Dhaka ০৮:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুর্গম চরাঞ্চলের মানুেষের জীবনের অপর নাম ‌‌শুধুই দুর্ভোগ

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০২:০৭:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মে ২০২০
  • / ১৩৮৩ জন সংবাদটি পড়েছেন

 

জনতার আদালত অনলাইন ঃ দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন তিনটি চরাঞ্চল এলাকা কুশাহাটা,বেতকা ও রাখালগাছি। এই স্থানগুলোতে  যেতে দেড় থেকে দুই ঘন্টা ট্রলারে নদী পার হয়ে যেতে হয় দুর্গম চরাঞ্চল এলাকায়।এ দুর্গম চরাঞ্চলের এই এলাকাগুলোতে। গোয়ালন্দ উপজেলার বিচ্ছিন্ন এই ৩টি এলাকাতে প্রায় তিন হাজার মানুষের বসবাস। আর ভোটার রয়েছে প্রায় ১হাজারের বেশি। দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের পদ্মানদীর পশ্চিমে চর জেগে ওঠা প্রত্যন্ত দুর্গম এলাকা।

৮ থেকে ১০ বছর আগে এখানে মানুষের বসতি শুরু হয়। এখানে প্রায় ৫শত পরিবার রয়েছে এ পরিবারগুলোর সদস্য রয়েছে প্রায় ৩হাজারের কাছাকাছি। আর ভোটার রয়েছে প্রায় ১ হাজার। এ চরাঞ্চলের মানুষ গুলো বিভিন্ন ধরনের সবজির,ফসল চাষাবাদ এবং নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তবে চরাঞ্চলের অবহেলিত সাধারণ মানুষ নানা সমস্যায় এখন জর্জরিত। এখানে নেই কোন স্কুল,মাদ্রাসা, স্বাস্থ্য কেন্দ্র,নেই হাট বাজরও। প্রয়োজনের তাগিদে তাদের দুরে অবস্থিত রাজবাড়ী জেলা শহর এবং সুদুর মানিকগঞ্জের আরিচা বাজারে পণ্য বিক্রি ও নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী ক্রয় করতে যেতে হয় তাদের।

দুর্গম চরাঞ্চলের এই মানুষ গুলো শিক্ষা ,চিকিৎসা ,স্বাস্থ্য,হাট বাজার সহ সব ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় ও বিক্রয় করতে তাদের যেতে হয় ১৫ কিলোমিটার নদী পার হয়ে সুদুর জেলা শহর ও মারিনগঞ্জের আরিচাতে। অবহেলিত এই বিশাল জনগোষ্ঠি সরকারী কোন ধরনের সুবিধা পাননা। কোন রকমে চলছে তাদের জীবন ও জীবিকা। অল্প বয়সে তাদের সন্তানদের বিয়ে দেওয়ার প্রবনতা রয়েছে এ অঞ্চলের মানুষের।

দুর্গম চলাঞ্চলে বসবাস রত মোঃ মেজেক আলী সরদার ও মোহন ব্যাপারী সহ অসহায় এ মানুষ গুলো বলেন, বছরের ছয়মাস তারা পানির সাথে বসবাস করেন। তাদের এখানে স্কুল ,মাদ্রাসা ,স্বাস্থ্য চিকিৎসা ,হাট বাজার সহ কোন ধরনের সুবিধা নেই এই চরাঞ্চলে। করোনা ভাইরাস কি তাও তাদের ভালো করে জানা নেই। এই রদুঃসময়ে সরকারী কোন ধরনের ত্রানও পাননি তারা। জন প্রতিনিধিরা এখানে তাদের দেখতেও আসেনি। শুধু ভোটের সময় ভোট চাইতে আসে। কোন রকমে খেয়ে না খেয়ে তারা খুব কষ্টে জীবন যাপন করছেন বলেন।

দৌলতদিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রহমান বলেন, কুশাহাটা দৌলতদিয়ার একটি দুর্গম চরাঞ্চল এলাকা।এখানে ১০৮ টি পরিবারের প্রায় ৫শত মানুষের বসবাস আর ভোটার রয়েছে দের শতাধিক। তাদের সরকারী ভাবে ১০ কেজি করে চাল দিয়ে সহযোগীতা করা হয়েছে।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবায়েত হায়াৎ শিপলু  বলেন কুশাহাট একটি বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল। এখানে ১০৮ টি পরিবারের সাড়ে চার শত মানুষের বসবাস,আর ভোটার রয়েছে ১৬৩ জন। তাদের প্রত্যেকের মাঝে ইতমধ্যে ১০ কেজি করে চাল বিতরন করেছেন। তবে মানবিক কর্মসূচির আওতায় অন্তর্ভক্ত এবং তাদের চাহিদার ভিত্তিতে এ অঞ্চলের কৃষির সাথে যারা নিয়োজিত তাদের বীজ এবং সার কৃষকদের মাঝে ঠিক মত বিতরন করা যায় পাশাপাশি অন্যান্য সব ধরনের সুবিধা দেওয়া হবে বলে জানান।

গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, দৌলতদিয়া ও দেবগ্রামের দুর্গম চরাঞ্চলের তিন এলাকা কুশাহাটা,বেতকা ও রাখালগাছি। এখানকার মানুষ অবহেলিত। এই এলাকাগুলোতে প্রায় তিন হাজার মানুষের বসবাস আর এখানে ভোটার রয়েছে প্রায় ১হাজারেরও বেশি। ইতমধ্যে তাদের সরকারী সাহাজ্য দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ এ সাহাজ্য থেকে বাদ পরে তবে তাদের আবার সহযোগীতা করা হবে।তবে এ পর্যন্ত গোয়ালন্দ উপজেলার হত দরিদ্র ২০ হাজার মানুষের মাঝে ত্রান দিয়েছেন। আর করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে তিনি বলেন এই স্থানে প্রচার প্রচরনা চালানো হয়েছে। দেওয়া হয়েছে ভাইরাস রোধে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার। তবে এখানকার মানুষ শিক্ষা না থাকায় তারা এই ভাইরাস সম্পর্কে অবগত নন।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

দুর্গম চরাঞ্চলের মানুেষের জীবনের অপর নাম ‌‌শুধুই দুর্ভোগ

প্রকাশের সময় : ০২:০৭:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মে ২০২০

 

জনতার আদালত অনলাইন ঃ দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন তিনটি চরাঞ্চল এলাকা কুশাহাটা,বেতকা ও রাখালগাছি। এই স্থানগুলোতে  যেতে দেড় থেকে দুই ঘন্টা ট্রলারে নদী পার হয়ে যেতে হয় দুর্গম চরাঞ্চল এলাকায়।এ দুর্গম চরাঞ্চলের এই এলাকাগুলোতে। গোয়ালন্দ উপজেলার বিচ্ছিন্ন এই ৩টি এলাকাতে প্রায় তিন হাজার মানুষের বসবাস। আর ভোটার রয়েছে প্রায় ১হাজারের বেশি। দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের পদ্মানদীর পশ্চিমে চর জেগে ওঠা প্রত্যন্ত দুর্গম এলাকা।

৮ থেকে ১০ বছর আগে এখানে মানুষের বসতি শুরু হয়। এখানে প্রায় ৫শত পরিবার রয়েছে এ পরিবারগুলোর সদস্য রয়েছে প্রায় ৩হাজারের কাছাকাছি। আর ভোটার রয়েছে প্রায় ১ হাজার। এ চরাঞ্চলের মানুষ গুলো বিভিন্ন ধরনের সবজির,ফসল চাষাবাদ এবং নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তবে চরাঞ্চলের অবহেলিত সাধারণ মানুষ নানা সমস্যায় এখন জর্জরিত। এখানে নেই কোন স্কুল,মাদ্রাসা, স্বাস্থ্য কেন্দ্র,নেই হাট বাজরও। প্রয়োজনের তাগিদে তাদের দুরে অবস্থিত রাজবাড়ী জেলা শহর এবং সুদুর মানিকগঞ্জের আরিচা বাজারে পণ্য বিক্রি ও নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী ক্রয় করতে যেতে হয় তাদের।

