Dhaka ০২:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পদ্মায় পানি বৃদ্ধি ॥ দৌলতদিয়ায় দুটি ঘাট বন্ধ

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৫৬:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • / ১৪৮৩ জন সংবাদটি পড়েছেন


জনতার আদালত অনলাইন ॥রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে আশি^নে আকর্ষিক পানি বেড়ে পদ্মা নদীর পানি এখন বিপদ সীমা ছুঁই ছুঁই। এতে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে এলাকার নি¤œাঞ্চল। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার পরিবার। এদিকে পন্টুনের র‌্যাম ও পকেটপথ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের গুরুত্বপূর্ণ ৪ ও ৫ নম্বর ঘাটদুটি বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডাব্লিউটিএ। ছয়টি ঘাটের দুটি বন্ধ থাকায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে স্বাভাবিক ফেরিপারাপার ব্যাহত হচ্ছে। ফলে গতকাল মঙ্গলবার দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরিপারের অপেক্ষায় আটকা পড়ে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ ঢাকাগামী কয়েক শ বিভিন্ন গাড়ি।
বিআইডাব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট ব্যাবস্থাপক মো. আবু আব্দুল্লাহ জানান, দৌলতদিয়ায় মোট ছয়টি ফেরিঘাট রয়েছে। এর মধ্যে ৪ ও ৫ নম্বর ঘাটদুটি খু¦ই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পন্টুনের র‌্যাম ও পকেটপথ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই ঘাটদুটি বন্ধ রয়েছে। এতে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ঘাটসংকট সৃষ্টি হয়েছে। তবে, চালু থাকা অপর চারটি ঘাট দিয়ে এখন কোন রকমে বিভিন্ন গাড়ি ফেরিপারাপার করা হচ্ছে। এদিকে ঘাটসংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, একদিকে ঘাট সংকট, অপর দিকে ফেরি স্বল্পতার কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে স্বাভাবিক ফেরিপারাপার ব্যাহত হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরিপারের অপেক্ষায় আটকা পড়ে ঢাকাগামী কয়েক শ বিভিন্ন গাড়ি। এতে ফেরিঘাটের জিরোপয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের ইউনিয়ন বোর্ড নামক এলাকা পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তায় যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের দীর্ঘ সারি সৃষ্টি হয়। এদিকে বিআইডাব্লিউটিএ’র আরিচা অঞ্চলের সহ-মহাব্যাবস্থাপক (মেরিন) মো. আব্দুস সোবাহান জানান, আকর্ষিক ভাবে পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে দিন দিন পানি বাড়ছে। এতে দৌলতদিয়ার ৪ ও ৫ নম্বর ঘাটে পন্টুনের র‌্যাম ও পকেটপথের গুরুত্বপূর্ণ অংশ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই ঘাটদুটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে, চালু করতে বন্ধ থাকা ওই ঘাট দুটি মিড-ওয়াটার থেকে হাই-ওয়াটার লেভেলে আনার দ্রুত কাজ চালাচ্ছে বিআইডাব্লিউটিএ’র কর্মীরা। তিনি আরো বলেন, ‘আশি^ন মাসেও পদ্মার পানি বিপদ সীমা ছইুঁ-ছুঁই। এমন অবস্থা আমার ৪৫ বছরের চাকুরি জীবনে আমি আগে কখনো দেখিনি।’ এদিকে দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউপি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় পদ্মাপারের ওই দুই ইউনিয়ন এলাকার নি¤œাঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। সেখানে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। বিভিন্ন রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গ্রামবাসীরা ডিঙ্গি নৌকা ও ভেলায় করে যাতায়াত করছে। এদিকে গোয়ালন্দ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসের কর্মকর্তা মো. ইদ্রিস আলী বলেন, ‘বর্ষা শেষে এলাকার পানি নদীতে নেমে গিয়েছিলো। কিন্তু চলতি মাসের (সেপ্টেম্বর) ১১ তারিখ থেকে পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে আকর্ষিক ভাবে ফের পানি বাড়তে শুরু করে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত চব্বিশ ঘন্টায় সেখানে ৫ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. আবু সাঈদ মন্ডল বলেন, ‘পদ্মানদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে আকর্ষিক ভাবে পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে উপজেলা এলাকার বিভিন্ন নি¤œাঞ্চল ফের প্লাবিত হয়েছে। এলাকার পানিবন্দি পরিবারগুলোর নামের তালিকা তৈরী করতে সংশ্লিষ্ট ইউপি সচিবদের বলা হয়েছে।’ তবে, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকার আকর্ষিক বন্যা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক ভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

