Dhaka ১২:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বালিয়াকান্দিতে গ্রাহকদের ১০ লক্ষাধিক টাকা নিয়ে এনজিও লাপাত্তা

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৪৯:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০১৯
  • / ১৩৬৩ জন সংবাদটি পড়েছেন


জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে কম সুদে লোভনীয় ঋণদান এবং কুটির শিল্প প্রকল্পের নামে প্রায় দুইশ গ্রাহকের কাছ থেকে ১০ লক্ষাধিক টাকা নিয়ে হাওয়া হয়ে গেছে সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (এসডিএস) নামে একটি এনজিও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের টিএন্ডটি পাড়ায় জনৈক নায়েব আলীর বাসা ভাড়া নেবে এমন শর্তে বাসার সামনে ‘সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (এসডিএস) রেজিঃ নং-স/ক/স-৩৭৩’ সাইনবোর্ড টাঙিয়ে তারা তাদের কার্যক্রম শুরু করে। এরপর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে মাঠকর্মীরা গিয়ে কুটির শিল্প প্রকল্পের নামে গ্রাহক সৃষ্টি করে। গ্রাহকদের জানায়; ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা দিলে এক লাখ টাকা ঋণ পাওয়া যাবে। মাসিক মাত্র পাঁচ হাজার টাকা কিস্তি জমা দিয়ে এ ঋণ দুই বছরে শোধ করা যাবে। এমন লোভনীয় অফার পেয়ে গ্রামের সহজ সরল মানুষ ১০ হাজার টাকা দিয়ে তাদের সমিতির সদস্য হয়। ২৭ মে সোমবার তাদের ঋণ দেয়ার কথা ছিল। শনিবার কয়েকজন গ্রাহক ওই অফিসে গিয়ে জানতে পারে সেখানে কেউ নেই। এরপর তাদের মোবাইল ফোনে কল করে বন্ধ পান। বুঝতে পারেন তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলাতে ভিন্ন নামে একই কৌশলে গ্রাহক্েদর টাকা নিয়ে তারা লাপাত্তা হয়ে যায়। প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের ধারণা এটি একই চক্রের কাজ।
প্রতারণার শিকার বহরপুর ইউনিয়নের চরগুয়াদাহ গ্রামের ওসমান গণি, মাসুদ, মাতলাখালী গ্রামের হানিফ মন্ডল, ইসমাইল মন্ডল, বালিয়াকান্দি ইউনিয়নের পাইককান্দি গ্রামের জিহাদ শিকদার, তুষার মুন্সী, মোহাম্মদ আলী খন্দকার, বিল্লাল শিকদার, আহম্মদ আলীসহ বেশ কয়েকজন জানান, ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা দিলে এক লাখ টাকা ঋণ পাওয়া যাবে। এভাবে আমাদের কাছ থেকে সঞ্চয় গ্রহণ করে। সোমবার ঋণ দেয়ার কথা ছিল। সমিতির ঠিকানা দেয়া ছিল নায়েব আলীর বাড়ি। শনিবার বিকেলে অফিসে এসে জানতে পারেন তারা নেই।
বাড়ির মালিক নায়েব আলী জানান, গত ২০ মে সোমবার তিনজন নারী ও একজন পুরুষ তার কাছে গিয়ে বাসা ভাড়া চান। কী করবেন জানতে চাইলে বলেন; এনজিও অফিস করবে। আমি সানন্দে রাজী হই। মাসিক ১৫ হাজার টাকা ভাড়া দিতে তারা সম্মত হয়। যে ঘরটি ভাড়া দেয়া হবে সে ঘরে পেঁয়াজ রাখা আছে। এজন্য ঈদের পরে তাদের সাথে চুক্তি করার কথা বলি। তখন তারা বলে; আমরা এমনিতেই একটু বসবো। পরে তারা বাড়ির সামনে একটি সাইনবোর্ডও টাঙায়। এভাবে তারা কয়েকদিন কার্যক্রম চালিয়েছে। এর মাঝে কয়েকজন গ্রাহকও এসেছিল।
নায়েব আলী আরও জানান, এনজিও পরিচালক নাজমাসহ চারজনের ভোটার আইডি কার্ড চেয়েছিলাম। দুজন দিলেও বাকী দুজন দেয়নি। বৃহস্পতিবার থেকে দেখি এনজিওর কেউ নেই। তার কাছে দেয়া মোবাইল নাম্বারে কল করলেও বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি এ প্রতারকদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম রেজা বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আগামী এনজিও মিটিংয়ে বিষয়টি উত্থাপন করা হবে। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বাড়ির মালিকের কাছে দেয়া এনজিওর পরিচালক নাজমার নাম্বারে ফোন করলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

