রাজবাড়ীতে ঈদ প্রস্তুতি সভা
‘ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ছিনতাই চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে’

- প্রকাশের সময় : ০৫:৩৭:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
- / 25
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাস ও গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, অজ্ঞান পার্টি ও জুয়া বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সোমবার রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ঈদ প্রস্তুতি সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়। একই সাথে ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘœ করতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ঈদের তিন দিন আগে ও তিন দিন পরে জরুরী ছাড়া সকল পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার।
সভায় জানানো হয়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যাত্রী ও যানবাহন নির্বিঘেœ পারাপারের জন্য ১৭ টি ফেরি ও ২০টি লঞ্চ চলাচল করবে। দৌলতদিয়ায় সাতটি ঘাটের মধ্যে তিনটি ঘাট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া, চাঁদাবাজি, অজ্ঞানপার্টি ও ফেরিতে জুয়া বন্ধে কঠোর নজরদারিতে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়া মেডিকেল টিমসহ নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ।
সভায় বিআইডবিøউটিএর উপ পরিচালক (আরিচা) সেলিম শেখ বলেন, বর্তমানে আরিচায় পাঁচটি ঘাট চালু রয়েছে। যদি যানবাহন ও যাত্রীর সংখ্যা বাড়ে তাহলে আরও দুটি ঘাট চালু করা হবে। দৌলতদিয়ায় ভাঙনের কারণে দুটি ঘাট চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে, তিনটি ঘাটে আটটি পকেট আছে। একই সঙ্গে আটটি পকেটে লোড আনলোড করা যাবে। নৌরুটে চ্যানেল নিয়ে কোনো সংকট নেই। যে চ্যানেল দিয়ে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল করে সেটি স্বাভাবিক রয়েছে। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের মাঝামাঝি যে চর আছে সেটি কেটে ২৬০ ফুট প্রশস্ত করা হয়েছে। যেকারণে আর কোনো সমস্যা হবেনা।
বিআইডবিøউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন বলেন, পবিত্র ঈদ উপলক্ষে তারা ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। ছোট বড় মাঝারি মিলিয়ে ১৭টি ফেরি চলাচল করবে। ঘরমুখো মানুষকে তারা নিরপদে পার করতে সক্ষম।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) শরীফ আল রাজীব বলেন, যারা আমাদের জেলার রাস্তা ও নৌপথ ব্যবহার করে ঈদে ঘরে ফেরেন। তাদের জন্য নিরাপদ ব্যবস্থা করতে না পারি তাহলে সেটা আমাদের ব্যর্থতা বলেই গণ্য হয়। আমাদের জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে যতটুকু করা দরকার তা অবশ্যই করব। সেই সাথে জেলা প্রশাসন, বিআইডবিøউটিসি, বিআইডবিøউটিএ, পরিবহন মালিক গ্রæপ সমন্বিতভাবে চেষ্টা করলে অবশ্যই সফল হবো। ঈদের আগে পরে বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রীদের হয়রানী করার মত বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে মানুষ শান্তিতে যেতে পারবে। রাস্তা সড়ক যানজটমুক্ত করতেও তারা সচেষ্ট থাকবেন। রোজার শুরু থেকে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করে চলেছে। বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো দেখতেও খারাপ লাগে। এসব নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। দৌলতদিয়ায় চাঁদাবাজ, ছিনতাইয়ের সাথে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। জুয়ার কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট হয়। এব্যাপারে নৌপুলিশ তাদের সহযোগিতা করবে।
সভাপতির বক্তৃতায় রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার বলেন, সভায় যেসব বিষয়গুলো উত্থাপিত হয়েছে নিরাপদ যাত্রার স্বার্থে সেসব করার চেষ্টা করবে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে কঠোর নজরদারি করা হবে। সবাই মিলে একযোগে কাজ করলে অবশ্যই আমরা সফল হব।
সভায় অন্যদের মাঝে বক্তৃতা করেন রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. এসএম মাসুদ, স্থানীয় সরকার উপ পরিচালক মজহারুল ইসলাম, রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমরুল হাসান, রাজবাড়ী জেলা আনসার কমান্ড্যান্ট মোস্তারী জাহান ফেরদৌস, গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদুর রহমান প্রমুখ। এসময় জেলার বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, রাজবাড়ী পরিবহন মালিক গ্রæপের নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভা পরিচালনা করেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উছেন মে।