Dhaka ১০:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোটার তালিকায় তারা মৃত

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৭:০২:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / ১১৮৯ জন সংবাদটি পড়েছেন

জনতার আদালত অনলাইন ॥ জীবিত থাকলেও ভোটার তালিকায় তারা মৃত। তারা হলেন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের বড়হিজলি গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন (৪২) ও নারুয়া ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের মৃত গেন্দু মন্ডলের স্ত্রী মোছাম্মৎ গোলজান বিবি (৯২)। আনোয়ার হোসেন করোনার টিকা নিবন্ধন করতে গিয়ে এবং গোলজান বিবি বয়ষ্ক ভাতার নিবন্ধন করতে গেলে জানতে পারেন ভোটার তালিকায় তারা মৃত। ‘জীবিত’  হওয়ার জন্য আনোয়ার হোসেন  নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন। ইতিপূর্বে আরও ১৩ জনের এধরণের সমস্যা হয়েছিল বলে জানা গেছে।

আনোয়ার হোসেন জানান, ২০০৮ সালে তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে পান। যখন দরকার হয়েছে সেটি ব্যবহার করেছেন। তিনি স্থানীয় সদাশিপুর ঘোরামাড়া দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় ভোট দেওয়ার সুযোগ কখনই হয়নি। কয়েকদিন আগে করোনার টিকা নেওয়ার জন্য একটি কম্পিউটারের দোকানে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে  যান। কিন্তু সফল হতে পারেননি। যতবারই চেষ্টা করেছেন ততবারই ফলাফল ‘দুঃখিত’ এসেছে। অন্য জায়গায় গিয়ে চেষ্টা করার পরও সফল হতে পারেননি। উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। পরে নির্বাচন অফিস থেকে তাকে জাতীয় পরিচয়পত্রের কার্ডের ফটোকপি দিতে বলা হয়। তিনি জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি দিয়ে চলে আসেন। পরদিন নির্বাচন অফিস থেকে তাকে ফোন করে ডেকে নিয়ে জানানো হয়; ভোটার তালিকায় আপনি মৃত। তিনি নির্বাচন কর্মকর্তাদের বলেন, আমার টিকা নেওয়া দরকার। এখন আমি কী করবো। নির্বাচন অফিস থেকে আমাকে ফরম পূরণ করে ইউপি চেয়ারম্যানের সনদ দিতে বলা হয়। সেই মোতাবেক বুধবার তিনি সেসব জমা দিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, ২০১২ সালে তার বড় ভাই আবু তালেব মারা গেছেন। কিন্তু এখনো ভোটার তালিকায় তিনি ‘জীবিত’ রয়েছেন।

অপরদিকে নারুয়া  ইউনিয়ন পরিষদে বয়ষ্ক ভাতার অনলাইন নিবন্ধন করতে গিয়ে মোছাম্মৎ গোলজান বিবি জানতে পারেন ভোটার তালিকায় তিনি মৃত। তার জন্ম ১৯২৯ সালের ৫ এপ্রিল। গোলজান বিবির ছেলে ছেলে মধু মন্ডল জানান, তার মায়ের ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে বয়ষ্ক ভাতার জন্য নিবন্ধন করতে গিয়ে ব্যর্থ হলে বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানান। চেয়ারম্যান নির্বাচন অফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ভোটার তালিকায় তার মা মৃত।

নারুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সালাম মাস্টার বলেন,  মায়ের চেয়ে ছেলে ২৫ বছরের বড়, বাবার চেয়ে ছেলে চার বছরের ছোটসহ অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে। এবার গোলজান বিবি বেঁচে থাকলেও ভোটার তালিকায় তিনি মৃত।

এব্যাপারে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নিজামউদ্দিন বলেন, এধরণের ঘটনা এর আগেও বেশ কিছু পেয়েছি। সেগুলোর সমাধান করা হয়েছে। যাদের ক্ষেত্রে এমন ঘটছে তারা চেয়ারম্যানের কাছ থেকে প্রত্যয়ন নিয়ে আসবে যে, প্রকৃতপক্ষে তারা জীবিত। এর একটা আবেদন ফরম যেটা আমরা ফরম্যাট করেই রেখেছি সেটি পূরণ  করে পাঠিয়ে দিলেই স্ট্যাটাস ‘জীবিত’ আসবে। এর আগে  এধরনের ১৩টি  ত্রুটি সমাধান করা হয়েছে। আরও কয়েকটি ঝুলন্ত রয়েছে। বিষয়টি  আমাদের কাছে এলেই সমাধান হয়ে যায়।

এধরণের ঘটনা কেন ঘটছে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, কেন ঘটছে সেটা খোঁজার চেষ্টা করছি। তারা দুবার ভোটার হয়েছে নাকি তথ্য সংগ্রহকারীরা ভুল করেছে সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

