Dhaka ১০:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাসপাতালে স্ত্রীর লাশ ফেলে চম্পট, যৌতুক না দেওয়ায় হত্যার অভিযোগ মায়ের

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৫৯:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মে ২০২১
  • / ১৪৩১ জন সংবাদটি পড়েছেন

জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গৃহবধূ শামসুন্নাহার বীথির (১৯) লাশ ফেলে পালিয়েছে স্বামী সজিব মিয়া। বীথির মা শারমীন বেগমের দাবি  যৌতুক না দেওয়ায় তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বীথি রাজবাড়ী সদর উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের শহীদ শেখের মেয়ে। ফরিদপুর পলিটেকনিক কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন তিনি। অভিযুক্ত সজীব একই ইউনিয়নের ব্রাহ্মণদিয়া গ্রামের ওমর আলীর ছেলে।

বীথির মা শারমীন বেগম জানান, বীথি আমার একমাত্র মেয়ে। এক বছর আগে সজীব আমার মেয়েকে জোর করে বিয়ে করে। কিন্তু আমার মেয়েকে আমাদের বাড়িতে আসতে দিতনা। সজীবের বাড়ি থেকে বলতো; তাদের দাবি দাওয়া মেটালেই বাপের বাড়ি যেতে দিবে। কিন্তু আমরা গরীব মানুষ। ওদের চাহিদা মেটানোর মত টাকা আমাদের নেই। এভাবেই এক বছর কেটে যায়। কিছুদিন ধরে জামাতা সজীব  আমার কাছে দামি মোবাইল ফোন দাবি করে। লকডাউনে আমার স্বামী কাজ করতে পারছে না। আমাদের নিজেদেরই সংসার চলেনা। এ অবস্থায় দামি ফোন কীভাবে কিনে দেব। গত চারদিন ধরে মেয়েটার সাথে আমাকে ফোনেও কথা বলতে দেয়নি ওরা। সোমবার দুপুরের পর হাসপাতাল থেকে আমাকে ফোন দিয়ে বলে; আপনার মেয়ে মারা গেছে। হাসপাতালে এসে ওদের কাউকেই পাওয়া যায়নি। পুরো একটা দিন চলে গেল এখন পর্যন্ত মেয়ের শ^শুরবাড়ির কেউ লাশ দেখতে পর্যন্ত আসেনি। ওরাই আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে। আমি এ হত্যার বিচার চাই।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমি অনেক কষ্ট করে আমার মেয়েকে পলিটেকনিক কলেজে পড়াতাম। ওরা কোনো টাকা পয়সা দিত না। আমার স্বপ্ন ছিল মেয়ে পাশ করে নিজের পায়ে দাঁড়াবে। আমার সব স্বপ্ন ভেঙে গেল।

বীথির চাচা শাজাহান শেখ জানান, বীথির শরীরে আঘাতের চিহ্ন। তাকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে ওরা।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত স্টাফ ব্রাদার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বীথিকে মৃত অবস্থায় তার স্বামী নিয়ে আসে। হাসপাতালে রেখেই সে চলে যায়। তারপর আর তাকে পাওয়া যায়নি।

অভিযুক্ত  সজীবের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

রাজবাড়ী সদর থানার ওসি  (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে নিহত বীথির লাশ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এব্যাপারে আপাততঃ একটি ইউডি মামলা হয়েছে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

হাসপাতালে স্ত্রীর লাশ ফেলে চম্পট, যৌতুক না দেওয়ায় হত্যার অভিযোগ মায়ের

প্রকাশের সময় : ০৮:৫৯:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মে ২০২১

জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গৃহবধূ শামসুন্নাহার বীথির (১৯) লাশ ফেলে পালিয়েছে স্বামী সজিব মিয়া। বীথির মা শারমীন বেগমের দাবি  যৌতুক না দেওয়ায় তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বীথি রাজবাড়ী সদর উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের শহীদ শেখের মেয়ে। ফরিদপুর পলিটেকনিক কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন তিনি। অভিযুক্ত সজীব একই ইউনিয়নের ব্রাহ্মণদিয়া গ্রামের ওমর আলীর ছেলে।

বীথির মা শারমীন বেগম জানান, বীথি আমার একমাত্র মেয়ে। এক বছর আগে সজীব আমার মেয়েকে জোর করে বিয়ে করে। কিন্তু আমার মেয়েকে আমাদের বাড়িতে আসতে দিতনা। সজীবের বাড়ি থেকে বলতো; তাদের দাবি দাওয়া মেটালেই বাপের বাড়ি যেতে দিবে। কিন্তু আমরা গরীব মানুষ। ওদের চাহিদা মেটানোর মত টাকা আমাদের নেই। এভাবেই এক বছর কেটে যায়। কিছুদিন ধরে জামাতা সজীব  আমার কাছে দামি মোবাইল ফোন দাবি করে। লকডাউনে আমার স্বামী কাজ করতে পারছে না। আমাদের নিজেদেরই সংসার চলেনা। এ অবস্থায় দামি ফোন কীভাবে কিনে দেব। গত চারদিন ধরে মেয়েটার সাথে আমাকে ফোনেও কথা বলতে দেয়নি ওরা। সোমবার দুপুরের পর হাসপাতাল থেকে আমাকে ফোন দিয়ে বলে; আপনার মেয়ে মারা গেছে। হাসপাতালে এসে ওদের কাউকেই পাওয়া যায়নি। পুরো একটা দিন চলে গেল এখন পর্যন্ত মেয়ের শ^শুরবাড়ির কেউ লাশ দেখতে পর্যন্ত আসেনি। ওরাই আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে। আমি এ হত্যার বিচার চাই।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমি অনেক কষ্ট করে আমার মেয়েকে পলিটেকনিক কলেজে পড়াতাম। ওরা কোনো টাকা পয়সা দিত না। আমার স্বপ্ন ছিল মেয়ে পাশ করে নিজের পায়ে দাঁড়াবে। আমার সব স্বপ্ন ভেঙে গেল।

বীথির চাচা শাজাহান শেখ জানান, বীথির শরীরে আঘাতের চিহ্ন। তাকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে ওরা।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত স্টাফ ব্রাদার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বীথিকে মৃত অবস্থায় তার স্বামী নিয়ে আসে। হাসপাতালে রেখেই সে চলে যায়। তারপর আর তাকে পাওয়া যায়নি।

অভিযুক্ত  সজীবের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

রাজবাড়ী সদর থানার ওসি  (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে নিহত বীথির লাশ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এব্যাপারে আপাততঃ একটি ইউডি মামলা হয়েছে।