা তার ছেলেকে মেরে ফেলতে পারেনা।

রাজবাড়ী সদর থানার ওসি ইফতেখারুল আলম প্রধান জানান, নিহত নাইমের বাবা-মা আলাদা থাকেন। নাইম থাকতো মায়ের কাছে। নাইমের মৃত্যুর পর তার মা নাছরিন বিনা ময়নাতদন্তে লাশ নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা তা দেননি। রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের পর লাশ হস্তান্তর করা হয়। এব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে হত্যার আলামত পাওয়া গেলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

বিচার দাবিতে মানববন্ধন

এসএসসি পরীক্ষার্থীর রহস্যমৃত্যু

প্রকাশের সময় : ০৯:০৭:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

এসএসসি পরীক্ষার্থী নাইম খানকে হত্যার প্রতিবাদে ও বিচার দাবিতে শুক্রবার সকালে রাজবাড়ী শহরের মিলেনিয়াস মার্কেটের সামনে প্রধান সড়কে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ধুঞ্চি-গোদারবাজার এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। নাইম রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের ধুঞ্চি গোদারবাজার এলাকার মান্নান খানের ছেলে। চন্দনী বিএম কলেজের ছাত্র নাইম চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। নাইমের পরিবারের অভিযোগ, মা নাছরিন বেগম ও পরকীয়া প্রেমিক মো. রফিক তাকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেছে। এ ঘটনায় রাজবাড়ীর ১ নং আমলী আদালতে মামলাও করেছেন মান্নান খান। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত নাছরিন বেগম।

নাইমের বাবা মান্নান খান জানান, ২০০৬ সালে তিনি দুবাই যান। সেখান থেকে তার স্ত্রী নাছরিনের নামে টাকা পাঠাতেন। ২০১৩ সালে তিনি দেশে ফিরে টাকার হিসাব চাইলে সে নানান টালবাহানা করে। পরে জানতে পারেন তার স্ত্রী নাছরিন পরকীয়ায় আসক্ত। সব টাকা সে পরকীয়া প্রেমিক রফিককে দিয়েছে। এরপর তার স্ত্রী নাছরিন তাকে কিছু না বলেই বাবার বাড়ি চলে যায়। ২০১৪ সালে তার স্ত্রী নাছরিন বিদেশ চলে যায়। ১০ বছর পর ২০২৪ সালে দেশে ফিরে এসে ছেলে নাইমকে তার কাছে নিয়ে যায়। তারা সদর উপজেলার চন্দনী গ্রামে থাকত। সেখানে নাছরিনের পরকীয়া প্রেমিক রফিকের অবাধ যাতায়াত ছিল। কিন্তু নাইম বিষয়টি ভালো চোখে দেখত না। মাঝে মধ্যে নাইম প্রতিবাদ করত। একারণেই গত ১১ ফেব্রæয়ারি তারিখে রফিক ও নাছরিন তার ছেলে নাইমকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালিয়েছে। নাইমের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে জানান তিনি।

মানববন্ধনে উপস্থিত নাইমের সৎ মা রোজী আক্তার, চাচা রফিকুল ইসলাম, মামাতো বোন জুলেখা বেগম হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে নাছরিন ও রফিকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।

এবিষয়ে নাছরিন বেগম বলেন, মান্নান খানকে তিনি আরও ১০ বছর আগে তালাক দিয়েছেন। মান্নান খান অনেক টাকা ঋণী ছিল। তিনি (নাছরিন) জর্ডান গিয়ে সেসব টাকা শোধ করেছেন। দেশে ফিরে দেখেন মান্নান আর একটি বিয়ে করেছে। যেকারণে তিনি তার ছেলে মেয়ে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান। সেখানেই বসবাস করতেন। সেখানে থেকেই ছেলে মেয়েকে মানুষ করেছেন। রফিক নামে যাকে পরকীয়া প্রেমিক বলা হচ্ছে তিনি তার বৈধ স্বামী। এক বছর আগে পরিবারের সম্মতিতে তাকে বিয়ে করেছেন। তার ছেলে তার আপন বোনের মেয়েকে পছন্দ করতো। তাকে বিয়ে করতে চাইত। বিয়েতে মত না দেওয়ায় সে গলায় ফাঁস নিয়ে ্আত্মহত্যা করেছে। নাছরিন বেগম বলেন, নাইমকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছি। কোনো মা তার ছেলেকে মেরে ফেলতে পারেনা।

রাজবাড়ী সদর থানার ওসি ইফতেখারুল আলম প্রধান জানান, নিহত নাইমের বাবা-মা আলাদা থাকেন। নাইম থাকতো মায়ের কাছে। নাইমের মৃত্যুর পর তার মা নাছরিন বিনা ময়নাতদন্তে লাশ নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা তা দেননি। রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের পর লাশ হস্তান্তর করা হয়। এব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে হত্যার আলামত পাওয়া গেলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।