সাবেক ইউপি মেম্বারের মৃত্যুর ৩৫ দিন পর স্ত্রী ও তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে মামলা
- প্রকাশের সময় : ০৮:২৯:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল ২০২২
- / ১১৬৭ জন সংবাদটি পড়েছেন
জনতার আদালত অনলাইন ॥ অভিসারে পরকীয়া প্রেমিকের সাথে এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়ার পর রাজবাড়ী সদর উপজেলার দাদশী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি মেম্বার মোশারফ হোসেন মলমগীরের মৃত্যুর ৩৫ দিন পর তার স্ত্রী যুথি আক্তার ও প্রেমিক আরিফ শেখের বিরুদ্ধে রাজবাড়ীর ১ নং আমলী আদালতে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। মৃত মোশারফ হোসেনের বোন আলেয়া জামান বাদী হয়ে মঙ্গলবার মামলাটি দায়ের করেন। মৃত মোশারফ হোসেন একই ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। গত ১৪ মার্চ তারিখে নিজ শোবার ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় মারা যান তিনি। যদিও যুথি আক্তারের দাবি, স্বামীর মৃত্যুর ১৫ দিন আগে তিনি নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে আরিফকে বিয়ে করেছিলেন। আরিফ রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের নিমতলা এলাকার বাসিন্দা।
মোশারফ হোসেন মলমগীরের পারিবারিক সূত্র জানায়, ১৩ মার্চ রাতে মোশরফ হোসেন তার ঘরে একাই ঘুমিয়ে ছিলেন। পরদিন ১৪ মার্চ তার স্ত্রী যুথি আক্তার জানায়; মোশারফ স্ট্রোক করে মারা গেছে। স্বাভাবিক মৃত্যু ভেবে ওইদিনই লাশ দাফন করা হয়। গত ১৬ এপ্রিল দিবাগত রাতে মৃত মোশারফ হোসেনের ঘরে যুথি আক্তারের সাথে আরিফ শেখকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করে এলাকাবাসী। এসময় যুথি আক্তার দাবি করেন, তার স্বামীর মৃত্যুর ১৫ দিন আগে সে আরিফ শেখকে বিয়ে করেছে। এতে করেই মোশারফের মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়।
মামলার বিবরণীতে বাদী উল্লেখ করেছেন, ২০১৩ সালে মোশারফ হোসেনের সাথে যুথি আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে দুটি সন্তান রয়েছে। যুথি আক্তারের সাথে আরিফ শেখের পরকীয়া চলছিলো অনেক দিন ধরেই। বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হয়। যুথি আক্তারের পরকীয়ার বিষয়টি নিয়ে মোশারফ হোসেন তার শ^শুরের (যুথির বাবা) সাথে ১৪ মার্চ তারিখে আলোচনায় বসার কথা ছিল। ওইদিনই রহস্যজনকভাবে তার মৃত্যু হয়। পরিকল্পিতভাবে যুথি ও তার প্রেমিক মোশারফকে হত্যা করেছে বলে ধারণা তার।
যুথির বাবা এসলাম মোল্লার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, তার মেয়ে কবে কখন কীভাবে আরিফকে বিয়ে করেছে তা তিনি কিছুই জানেন না। আরিফের সাথে ঘটনার পর বিষয়টি তিনি জেনেছেন। কিন্তু বাবা হিসেবে এটা তিনি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। স্বামী মারা গেলে বিয়ে করার ইচ্ছা থাকলে সবাইকে তা জানিয়ে করতে পারতো। মেয়ে এখন কোথায় আছে তাও তিনি জানেন না। যদি সে অপরাধ করে তাহলে তার শাস্তি হবে।
রাজবাড়ী সদর থানার ওসি শাহাদাত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মোশারফ হোসেনের মৃত্যুর পর তার পরিবারের কেউ অভিযোগ করেনি। তার স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয়টি সামনে আসার পর হত্যার অভিযোগ তুলছে। যুথি আক্তার তার প্রেমিক আরিফকে বিয়ে করেছে বলে কাবিন দেখিয়েছে। একজন পূর্ণ বয়ষ্কা নারী এ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। বিষয়টি জেনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। যুথি আক্তার ও আরিফ শেখকে থানায় আনা হয়। পরে তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। আদালতে মামলা হলে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ কাজ করবে।