ভোটার তালিকায় তারা মৃত

প্রকাশের সময় : ০৭:০২:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১

জনতার আদালত অনলাইন ॥ জীবিত থাকলেও ভোটার তালিকায় তারা মৃত। তারা হলেন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের বড়হিজলি গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন (৪২) ও নারুয়া ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের মৃত গেন্দু মন্ডলের স্ত্রী মোছাম্মৎ গোলজান বিবি (৯২)। আনোয়ার হোসেন করোনার টিকা নিবন্ধন করতে গিয়ে এবং গোলজান বিবি বয়ষ্ক ভাতার নিবন্ধন করতে গেলে জানতে পারেন ভোটার তালিকায় তারা মৃত। ‘জীবিত’  হওয়ার জন্য আনোয়ার হোসেন  নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন। ইতিপূর্বে আরও ১৩ জনের এধরণের সমস্যা হয়েছিল বলে জানা গেছে।

আনোয়ার হোসেন জানান, ২০০৮ সালে তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে পান। যখন দরকার হয়েছে সেটি ব্যবহার করেছেন। তিনি স্থানীয় সদাশিপুর ঘোরামাড়া দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় ভোট দেওয়ার সুযোগ কখনই হয়নি। কয়েকদিন আগে করোনার টিকা নেওয়ার জন্য একটি কম্পিউটারের দোকানে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে  যান। কিন্তু সফল হতে পারেননি। যতবারই চেষ্টা করেছেন ততবারই ফলাফল ‘দুঃখিত’ এসেছে। অন্য জায়গায় গিয়ে চেষ্টা করার পরও সফল হতে পারেননি। উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। পরে নির্বাচন অফিস থেকে তাকে জাতীয় পরিচয়পত্রের কার্ডের ফটোকপি দিতে বলা হয়। তিনি জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি দিয়ে চলে আসেন। পরদিন নির্বাচন অফিস থেকে তাকে ফোন করে ডেকে নিয়ে জানানো হয়; ভোটার তালিকায় আপনি মৃত। তিনি নির্বাচন কর্মকর্তাদের বলেন, আমার টিকা নেওয়া দরকার। এখন আমি কী করবো। নির্বাচন অফিস থেকে আমাকে ফরম পূরণ করে ইউপি চেয়ারম্যানের সনদ দিতে বলা হয়। সেই মোতাবেক বুধবার তিনি সেসব জমা দিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, ২০১২ সালে তার বড় ভাই আবু তালেব মারা গেছেন। কিন্তু এখনো ভোটার তালিকায় তিনি ‘জীবিত’ রয়েছেন।

অপরদিকে নারুয়া  ইউনিয়ন পরিষদে বয়ষ্ক ভাতার অনলাইন নিবন্ধন করতে গিয়ে মোছাম্মৎ গোলজান বিবি জানতে পারেন ভোটার তালিকায় তিনি মৃত। তার জন্ম ১৯২৯ সালের ৫ এপ্রিল। গোলজান বিবির ছেলে ছেলে মধু মন্ডল জানান, তার মায়ের ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে বয়ষ্ক ভাতার জন্য নিবন্ধন করতে গিয়ে ব্যর্থ হলে বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানান। চেয়ারম্যান নির্বাচন অফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ভোটার তালিকায় তার মা মৃত।

নারুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সালাম মাস্টার বলেন,  মায়ের চেয়ে ছেলে ২৫ বছরের বড়, বাবার চেয়ে ছেলে চার বছরের ছোটসহ অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে। এবার গোলজান বিবি বেঁচে থাকলেও ভোটার তালিকায় তিনি মৃত।

এব্যাপারে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নিজামউদ্দিন বলেন, এধরণের ঘটনা এর আগেও বেশ কিছু পেয়েছি। সেগুলোর সমাধান করা হয়েছে। যাদের ক্ষেত্রে এমন ঘটছে তারা চেয়ারম্যানের কাছ থেকে প্রত্যয়ন নিয়ে আসবে যে, প্রকৃতপক্ষে তারা জীবিত। এর একটা আবেদন ফরম যেটা আমরা ফরম্যাট করেই রেখেছি সেটি পূরণ  করে পাঠিয়ে দিলেই স্ট্যাটাস ‘জীবিত’ আসবে। এর আগে  এধরনের ১৩টি  ত্রুটি সমাধান করা হয়েছে। আরও কয়েকটি ঝুলন্ত রয়েছে। বিষয়টি  আমাদের কাছে এলেই সমাধান হয়ে যায়।

এধরণের ঘটনা কেন ঘটছে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, কেন ঘটছে সেটা খোঁজার চেষ্টা করছি। তারা দুবার ভোটার হয়েছে নাকি তথ্য সংগ্রহকারীরা ভুল করেছে সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।