বালিয়াকান্দিতে গ্রাহকদের ১০ লক্ষাধিক টাকা নিয়ে এনজিও লাপাত্তা

প্রকাশের সময় : ০৮:৪৯:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০১৯


জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে কম সুদে লোভনীয় ঋণদান এবং কুটির শিল্প প্রকল্পের নামে প্রায় দুইশ গ্রাহকের কাছ থেকে ১০ লক্ষাধিক টাকা নিয়ে হাওয়া হয়ে গেছে সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (এসডিএস) নামে একটি এনজিও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের টিএন্ডটি পাড়ায় জনৈক নায়েব আলীর বাসা ভাড়া নেবে এমন শর্তে বাসার সামনে ‘সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (এসডিএস) রেজিঃ নং-স/ক/স-৩৭৩’ সাইনবোর্ড টাঙিয়ে তারা তাদের কার্যক্রম শুরু করে। এরপর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে মাঠকর্মীরা গিয়ে কুটির শিল্প প্রকল্পের নামে গ্রাহক সৃষ্টি করে। গ্রাহকদের জানায়; ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা দিলে এক লাখ টাকা ঋণ পাওয়া যাবে। মাসিক মাত্র পাঁচ হাজার টাকা কিস্তি জমা দিয়ে এ ঋণ দুই বছরে শোধ করা যাবে। এমন লোভনীয় অফার পেয়ে গ্রামের সহজ সরল মানুষ ১০ হাজার টাকা দিয়ে তাদের সমিতির সদস্য হয়। ২৭ মে সোমবার তাদের ঋণ দেয়ার কথা ছিল। শনিবার কয়েকজন গ্রাহক ওই অফিসে গিয়ে জানতে পারে সেখানে কেউ নেই। এরপর তাদের মোবাইল ফোনে কল করে বন্ধ পান। বুঝতে পারেন তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলাতে ভিন্ন নামে একই কৌশলে গ্রাহক্েদর টাকা নিয়ে তারা লাপাত্তা হয়ে যায়। প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের ধারণা এটি একই চক্রের কাজ।
প্রতারণার শিকার বহরপুর ইউনিয়নের চরগুয়াদাহ গ্রামের ওসমান গণি, মাসুদ, মাতলাখালী গ্রামের হানিফ মন্ডল, ইসমাইল মন্ডল, বালিয়াকান্দি ইউনিয়নের পাইককান্দি গ্রামের জিহাদ শিকদার, তুষার মুন্সী, মোহাম্মদ আলী খন্দকার, বিল্লাল শিকদার, আহম্মদ আলীসহ বেশ কয়েকজন জানান, ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা দিলে এক লাখ টাকা ঋণ পাওয়া যাবে। এভাবে আমাদের কাছ থেকে সঞ্চয় গ্রহণ করে। সোমবার ঋণ দেয়ার কথা ছিল। সমিতির ঠিকানা দেয়া ছিল নায়েব আলীর বাড়ি। শনিবার বিকেলে অফিসে এসে জানতে পারেন তারা নেই।
বাড়ির মালিক নায়েব আলী জানান, গত ২০ মে সোমবার তিনজন নারী ও একজন পুরুষ তার কাছে গিয়ে বাসা ভাড়া চান। কী করবেন জানতে চাইলে বলেন; এনজিও অফিস করবে। আমি সানন্দে রাজী হই। মাসিক ১৫ হাজার টাকা ভাড়া দিতে তারা সম্মত হয়। যে ঘরটি ভাড়া দেয়া হবে সে ঘরে পেঁয়াজ রাখা আছে। এজন্য ঈদের পরে তাদের সাথে চুক্তি করার কথা বলি। তখন তারা বলে; আমরা এমনিতেই একটু বসবো। পরে তারা বাড়ির সামনে একটি সাইনবোর্ডও টাঙায়। এভাবে তারা কয়েকদিন কার্যক্রম চালিয়েছে। এর মাঝে কয়েকজন গ্রাহকও এসেছিল।
নায়েব আলী আরও জানান, এনজিও পরিচালক নাজমাসহ চারজনের ভোটার আইডি কার্ড চেয়েছিলাম। দুজন দিলেও বাকী দুজন দেয়নি। বৃহস্পতিবার থেকে দেখি এনজিওর কেউ নেই। তার কাছে দেয়া মোবাইল নাম্বারে কল করলেও বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি এ প্রতারকদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম রেজা বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আগামী এনজিও মিটিংয়ে বিষয়টি উত্থাপন করা হবে। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বাড়ির মালিকের কাছে দেয়া এনজিওর পরিচালক নাজমার নাম্বারে ফোন করলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে।