পাংশা ও কালুখালীর নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের হলফনামা
তারা গৃহিনী, কিন্তু নির্ভরশীলদের কোনো আয় নেই
- প্রকাশের সময় : ০৭:১২:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ মে ২০২৪
- / ১১৩৪ জন সংবাদটি পড়েছেন
পাংশা ও কালুখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৬ নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর ৫জনই গৃহিনী। অথচ তারা কেউই নির্ভরশীলদের আয় উল্লেখ করেননি। একজন আছেন যিনি একটি সমিতির পরিচালক, তিনি উল্লেখ করেছেন নির্ভরশীলদের আয়। কেউ নিজের সম্পদের বিবরণ দিলেও স্বামী বা নির্ভরশীলদের বিবরণ দেননি। ৬ প্রার্থীর মধ্যে একজন স্বশিক্ষিত, একজন এইচএসসি, একজন এসএসসি, দুজন অষ্টম শ্রেণি পাশ। একজন শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রযোজ্য নয় উল্লেখ করেছেন। তাদের বয়স ৩৯ থেকে ৪৯ বছরের মধ্যে। প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে পাওয়া গেছে এমন তথ্য। আগামী ৮ মে তারিখে প্রথম ধাপে এ দুটি উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
কালুখালী উপজেলায় নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তিনজন। তারা হলেন ডলি পারভীন, শারমীন আক্তার ও শিল্পী আক্তার। তারা তিনজনই গৃহিনী। ডলি পারভীন বিগত নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন। পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন গৃহিনী। শিক্ষাগত যোগ্যতার ঘরে ‘প্রযোজ্য নয়’ উল্লেখ করেছেন। বার্র্ষিক আয় সম্মানী ভাতা পান ৩ লাখ ২৪ হাজার টাকা। নির্ভরশীলদের আয়ের ঘর ফাঁকা। অস্থাবর সম্পদ হিসেবে রয়েছে নগদ এক লাখ টাকা, ৫ ভরি স্বর্ণালংকার, টিভি, ফ্রিজ, খাট ইত্যাদি। নির্ভরশীলদের নগদ টাকার ঘর শূন্য। পোস্টাল সেভিংস সঞ্চয়পত্র রয়েছে ২ লাখ টাকার। স্থাবর সম্পদ আছে ৩ শতাংশ অকৃষি জমি, পৈতৃক সূত্রে পাওয়া একটি চারচালা টিনের ঘর। নির্ভরশীলদের ঘরটি ফাঁকা রয়েছে।
শারমীন আক্তারের শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি। তার পেশা গৃহিনী। আমার এবং আমার উপর নির্ভরশীলদের আয়ের উৎস ছকটি সম্পূর্ণ ফাঁকা। অস্থাবর সম্পদ হিসেবে উল্লেখ করেছেন নগদ ৪ লাখ টাকা, ব্যাংকে আছে ১৭৫৪ টাকা, ৫ ভরি স্বর্ণালংকার, ২ লাখ টাকা মূল্যের ইলেক্ট্রনিক্স ও আসবাবপত্র। এখানে নির্ভরশীলদের ঘরটি ফাঁকা। স্থাবর সম্পদের ঘরেও তিনি কিছু উল্লেখ করেননি।
শিল্পী আক্তারের শিক্ষাগত যোগ্যতা গৃহিনী। পেশা হিসেবে তিনি গৃহিনী উল্লেখ করলেও আয়ের উৎস হিসেবে পশু পালন থেকে ২ লাখ ২৮ হাজার এবং মহিলা সদস্য হিসেবে সম্মানী ভাতা ৪০ হাজার ৮শ টাকা উল্লেখ করেছেন। তিনি নির্ভরশীলদের কোনো আয় উল্লেখ করেননি। অস্থাবর সম্পদ হিসেবে নগদ ৪০ হাজার, ব্যাংকে ৮ লাখ টাকা, উপহার হিসেবে প্রাপ্ত ৩ ভরি স্বর্ণালংকার, টিভি, ফ্রিজ, আসবাবপত্র উল্লেখ করেছেন। তিনিও নির্ভরশীলদের ঘর ফাঁকা রেখেছেন। তার স্থাবর সম্পদ রয়েছে ১০ লাখ টাকা মূল্যের ৯ শতাংশ কৃষি জমি, ৩০ লাখ টাকা মূল্যের একটি দালান। স্বামীর আছে ৫০ লাখ টাকা মূল্যের ১২০ শতাংশ কৃষি জমি।
পাংশা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন তিনজন প্রার্থী। তারা হলেন আসমা খাতুন, দিলরুবা পারভীন ও সাবরিন পারভীন। যাদের দুজন গৃহিনী এবং একজন সমিতির পরিচালক। আসমা খাতুনের শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি। পেশা গৃহিনী উল্লেখ করলেও পশু পালন থেকে তার বার্ষিক আয় দেড় লাখ টাকা। নির্ভরশীলদের আয় উল্লেখ নেই। অস্থাবর সম্পদ রয়েছে নগদ এক লাখ টাকা, ১০ ভরি স্বর্ণালংকার। নির্ভরশীলদের নগদ টাকার কথা উল্লেখ নেই। তবে ১টি ফ্রিজ, তিনটি ফ্যান, একটি টিভি, পাঁচটি খাট, ড্রেসিং টেবিল, একটি বিল্ডিং ও টিনসেড ঘরের কথা উল্লেখ করেছেন। স্থাবর সম্পদ আছে ৩ লাখ টাকা মূল্যের পাঁচ শতাংশ অকৃষি জমি। এখানে নির্ভরশীলদের ঘরটি ফাঁকা।
এসএসসি পাশ সাবরীন আক্তারের পেশা গৃহিনী। আয়ের উৎস কৃষি খাত থেকে আড়াই লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পদ রয়েছে নগদ এক লাখ টাকা, উপহার হিসেবে প্রাপ্ত ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার এবং ২ লাখ টাকা মূল্যের ্আসবাবপত্র। নির্ভরশীলদের আয়, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের ঘর ফাঁকা রয়েছে তার।
দিলরুবা পারভীন একমাত্র প্রার্থী যিনি নিজের এবং নির্ভরশীলদের আয় ও স্থাবর সম্পদের তথ্য দিয়েছেন। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি। পেশা উল্লেখ করেছেন দিগন্ত ক্ষুদ্র ঋণ সমবায় সমিতির পরিচালক। এ খাত থেকে তার বার্ষিক আয় ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। নির্ভরশীলদের আয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন চাকরি থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদ রয়েছে নগদ ৫ লাখ, ব্যাংকে ১৪ লাখ টাকা, ১৫ ভরি স্বর্ণ, ২ লাখ টাকা মূল্যের ইলেক্ট্রনিক্স ও আসবাবপত্র। নির্ভরশীলদের রয়েছে নগদ তিন লাখ, ব্যাংকে ১৫ লাখ টাকা, ৫ ভরি স্বর্ণ এবং ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী। স্থাবর সম্পদ রয়েছে ৩৮ শতাংশ কৃষি জমি, ৭ শতাংশ অকৃষি জমি এবং একটি দালান।