Dhaka ০৫:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আড়াই’শ বছরের ঐতিহ্য মার্বেল মেলা

ডেস্ক নিউজ
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৪২:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫
  • / 11

পৌষসংক্রান্তির গোসাই নবান্ন উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রামানন্দের আঁক গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রায় আড়াই শ বছরের প্রাচীন মার্বেল মেলা। মেলায় অংশ নিতে নানা বয়সি হাজারো মানুষ হাজির হয়েছে। এদিকে, মেলা উপলক্ষে ওই গ্রামের নিরাপত্তায় পুলিশ সদস্যরা ছিলেন বলে জানিয়েছেন আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুশংকর মল্লিক।

গ্রামের প্রবীণরা জানান, মাত্র সাত বছর বয়সে বিধবা হওয়া সোনাই চাঁদ আউলিয়া ১৭৮০ সালে প্রথম মার্বেল মেলার আয়োজন করেন। সেই থেকে প্রতি বছর পৌষসংক্রান্তিতে এ মেলা হয়ে আসছে। এ উপলক্ষে রামানন্দের আঁক গ্রামে সোনাই চাঁদ আউলিয়া মন্দিরে হয় দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। এর মধ্যে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ছিল রাতভর সংকীর্তন, সেনাই চাঁদের আরাধনা, বৈষ্ণবসেবা, সোয়া মণ গোসাই নবান্ন ও সবশেষে মার্বেল মেলা।

মেলার আয়োজকদের অন্যতম ডা. বিধান চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘গ্রামের মেয়ে সোনাই চাঁদের বিয়ে হয়েছিল মাত্র ছয় বছর বয়সে। বিয়ের এক বছর পার হতে না হতেই সাত বছর বয়সে বিধবা হন মা সোনাই চাঁদ। স্বামীর মৃত্যুর পর সোনাই চাঁদ শ্বশুরবাড়িতে (বিশ্বাসবাড়ি) একটি নিম গাছের নিচে মহাদেবের আরাধনা ও পূজার্চনা শুরু করেন। পূজার্চনা থেকে সাধনা। সাধনার উচ্চ মার্গে সিদ্ধ হলে সোনাই চাঁদের অলৌকিক কর্মকা প্রচার হয়। তাঁর জীবদ্দশায় সোনাই চাঁদ আউলিয়া মন্দির স্থাপন করা হয়।’

তাঁর মৃত্যুর পর ওই বাড়িটি ‘মা সোনাই চাঁদ আউলিয়া’র বাড়ি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। প্রতি বছরের মতো বৈষ্ণবসেবা, নামসংকীর্তন, কবিগান শেষে সোয়া মণ (৫০ কেজি) চালের গুঁড়ার সঙ্গে সোয়া মণ গুড়, ৫০ জোড়া নারকেল, প্রয়োজনীয় কলাসহ অন্যান্য উপাদান মিশিয়ে নবান্ন তৈরি করে মেলায় আগতদের প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করা হয়। পরে সকালে ওই বাড়ির আঙিনায় মার্বেল খেলা শুরু হয়; যা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের প্রায় ৫ কিলোমিটার বাড়ি, বাগানে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

আড়াই’শ বছরের ঐতিহ্য মার্বেল মেলা

প্রকাশের সময় : ০৮:৪২:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

পৌষসংক্রান্তির গোসাই নবান্ন উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রামানন্দের আঁক গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রায় আড়াই শ বছরের প্রাচীন মার্বেল মেলা। মেলায় অংশ নিতে নানা বয়সি হাজারো মানুষ হাজির হয়েছে। এদিকে, মেলা উপলক্ষে ওই গ্রামের নিরাপত্তায় পুলিশ সদস্যরা ছিলেন বলে জানিয়েছেন আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুশংকর মল্লিক।

গ্রামের প্রবীণরা জানান, মাত্র সাত বছর বয়সে বিধবা হওয়া সোনাই চাঁদ আউলিয়া ১৭৮০ সালে প্রথম মার্বেল মেলার আয়োজন করেন। সেই থেকে প্রতি বছর পৌষসংক্রান্তিতে এ মেলা হয়ে আসছে। এ উপলক্ষে রামানন্দের আঁক গ্রামে সোনাই চাঁদ আউলিয়া মন্দিরে হয় দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। এর মধ্যে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ছিল রাতভর সংকীর্তন, সেনাই চাঁদের আরাধনা, বৈষ্ণবসেবা, সোয়া মণ গোসাই নবান্ন ও সবশেষে মার্বেল মেলা।

মেলার আয়োজকদের অন্যতম ডা. বিধান চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘গ্রামের মেয়ে সোনাই চাঁদের বিয়ে হয়েছিল মাত্র ছয় বছর বয়সে। বিয়ের এক বছর পার হতে না হতেই সাত বছর বয়সে বিধবা হন মা সোনাই চাঁদ। স্বামীর মৃত্যুর পর সোনাই চাঁদ শ্বশুরবাড়িতে (বিশ্বাসবাড়ি) একটি নিম গাছের নিচে মহাদেবের আরাধনা ও পূজার্চনা শুরু করেন। পূজার্চনা থেকে সাধনা। সাধনার উচ্চ মার্গে সিদ্ধ হলে সোনাই চাঁদের অলৌকিক কর্মকা প্রচার হয়। তাঁর জীবদ্দশায় সোনাই চাঁদ আউলিয়া মন্দির স্থাপন করা হয়।’

তাঁর মৃত্যুর পর ওই বাড়িটি ‘মা সোনাই চাঁদ আউলিয়া’র বাড়ি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। প্রতি বছরের মতো বৈষ্ণবসেবা, নামসংকীর্তন, কবিগান শেষে সোয়া মণ (৫০ কেজি) চালের গুঁড়ার সঙ্গে সোয়া মণ গুড়, ৫০ জোড়া নারকেল, প্রয়োজনীয় কলাসহ অন্যান্য উপাদান মিশিয়ে নবান্ন তৈরি করে মেলায় আগতদের প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করা হয়। পরে সকালে ওই বাড়ির আঙিনায় মার্বেল খেলা শুরু হয়; যা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের প্রায় ৫ কিলোমিটার বাড়ি, বাগানে।