Dhaka ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীতে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৪৮:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০২২
  • / ১১৫৯ জন সংবাদটি পড়েছেন

জনতার আদালত অনলাইন রাজবাড়ীতে গত কয়েক দিন ধরে ক্রমশঃ বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। রোববার রাত ১২টা থেকে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া  ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ২২ জন। ওয়ার্ডে জায়গার সঙ্কুলান না হওয়ায় হাসপাতালের বাইরে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে নার্স ও চিকিৎসকদের।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে  শয্যা মাত্র ১২টি। শয্যা পূর্ণ হয়ে গেলে ফ্লোরে ১০ জনকে রাখার মত ব্যবস্থা আছে। গত চার পাঁচ দিন ধরে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা  বাড়তে থাকে। রোববার হাসপাতালে ভর্তি ছিল ২২ জন রোগী। এরপর আরও ২২ জন রোগী ভর্তি হয়। যে কারণে  কয়েকজন রোগীকে হাসপাতালের বাইরে রাখতে হয়েছে অনিচ্ছা সত্ত্বেও। তবে সোমবার সুস্থ হয়ে যাওয়া ২২ জন রোগীকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে।

 সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সামনে বিছানা পেতে শুয়ে আছেন একজন শিশু ও একজন  বৃদ্ধা। তাদের সাথে রয়েছেন স্বজনরাও।

রাজবাড়ী শহরের ধুঞ্চি গ্রামের বাসিন্দা আইয়ুব আলী জানান, রোববার তার ১২ বছর বয়সী ছেলে আবিরের বমি, পাতলা পায়খানা শুরু হয়। প্রথমে বাড়িতেই স্যালাইন খাইয়েছিলেন। না কমায় হাসপাতালে এনে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। না কমায়  শিশু ওয়ার্ড থেকে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। কিন্তু এখানে ওয়ার্ডের ভেতরে কোনো জায়গা  নেই। তাই ভর্তি হয়ে বাইরে আছেন। একটু সুস্থ হলেই ছেলেকে বাড়ি নিয়ে যাবেন।

রাজবাড়ী শহরতলীর বাসিন্দা বন্যা বেগম জানান, তার ডায়রিয়ায় তার শিশু মেয়ে ও শাশুড়ি দুজনই অসুস্থ। শাশুড়ির অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় আজ (সোমবার) হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। ভেতরে জায়গা না পেয়ে বাইরে রেখেছেন।

বিনোদপুর গ্রামের বাসিন্দা ফরিদা খাতুন জানান, তার এক বছর বয়সী মেয়ের গত তিন দিন ধরে বমি পাতলা পায়খানা। গত শনিবার হাসপাতালে আনার পর ডাক্তার দেখে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। না কমলে নিয়ে আসতে বলেন। রোববার না কমায় হাসপাতালে এনে ভর্তি করেছেন। কিন্তু এখনও কমেনি।

রাজবাড়ী শহরের একজন বাসিন্দা পেশায় ডিম ব্যবসায়ী ফরিদুল ইসলাম জানান, তার এক স্বজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। বিনোদপুরে অনেকেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কর্মরত সিরিয়র স্টাফ নার্স মিনতি রায় চৌধুরী জানান, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা মাত্র ১২টি।  এর মধ্যে এক সাথে ৪৪ জন রোগীকে চিকিৎসা দিতে হয়েছে। যাদের মধ্যে ২২ জনকে সুস্থ করে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। এই ওয়ার্ডে মাত্র পাঁচজন নার্স দড়ায়িত্বে রয়েছেন। যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। রোগীর চাপে তারা নিজেরাই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তবুও সেবা দিতে কোনো কার্পন্য করছেন না। ভেতরে জায়গা না হওয়ায় কয়েকজন রোগীকে বাইরে রাখতে হয়েছে বলে জানান তিনি।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এসএমএ হান্নান জানান, ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শয্যার তুলনায় রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। তবে চিকিৎসার কোনো ঘাটতি নেই। কী কারণে ডায়নিয়ার প্রকোপ বেড়েছে তা বলা সম্ভব নয়। পানি থেকে হতে পারে। ডায়রিয়া প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন  হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