দুর্গম চরাঞ্চলের এই মানুষ গুলো শিক্ষা ,চিকিৎসা ,স্বাস্থ্য,হাট বাজার সহ সব ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় ও বিক্রয় করতে তাদের যেতে হয় ১৫ কিলোমিটার নদী পার হয়ে সুদুর জেলা শহর ও মারিনগঞ্জের আরিচাতে। অবহেলিত এই বিশাল জনগোষ্ঠি সরকারী কোন ধরনের সুবিধা পাননা। কোন রকমে চলছে তাদের জীবন ও জীবিকা। অল্প বয়সে তাদের সন্তানদের বিয়ে দেওয়ার প্রবনতা রয়েছে এ অঞ্চলের মানুষের।

দুর্গম চলাঞ্চলে বসবাস রত মোঃ মেজেক আলী সরদার ও মোহন ব্যাপারী সহ অসহায় এ মানুষ গুলো বলেন, বছরের ছয়মাস তারা পানির সাথে বসবাস করেন। তাদের এখানে স্কুল ,মাদ্রাসা ,স্বাস্থ্য চিকিৎসা ,হাট বাজার সহ কোন ধরনের সুবিধা নেই এই চরাঞ্চলে। করোনা ভাইরাস কি তাও তাদের ভালো করে জানা নেই। এই রদুঃসময়ে সরকারী কোন ধরনের ত্রানও পাননি তারা। জন প্রতিনিধিরা এখানে তাদের দেখতেও আসেনি। শুধু ভোটের সময় ভোট চাইতে আসে। কোন রকমে খেয়ে না খেয়ে তারা খুব কষ্টে জীবন যাপন করছেন বলেন।

দৌলতদিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রহমান বলেন, কুশাহাটা দৌলতদিয়ার একটি দুর্গম চরাঞ্চল এলাকা।এখানে ১০৮ টি পরিবারের প্রায় ৫শত মানুষের বসবাস আর ভোটার রয়েছে দের শতাধিক। তাদের সরকারী ভাবে ১০ কেজি করে চাল দিয়ে সহযোগীতা করা হয়েছে।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবায়েত হায়াৎ শিপলু  বলেন কুশাহাট একটি বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল। এখানে ১০৮ টি পরিবারের সাড়ে চার শত মানুষের বসবাস,আর ভোটার রয়েছে ১৬৩ জন। তাদের প্রত্যেকের মাঝে ইতমধ্যে ১০ কেজি করে চাল বিতরন করেছেন। তবে মানবিক কর্মসূচির আওতায় অন্তর্ভক্ত এবং তাদের চাহিদার ভিত্তিতে এ অঞ্চলের কৃষির সাথে যারা নিয়োজিত তাদের বীজ এবং সার কৃষকদের মাঝে ঠিক মত বিতরন করা যায় পাশাপাশি অন্যান্য সব ধরনের সুবিধা দেওয়া হবে বলে জানান।

গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, দৌলতদিয়া ও দেবগ্রামের দুর্গম চরাঞ্চলের তিন এলাকা কুশাহাটা,বেতকা ও রাখালগাছি। এখানকার মানুষ অবহেলিত। এই এলাকাগুলোতে প্রায় তিন হাজার মানুষের বসবাস আর এখানে ভোটার রয়েছে প্রায় ১হাজারেরও বেশি। ইতমধ্যে তাদের সরকারী সাহাজ্য দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ এ সাহাজ্য থেকে বাদ পরে তবে তাদের আবার সহযোগীতা করা হবে।তবে এ পর্যন্ত গোয়ালন্দ উপজেলার হত দরিদ্র ২০ হাজার মানুষের মাঝে ত্রান দিয়েছেন। আর করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে তিনি বলেন এই স্থানে প্রচার প্রচরনা চালানো হয়েছে। দেওয়া হয়েছে ভাইরাস রোধে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার। তবে এখানকার মানুষ শিক্ষা না থাকায় তারা এই ভাইরাস সম্পর্কে অবগত নন।