Dhaka ০৪:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নদীভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধান দাবিতে মহিলা পরিষদের স্মারকলিপি

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৮:১৬:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অগাস্ট ২০২১
  • / ১১৯৪ জন সংবাদটি পড়েছেন

জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ীতে নদী ভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধান দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ রাজবাড়ী জেলা শাখা। সংগঠনের সভাপতি লাইলী নাহার ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ডা. পূর্ণিমা দত্ত স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি যে, পদ্মার ভাঙনে রাজবাড়ী জেলা ইতিমধ্যেই অস্তিত্বের প্রশ্নে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। এই ভাঙন প্রক্রিয়া আজকের নয়। বারবার রাজবাড়ী বন্যাকবলিত জেলা হিসেবে বহু দুর্ভোগের শিকার হয়েছে। ৮৭-৮৮ এর বন্যার পর থেকে শহর রক্ষ বাঁধ রাজবাড়ী শহরকে রক্ষা করছে। কিন্তু বিগত ৩০ বছরে নদী ভাঙন, নদীর আকৃতি ও স্থানকে পরিবর্তন করেই চলেছে। নদী তীরবর্তী স্থাপনা, কৃষিজমি এবং গৃহাদি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। বালিয়াকান্দি উপজেলার গড়াই নদীর ভাঙনের তীব্রতাও সাংবাৎসরিকভাবে একই দুর্ভোগ বয়ে আনছে।

২০০৮ সন থেকে নাগরিক সমাজের অংশ হিসেবে আমরা বিষয়টি নানা পর্যায়ে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ২০১৬ তে পদ্মা ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড তৎপর হয়। চলতি বছর ভাঙন প্রতিরোধে গৃহীত প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। দু’মাস যেতে না যেতেই আবার রাজবাড়ী শহর সন্নিকট এলাকা সমূহ আর গোয়ালন্দ উপজেলা ভয়ংকর ভাঙনের শিকার হয়েছে। এই অবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ২০১৬র ডিজাইন অনুযায়ী কাজ হয়েছে। ইতিমধ্যে নদীর গতি-প্রকৃতি ও জলবায়ুর নানা পরিবর্তন হয়েছে। নদী পাড়ের অভিজ্ঞ সাধারন মানুষ এবং বিভিন্ন মহল থেকে কাজ সম্পর্কে নানা প্রশ্ন তোলা হয়েছে। কয়েকশত কোটি টাকা এই প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে। যা এদেশের সাধারন মানুষের খেটে খাওয়া অর্জন থেকে আহরিত।

রাজবাড়ী শহর রক্ষরার জন্য দীর্ঘকাল অপরিকল্পিত ও অবৈধ বালু উত্তোলন, বালু চাতাল, বালু বার্জ চলাচল আদৌ কার্যকরীভাবে কখনো বন্ধ করা হয়নি। পদ্মা ভাঙন এবং রাজবাড়ী পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে যা প্রতিনিয়ত অন্যতম হুমকি  বলে রাজবাড়ীবাসী মনে করে।

নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ে শিক্ষক ও গবেষণাকারীগণের নিকট হতে রাজবাড়ী রক্ষায় নদীর গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে পরামর্শ বা প্রতিবেদন নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড এই সদ্য সমাপ্ত প্রকল্পের কাজ করেছে কী না? বছর বছর নদীর পরবর্তিত অবস্থায় ২০১৬ সালের ডিজাইন অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন কীভাবে সম্ভব হলো?

পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এই কাজ রাজবাড়ী জেলার পক্ষ হতে আদৌ কোন তদারকি কমিটির মাধ্যমে সন্তোষজনক মর্মে প্রত্যয়ন করা হয়েছে কী না?

আমরা বিশ্বাস করি, যেদেশে পদ্মা শাসন করে পদ্মা ব্রিজ প্রায় সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে, সেদেশে পদ্মা গড়াইয়ের ছোবল থেকে রাজবাড়ী রক্ষা কঠিন নয়। কিন্তু কয়েকশত কোটি টাকা নদীতে ঢালার পর আবার যখন প্রকল্প হাতে নেওয়ার প্রশ্ন আসে, আবার যখন কোটি কোটি টাকা স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রয়োজন মর্মে প্রশ্ন আসে তখন আমাদের সাধারন মানুষের দুশ্চিন্তা থেকেই যায়।

যেসব কারণ ইতিমধ্যে চিহ্নিত হয়েছে সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা গ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের প্রণোদনা প্রদান ও পূণর্বাসন এবং স্থায়ীভাবে রাজবাড়ী জেলাকে নদীভাঙন হতে রক্ষার জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের আমরা দাবি জানাই।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

নদীভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধান দাবিতে মহিলা পরিষদের স্মারকলিপি

প্রকাশের সময় : ০৮:১৬:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অগাস্ট ২০২১

জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ীতে নদী ভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধান দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ রাজবাড়ী জেলা শাখা। সংগঠনের সভাপতি লাইলী নাহার ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ডা. পূর্ণিমা দত্ত স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি যে, পদ্মার ভাঙনে রাজবাড়ী জেলা ইতিমধ্যেই অস্তিত্বের প্রশ্নে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। এই ভাঙন প্রক্রিয়া আজকের নয়। বারবার রাজবাড়ী বন্যাকবলিত জেলা হিসেবে বহু দুর্ভোগের শিকার হয়েছে। ৮৭-৮৮ এর বন্যার পর থেকে শহর রক্ষ বাঁধ রাজবাড়ী শহরকে রক্ষা করছে। কিন্তু বিগত ৩০ বছরে নদী ভাঙন, নদীর আকৃতি ও স্থানকে পরিবর্তন করেই চলেছে। নদী তীরবর্তী স্থাপনা, কৃষিজমি এবং গৃহাদি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। বালিয়াকান্দি উপজেলার গড়াই নদীর ভাঙনের তীব্রতাও সাংবাৎসরিকভাবে একই দুর্ভোগ বয়ে আনছে।

২০০৮ সন থেকে নাগরিক সমাজের অংশ হিসেবে আমরা বিষয়টি নানা পর্যায়ে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ২০১৬ তে পদ্মা ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড তৎপর হয়। চলতি বছর ভাঙন প্রতিরোধে গৃহীত প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। দু’মাস যেতে না যেতেই আবার রাজবাড়ী শহর সন্নিকট এলাকা সমূহ আর গোয়ালন্দ উপজেলা ভয়ংকর ভাঙনের শিকার হয়েছে। এই অবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ২০১৬র ডিজাইন অনুযায়ী কাজ হয়েছে। ইতিমধ্যে নদীর গতি-প্রকৃতি ও জলবায়ুর নানা পরিবর্তন হয়েছে। নদী পাড়ের অভিজ্ঞ সাধারন মানুষ এবং বিভিন্ন মহল থেকে কাজ সম্পর্কে নানা প্রশ্ন তোলা হয়েছে। কয়েকশত কোটি টাকা এই প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে। যা এদেশের সাধারন মানুষের খেটে খাওয়া অর্জন থেকে আহরিত।

রাজবাড়ী শহর রক্ষরার জন্য দীর্ঘকাল অপরিকল্পিত ও অবৈধ বালু উত্তোলন, বালু চাতাল, বালু বার্জ চলাচল আদৌ কার্যকরীভাবে কখনো বন্ধ করা হয়নি। পদ্মা ভাঙন এবং রাজবাড়ী পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে যা প্রতিনিয়ত অন্যতম হুমকি  বলে রাজবাড়ীবাসী মনে করে।

নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ে শিক্ষক ও গবেষণাকারীগণের নিকট হতে রাজবাড়ী রক্ষায় নদীর গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে পরামর্শ বা প্রতিবেদন নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড এই সদ্য সমাপ্ত প্রকল্পের কাজ করেছে কী না? বছর বছর নদীর পরবর্তিত অবস্থায় ২০১৬ সালের ডিজাইন অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন কীভাবে সম্ভব হলো?

পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এই কাজ রাজবাড়ী জেলার পক্ষ হতে আদৌ কোন তদারকি কমিটির মাধ্যমে সন্তোষজনক মর্মে প্রত্যয়ন করা হয়েছে কী না?

আমরা বিশ্বাস করি, যেদেশে পদ্মা শাসন করে পদ্মা ব্রিজ প্রায় সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে, সেদেশে পদ্মা গড়াইয়ের ছোবল থেকে রাজবাড়ী রক্ষা কঠিন নয়। কিন্তু কয়েকশত কোটি টাকা নদীতে ঢালার পর আবার যখন প্রকল্প হাতে নেওয়ার প্রশ্ন আসে, আবার যখন কোটি কোটি টাকা স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রয়োজন মর্মে প্রশ্ন আসে তখন আমাদের সাধারন মানুষের দুশ্চিন্তা থেকেই যায়।

যেসব কারণ ইতিমধ্যে চিহ্নিত হয়েছে সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা গ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের প্রণোদনা প্রদান ও পূণর্বাসন এবং স্থায়ীভাবে রাজবাড়ী জেলাকে নদীভাঙন হতে রক্ষার জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের আমরা দাবি জানাই।