পদ্মায় পানি বৃদ্ধি ॥ দৌলতদিয়ায় দুটি ঘাট বন্ধ

প্রকাশের সময় : ০৮:৫৬:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯


জনতার আদালত অনলাইন ॥রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে আশি^নে আকর্ষিক পানি বেড়ে পদ্মা নদীর পানি এখন বিপদ সীমা ছুঁই ছুঁই। এতে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে এলাকার নি¤œাঞ্চল। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার পরিবার। এদিকে পন্টুনের র‌্যাম ও পকেটপথ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের গুরুত্বপূর্ণ ৪ ও ৫ নম্বর ঘাটদুটি বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডাব্লিউটিএ। ছয়টি ঘাটের দুটি বন্ধ থাকায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে স্বাভাবিক ফেরিপারাপার ব্যাহত হচ্ছে। ফলে গতকাল মঙ্গলবার দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরিপারের অপেক্ষায় আটকা পড়ে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ ঢাকাগামী কয়েক শ বিভিন্ন গাড়ি।
বিআইডাব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট ব্যাবস্থাপক মো. আবু আব্দুল্লাহ জানান, দৌলতদিয়ায় মোট ছয়টি ফেরিঘাট রয়েছে। এর মধ্যে ৪ ও ৫ নম্বর ঘাটদুটি খু¦ই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পন্টুনের র‌্যাম ও পকেটপথ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই ঘাটদুটি বন্ধ রয়েছে। এতে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ঘাটসংকট সৃষ্টি হয়েছে। তবে, চালু থাকা অপর চারটি ঘাট দিয়ে এখন কোন রকমে বিভিন্ন গাড়ি ফেরিপারাপার করা হচ্ছে। এদিকে ঘাটসংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, একদিকে ঘাট সংকট, অপর দিকে ফেরি স্বল্পতার কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে স্বাভাবিক ফেরিপারাপার ব্যাহত হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরিপারের অপেক্ষায় আটকা পড়ে ঢাকাগামী কয়েক শ বিভিন্ন গাড়ি। এতে ফেরিঘাটের জিরোপয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের ইউনিয়ন বোর্ড নামক এলাকা পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তায় যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের দীর্ঘ সারি সৃষ্টি হয়। এদিকে বিআইডাব্লিউটিএ’র আরিচা অঞ্চলের সহ-মহাব্যাবস্থাপক (মেরিন) মো. আব্দুস সোবাহান জানান, আকর্ষিক ভাবে পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে দিন দিন পানি বাড়ছে। এতে দৌলতদিয়ার ৪ ও ৫ নম্বর ঘাটে পন্টুনের র‌্যাম ও পকেটপথের গুরুত্বপূর্ণ অংশ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই ঘাটদুটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে, চালু করতে বন্ধ থাকা ওই ঘাট দুটি মিড-ওয়াটার থেকে হাই-ওয়াটার লেভেলে আনার দ্রুত কাজ চালাচ্ছে বিআইডাব্লিউটিএ’র কর্মীরা। তিনি আরো বলেন, ‘আশি^ন মাসেও পদ্মার পানি বিপদ সীমা ছইুঁ-ছুঁই। এমন অবস্থা আমার ৪৫ বছরের চাকুরি জীবনে আমি আগে কখনো দেখিনি।’ এদিকে দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউপি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় পদ্মাপারের ওই দুই ইউনিয়ন এলাকার নি¤œাঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। সেখানে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। বিভিন্ন রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গ্রামবাসীরা ডিঙ্গি নৌকা ও ভেলায় করে যাতায়াত করছে। এদিকে গোয়ালন্দ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসের কর্মকর্তা মো. ইদ্রিস আলী বলেন, ‘বর্ষা শেষে এলাকার পানি নদীতে নেমে গিয়েছিলো। কিন্তু চলতি মাসের (সেপ্টেম্বর) ১১ তারিখ থেকে পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে আকর্ষিক ভাবে ফের পানি বাড়তে শুরু করে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত চব্বিশ ঘন্টায় সেখানে ৫ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. আবু সাঈদ মন্ডল বলেন, ‘পদ্মানদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে আকর্ষিক ভাবে পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে উপজেলা এলাকার বিভিন্ন নি¤œাঞ্চল ফের প্লাবিত হয়েছে। এলাকার পানিবন্দি পরিবারগুলোর নামের তালিকা তৈরী করতে সংশ্লিষ্ট ইউপি সচিবদের বলা হয়েছে।’ তবে, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকার আকর্ষিক বন্যা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক ভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।