Dhaka ০৫:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এলাকাবাসীর উদ্যোগে হচ্ছে রাস্তা নির্মাণ

আশিক হাসান কালুখালী
  • প্রকাশের সময় : ০৯:০০:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪
  • / ১০৫৩ জন সংবাদটি পড়েছেন

নিজেরা স্বেচ্ছাশ্রমে ও চাঁদা তুলে সরকারি হালটের উপর মাটি ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করছেন রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নে আলাদিপুর গ্রামের মাঝার পাড়া মাঠের মধ্যে গড়ে ওঠা নতুন বসতী পরিবারের লোকজন।

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়; আলীপুর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান বাড়ির পিছন দিয়ে ইট বিছানো রাস্তার শেষে মোঃ সবুজ মন্ডলের বাড়ি হতে আধ্যাত্মিক বরইতলা ও মোঃ হান্নান খানের বাড়ির পাশ দিয়ে মহাসড়ক পর্যন্ত আলীপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডস্থ ইন্দ্রনারায়নপুর মৌজা ও ৫ নং ওয়ার্ডস্থ আলাদিপুর মৌজার সীমানা বরাবর একটি সরকারি হালট রয়েছে। সেই হালোটের পূর্ব ও দক্ষিণ দিকের দুই মাথায় রয়েছে বৃহৎ আকারের দু’টি খাদ। এবং মাঝের অংশ দেড়শ মিটারের মতো সমতল রয়েছে। এই হালোটের দু’পাশ দিয়ে গড়ে ওঠে ৭/৮টি বসত বাড়ি। নতুন বসতিরা খানা-খন্দে ভরা সেই সরকারি হালটের খাদের পাড় দিয়েই পায়ে হেঁটে কোন রকমে যাতায়াত করে আসছে বেশ কয়েক বছর ধরে। শুকনো মৌসুমে শিশুদের স্কুলে আর বড়দের মসজিদে, হাট-বাজারে ও মাঠের ফসল তুলে আসা-যাওয়ায় বেশ সমস্যা হয়, আর বৃষ্টির মৌসুমে তো দুর্ভোগের অন্ত নেই।

 দীর্ঘদিনের অবহেলিত ওই হালটটি মাটি ভরাট করে চলাচলের উপযোগী রাস্তা নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন জনের কাছে ধরনা ধরে আসছিল তারা। কিন্তু লাভ হয়নি।  গত মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকালের দিকে সবুজ মন্ডলের বাড়ি হতে আধ্যাত্মিক বরইতলা পর্যন্ত প্রায় ২০০ মিটার রাস্তা  মাটি ভরাট করে তারা নিজেরাই নির্মাণ করছেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে,  লক্ষধিক টাকা ব্যয়ে নতুন এই রাস্তা নির্মাণে একটি ভেকু মেশিন দিয়ে হালটের এক পাশ থেকে মাটি উত্তোলন করে আরেক পাশে ফেলে ৭/৮ ফুট প্রশস্ত রাস্তা তৈরি করছেন। নতুন এই রাস্তা নির্মাণে পরিশ্রমী উদ্যোগকারীদের এলাকার সবাই সহায়তা করেছেন এবং নতুন বসতীরা কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

মোঃ হান্নান খান, সবুজ মন্ডল, সালাম শেখ, শামিম সেখ, আপন মোল্লা, মোঃ মিলন, আঃ কুদ্দুস, আঃ আজিজ, জোসনা বেগম, সবুজ মিয়া সহ ৯/১০টি বসত বাড়ির লোকজনের সাথে এ প্রতিবেদকের কথা হয়।

রোকনুজ্জামান খান বলেন, বাড়ি থেকে পাকা রাস্তায় উঠতে আমাদের খুব কষ্ট হয়, আর বৃষ্টির মৌসুমে তো কাদা পানির ভিতরে চলাচল করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এলাকাবাসীর থেকে টাকা তুলে ভেকু এনে গত ২ দিন ধরে হালোটের উপর দিয়ে মাটি ভরাট করে রাস্তা তৈরি হচ্ছে, মাটির রাস্তাটি হলে তবুও কোনো রকম চলাফেরা করতে পারবো, পরে সরকার পাকা করে দিলে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।

রহমত মোল্লা বলেন, বাড়ি করার জন্য একটু জমি কিনেছি রাস্তা না থাকায় ভয়ে বাড়ি করছিনা, আজ যখন রাস্তা হয়েছে এখন দ্রুতই বাড়ি করব। তিনি আরও বলেন, এখানে এসে জানতে পারলাম, এলাকা সবাই মিলে টাকা দিয়ে রাস্তা বানিয়েছেন, ভাবছি আমিও এর অংশীদার হব। যারা উদ্যোগ নিয়ে এই রাস্তা তৈরি করেছেন, আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 সবুজ খান বলেন, এলাকাবাসীর উপকারার্থে নিজেদের টাকা দিয়ে  আমরা কাজ করেছি। সরকারের কাছে অনুরোধ রাখি বাকিটুকু সরকার করে দিলে আমরা  এলাকাবাসী বেশ উপকৃত হবো।

মোঃ হান্নান খান বলেন, এখানে দীর্ঘদিন যাবৎ কোন রাস্তা ছিল না, রিক্সা- ভ্যান তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে যাতায়াতে খুবই কষ্ট হচ্ছিল, ব্যক্তি উদ্যোগে সবাই মিলে আজকে রাস্তাটি করার চেষ্টা করছে, রাস্তাটি হওয়াতে আমরা এলাকাবাসী উপকৃত হয়েছি। সরকারি উদ্যোগে রাস্তাটি পাঁকা হলে জনগণ আরো বেশি উপকৃত হবে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

এলাকাবাসীর উদ্যোগে হচ্ছে রাস্তা নির্মাণ

প্রকাশের সময় : ০৯:০০:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪

নিজেরা স্বেচ্ছাশ্রমে ও চাঁদা তুলে সরকারি হালটের উপর মাটি ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করছেন রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নে আলাদিপুর গ্রামের মাঝার পাড়া মাঠের মধ্যে গড়ে ওঠা নতুন বসতী পরিবারের লোকজন।

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়; আলীপুর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান বাড়ির পিছন দিয়ে ইট বিছানো রাস্তার শেষে মোঃ সবুজ মন্ডলের বাড়ি হতে আধ্যাত্মিক বরইতলা ও মোঃ হান্নান খানের বাড়ির পাশ দিয়ে মহাসড়ক পর্যন্ত আলীপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডস্থ ইন্দ্রনারায়নপুর মৌজা ও ৫ নং ওয়ার্ডস্থ আলাদিপুর মৌজার সীমানা বরাবর একটি সরকারি হালট রয়েছে। সেই হালোটের পূর্ব ও দক্ষিণ দিকের দুই মাথায় রয়েছে বৃহৎ আকারের দু’টি খাদ। এবং মাঝের অংশ দেড়শ মিটারের মতো সমতল রয়েছে। এই হালোটের দু’পাশ দিয়ে গড়ে ওঠে ৭/৮টি বসত বাড়ি। নতুন বসতিরা খানা-খন্দে ভরা সেই সরকারি হালটের খাদের পাড় দিয়েই পায়ে হেঁটে কোন রকমে যাতায়াত করে আসছে বেশ কয়েক বছর ধরে। শুকনো মৌসুমে শিশুদের স্কুলে আর বড়দের মসজিদে, হাট-বাজারে ও মাঠের ফসল তুলে আসা-যাওয়ায় বেশ সমস্যা হয়, আর বৃষ্টির মৌসুমে তো দুর্ভোগের অন্ত নেই।

 দীর্ঘদিনের অবহেলিত ওই হালটটি মাটি ভরাট করে চলাচলের উপযোগী রাস্তা নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন জনের কাছে ধরনা ধরে আসছিল তারা। কিন্তু লাভ হয়নি।  গত মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকালের দিকে সবুজ মন্ডলের বাড়ি হতে আধ্যাত্মিক বরইতলা পর্যন্ত প্রায় ২০০ মিটার রাস্তা  মাটি ভরাট করে তারা নিজেরাই নির্মাণ করছেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে,  লক্ষধিক টাকা ব্যয়ে নতুন এই রাস্তা নির্মাণে একটি ভেকু মেশিন দিয়ে হালটের এক পাশ থেকে মাটি উত্তোলন করে আরেক পাশে ফেলে ৭/৮ ফুট প্রশস্ত রাস্তা তৈরি করছেন। নতুন এই রাস্তা নির্মাণে পরিশ্রমী উদ্যোগকারীদের এলাকার সবাই সহায়তা করেছেন এবং নতুন বসতীরা কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

মোঃ হান্নান খান, সবুজ মন্ডল, সালাম শেখ, শামিম সেখ, আপন মোল্লা, মোঃ মিলন, আঃ কুদ্দুস, আঃ আজিজ, জোসনা বেগম, সবুজ মিয়া সহ ৯/১০টি বসত বাড়ির লোকজনের সাথে এ প্রতিবেদকের কথা হয়।

রোকনুজ্জামান খান বলেন, বাড়ি থেকে পাকা রাস্তায় উঠতে আমাদের খুব কষ্ট হয়, আর বৃষ্টির মৌসুমে তো কাদা পানির ভিতরে চলাচল করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এলাকাবাসীর থেকে টাকা তুলে ভেকু এনে গত ২ দিন ধরে হালোটের উপর দিয়ে মাটি ভরাট করে রাস্তা তৈরি হচ্ছে, মাটির রাস্তাটি হলে তবুও কোনো রকম চলাফেরা করতে পারবো, পরে সরকার পাকা করে দিলে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।

রহমত মোল্লা বলেন, বাড়ি করার জন্য একটু জমি কিনেছি রাস্তা না থাকায় ভয়ে বাড়ি করছিনা, আজ যখন রাস্তা হয়েছে এখন দ্রুতই বাড়ি করব। তিনি আরও বলেন, এখানে এসে জানতে পারলাম, এলাকা সবাই মিলে টাকা দিয়ে রাস্তা বানিয়েছেন, ভাবছি আমিও এর অংশীদার হব। যারা উদ্যোগ নিয়ে এই রাস্তা তৈরি করেছেন, আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 সবুজ খান বলেন, এলাকাবাসীর উপকারার্থে নিজেদের টাকা দিয়ে  আমরা কাজ করেছি। সরকারের কাছে অনুরোধ রাখি বাকিটুকু সরকার করে দিলে আমরা  এলাকাবাসী বেশ উপকৃত হবো।

মোঃ হান্নান খান বলেন, এখানে দীর্ঘদিন যাবৎ কোন রাস্তা ছিল না, রিক্সা- ভ্যান তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে যাতায়াতে খুবই কষ্ট হচ্ছিল, ব্যক্তি উদ্যোগে সবাই মিলে আজকে রাস্তাটি করার চেষ্টা করছে, রাস্তাটি হওয়াতে আমরা এলাকাবাসী উপকৃত হয়েছি। সরকারি উদ্যোগে রাস্তাটি পাঁকা হলে জনগণ আরো বেশি উপকৃত হবে।