রাজবাড়ীতে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে

প্রকাশের সময় : ০৮:৪৮:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০২২

জনতার আদালত অনলাইন রাজবাড়ীতে গত কয়েক দিন ধরে ক্রমশঃ বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। রোববার রাত ১২টা থেকে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া  ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ২২ জন। ওয়ার্ডে জায়গার সঙ্কুলান না হওয়ায় হাসপাতালের বাইরে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে নার্স ও চিকিৎসকদের।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে  শয্যা মাত্র ১২টি। শয্যা পূর্ণ হয়ে গেলে ফ্লোরে ১০ জনকে রাখার মত ব্যবস্থা আছে। গত চার পাঁচ দিন ধরে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা  বাড়তে থাকে। রোববার হাসপাতালে ভর্তি ছিল ২২ জন রোগী। এরপর আরও ২২ জন রোগী ভর্তি হয়। যে কারণে  কয়েকজন রোগীকে হাসপাতালের বাইরে রাখতে হয়েছে অনিচ্ছা সত্ত্বেও। তবে সোমবার সুস্থ হয়ে যাওয়া ২২ জন রোগীকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে।

 সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সামনে বিছানা পেতে শুয়ে আছেন একজন শিশু ও একজন  বৃদ্ধা। তাদের সাথে রয়েছেন স্বজনরাও।

রাজবাড়ী শহরের ধুঞ্চি গ্রামের বাসিন্দা আইয়ুব আলী জানান, রোববার তার ১২ বছর বয়সী ছেলে আবিরের বমি, পাতলা পায়খানা শুরু হয়। প্রথমে বাড়িতেই স্যালাইন খাইয়েছিলেন। না কমায় হাসপাতালে এনে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। না কমায়  শিশু ওয়ার্ড থেকে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। কিন্তু এখানে ওয়ার্ডের ভেতরে কোনো জায়গা  নেই। তাই ভর্তি হয়ে বাইরে আছেন। একটু সুস্থ হলেই ছেলেকে বাড়ি নিয়ে যাবেন।

রাজবাড়ী শহরতলীর বাসিন্দা বন্যা বেগম জানান, তার ডায়রিয়ায় তার শিশু মেয়ে ও শাশুড়ি দুজনই অসুস্থ। শাশুড়ির অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় আজ (সোমবার) হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। ভেতরে জায়গা না পেয়ে বাইরে রেখেছেন।

বিনোদপুর গ্রামের বাসিন্দা ফরিদা খাতুন জানান, তার এক বছর বয়সী মেয়ের গত তিন দিন ধরে বমি পাতলা পায়খানা। গত শনিবার হাসপাতালে আনার পর ডাক্তার দেখে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। না কমলে নিয়ে আসতে বলেন। রোববার না কমায় হাসপাতালে এনে ভর্তি করেছেন। কিন্তু এখনও কমেনি।

রাজবাড়ী শহরের একজন বাসিন্দা পেশায় ডিম ব্যবসায়ী ফরিদুল ইসলাম জানান, তার এক স্বজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। বিনোদপুরে অনেকেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কর্মরত সিরিয়র স্টাফ নার্স মিনতি রায় চৌধুরী জানান, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা মাত্র ১২টি।  এর মধ্যে এক সাথে ৪৪ জন রোগীকে চিকিৎসা দিতে হয়েছে। যাদের মধ্যে ২২ জনকে সুস্থ করে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। এই ওয়ার্ডে মাত্র পাঁচজন নার্স দড়ায়িত্বে রয়েছেন। যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। রোগীর চাপে তারা নিজেরাই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তবুও সেবা দিতে কোনো কার্পন্য করছেন না। ভেতরে জায়গা না হওয়ায় কয়েকজন রোগীকে বাইরে রাখতে হয়েছে বলে জানান তিনি।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এসএমএ হান্নান জানান, ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শয্যার তুলনায় রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। তবে চিকিৎসার কোনো ঘাটতি নেই। কী কারণে ডায়নিয়ার প্রকোপ বেড়েছে তা বলা সম্ভব নয়। পানি থেকে হতে পারে। ডায়রিয়া প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন  হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।