Dhaka ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেফতার

ডেস্ক নিউজ
  • প্রকাশের সময় : ০৫:২৫:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ১০২৮ জন সংবাদটি পড়েছেন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর দামপাড়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপকমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন এ তথ্য জানান।

এর আগে গতকাল রবিবার ফেনী সদরের সুলতানপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশের একটি দল।

পুলিশ জানায়, গ্রেফতার করা এ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার নাম মিঠুন চক্রবর্তী (৩৫)। তিনি চট্টগ্রামের চকবাজার ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির দায়িত্বে আছেন। ধার করা বিদেশি পিস্তল দিয়ে তিনি ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়েছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপ কমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন বলেন, ‘গত ১৬ জুলাই আমাদের এখানে যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলছিল, তখন মিঠুন প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে হামলা চালায়। এ ধরনের একটি ভিডিও আমরা ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি। ভিডিও দেখে আমরা তাকে শনাক্ত করি। এরপর গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তার এক আত্মীয়ের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সেখানে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাঁচলাইশ থানার একটি মামলায় মিঠুন এজাহারনামীয় আসামি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার সম্পৃক্ততা আমরা পেয়েছি। তিনি চকবাজার ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি। ওই ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনুর বিশ্বস্ত সহযোগী ছিল তিনি। তার সহযোগিতায় মিঠুন এলাকায় চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে।’

ডিসি রইছ বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিঠুন আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে দমানোর জন্য তিনি অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করেছেন। আন্দোলনে ব্যবহার করা অস্ত্র উদ্ধারের জন্য আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তিনি বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছেন। অতি দ্রুত অস্ত্রটি উদ্ধারের জন্য আমরা অভিযান পরিচালনা করব।’

যে অস্ত্রটি আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর চালানো হয়েছিল সেটা কী ধরনের অস্ত্র- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘সেটা একটি বিদেশি পিস্তল ছিল। পিস্তলটি তার নিজের নয় দাবি করে তিনি বলেছেন, অন্য আরেকজনের কাছ থেকে এটি নিয়েছিলেন। পরে আবার ফেরত দিয়েছেন। সেটা আমরা তদন্ত করে দেখছি।’

মিঠুন ভারতে পালানোর কোনো চেষ্টা করেছিলেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার অস্ত্রহাতে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তিনি আত্মগোপনে চলে যায়। গ্রেফতার এড়ানোর জন্য তিনি বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন। তিনি বারবার তার অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন। আমাদের পাঁচলাইশ থানার একটি আভিযানিক দল দীর্ঘদিন তাকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করে আসছিল। সর্বশেষ ফেনীর সুলতানপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।’

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেফতার

প্রকাশের সময় : ০৫:২৫:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর দামপাড়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপকমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন এ তথ্য জানান।

এর আগে গতকাল রবিবার ফেনী সদরের সুলতানপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশের একটি দল।

পুলিশ জানায়, গ্রেফতার করা এ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার নাম মিঠুন চক্রবর্তী (৩৫)। তিনি চট্টগ্রামের চকবাজার ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির দায়িত্বে আছেন। ধার করা বিদেশি পিস্তল দিয়ে তিনি ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়েছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপ কমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন বলেন, ‘গত ১৬ জুলাই আমাদের এখানে যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলছিল, তখন মিঠুন প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে হামলা চালায়। এ ধরনের একটি ভিডিও আমরা ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি। ভিডিও দেখে আমরা তাকে শনাক্ত করি। এরপর গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তার এক আত্মীয়ের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সেখানে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাঁচলাইশ থানার একটি মামলায় মিঠুন এজাহারনামীয় আসামি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার সম্পৃক্ততা আমরা পেয়েছি। তিনি চকবাজার ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি। ওই ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনুর বিশ্বস্ত সহযোগী ছিল তিনি। তার সহযোগিতায় মিঠুন এলাকায় চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে।’

ডিসি রইছ বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিঠুন আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে দমানোর জন্য তিনি অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করেছেন। আন্দোলনে ব্যবহার করা অস্ত্র উদ্ধারের জন্য আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তিনি বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছেন। অতি দ্রুত অস্ত্রটি উদ্ধারের জন্য আমরা অভিযান পরিচালনা করব।’

যে অস্ত্রটি আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর চালানো হয়েছিল সেটা কী ধরনের অস্ত্র- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘সেটা একটি বিদেশি পিস্তল ছিল। পিস্তলটি তার নিজের নয় দাবি করে তিনি বলেছেন, অন্য আরেকজনের কাছ থেকে এটি নিয়েছিলেন। পরে আবার ফেরত দিয়েছেন। সেটা আমরা তদন্ত করে দেখছি।’

মিঠুন ভারতে পালানোর কোনো চেষ্টা করেছিলেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার অস্ত্রহাতে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তিনি আত্মগোপনে চলে যায়। গ্রেফতার এড়ানোর জন্য তিনি বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন। তিনি বারবার তার অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন। আমাদের পাঁচলাইশ থানার একটি আভিযানিক দল দীর্ঘদিন তাকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করে আসছিল। সর্বশেষ ফেনীর সুলতানপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।’