আ’লীগ নেতা নবাব মজনুসহ আসামি ২০ জন, পাংশায় সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় ২ বছর পর আদালতে মামলা
- প্রকাশের সময় : ১০:৪৫:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২০
- / ২৮২৫ জন সংবাদটি পড়েছেন
জনতার আদালত অনলাইন ॥ প্রায় দুই বছর আগে ২০১৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর তারিখে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা শহরের পোস্ট অফিসের কাছে একদল দুর্বৃত্ত হামলা চালিয়ে সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদকে লোহার রড, হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে চার হাত-পা ভেঙে দেয়। দীর্ঘ আড়াই মাস তিনি ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ঘটনার দুই বছর পর বিচারপ্রার্থী হয়ে মঙ্গলবার রাজবাড়ীর ২ নং আমলী আদালতে মামলা করেছেন সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ। পাংশা শহরের মাগুড়াডাঙ্গি গ্রামের বাসিন্দা আজাদ কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক আন্দোলনের বাজার ও ঢাকা থেকে প্রকাশিক দৈনিক স্বদেশ খবর পত্রিকার পাংশা উপজেলা প্রতিনিধি।
মামলায় রাজবাড়ী জেলা পরিষদের সদস্য ও কালুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান মজনু, কালুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কালিকাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিউর রহমান নবাবসহ ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অন্য আসামিরা হলো মনোয়ার হোসেন জনি, মিজানুর রহমান রিপন, সাহেদ আলী, মো. আলী, মো. সফিক, পাংশা উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি সুব্রত দাস সাগর, হান্নান, আব্দুর রাজ্জাক রাজা, কামাল আল মাসুদ, নয়ন ইন্তেখার, মো. রঙ্গীলা, মো. সাকিব, মো. রিপন, মো. নাজমুল, মো. মিলন, মো. সবুজ, পিন্টু জোয়ার্দার ও জাবেদ আলী। আসামিদের বাড়ি পাংশা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।
আদালতের বিচারক মৌসুমী সাহা মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পাংশা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আরজীতে বাদী উল্লেখ করেন, তিনি বিভিন্ন সময় অনিয়ম, লুটপাট এবং এলাকার অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে নিউজ করেছেন। একারণে আসামিরা তার উপর ক্ষুব্ধ ছিল। তাকে বেশ কয়েকবার হুমকি ধমকিও দেয়। হুমকি ধমকি উপেক্ষা করে তিনি তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করে চলছিলেন। ২০১৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর তারিখ রাত সাতটার দিকে তিনি সংবাদ সংগ্রহ শেষে ভ্যানযোগে ফেরার পথে পোস্ট অফিসের কাছে আসামাত্র আসামিরা দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার উপর হামলা চালায়। হামলায় তার চার হাত পায়ের অন্ততঃ দশ স্থান ভেঙে যায়। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে তাকে বেধরক পেটানোর পর তিনি নিস্তেজ অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছিলেন। এতে মৃত ভেবে আসামিরা চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে পাংশা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। সেখান থেকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করে। বর্তমানেও তিনি ভালোভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। শারীরিক অসুস্থতা এবং আসামিদের ভয়ে ভীত শঙ্কিত হওয়ার কারণে এতোদিন তিনি মামলা করতে পারেন নাই।
এব্যাপারে মামলার ১ নং আসামি রাজবাড়ী জেলা পরিষদ সদস্য ও কালুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান মজনু বলেন, মামলার বিষয়ে আমি আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। মামলার সঠিক তদন্ত হোক। সঠিক তদন্তেই বেরিয়ে আসবে ওই ঘটনার সাথে কারা জড়িত। প্রতিহিংসামূলক মিথ্যা মামলা উনি করতেই পারেন। সঠিক তদন্ত যেভাবে হয় আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে যাব।
অপর আসামি কালুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কালিকাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিউর রহমান নবাব বলেন, অন্য কোনো কারণে এ মামলায় আমাকে আসামি করা হয়েছে। আমি এর সাথে জড়িত নই।