মহান মে দিবস, ২০১৮ উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের বাণী
- প্রকাশের সময় : ০১:২৩:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ মে ২০১৮
- / ১৫০৫ জন সংবাদটি পড়েছেন
মহান মে দিবস শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে এক অনন্য গৌরবময় দিন। কর্মঘন্টা নির্ধারণসহ শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ১৮৮৬ সালের পহেলা মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর হে মার্কেটে এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শ্রমিক সংগঠনের যে বিজয় সূচিত হয়েছিল তারই ধারাবাহিকতায় শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ে বিশ্বব্যাপী যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
এ বারের মহান মে দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে –
‘‘ শ্রমিক-মালিক ভাই ভাই
সোনার বাংলা গড়তে চাই’’।
মহান মে দিবস বিশ্বের শ্রমজীবি মানুষের অধিকার আদায়ের দিন। ১৮৮৬ সালের এই দিনে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায় করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর হে মার্কেটে যে বীর শ্রমিকেরা জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন তাঁদের স¥ৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আমি শ্রদ্ধার সাথে স¥রণ করছি বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে যাঁরা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন তাঁদেরকে। এ দেশের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের সংগে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নাম ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে। তিনি শ্রমজীবী মানুষকে ভালবাসতেন, শ্রদ্ধা করতেন। মহান মে দিবসে আমি তাঁর স¥ৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আমাদের জাতির পিতা ছিলেন শোষিত, মেহনতি মানুষের বন্ধু। তিনি আজীবন বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি বলেছিলেন, বিশ্ব আজ দু‘ভাগে বিভক্ত, একদিকে শোষক, আরেকদিকে শোষিত- আমি শোষিতের পক্ষে।
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অঙ্গীকার ছিল শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের জন্য শোষণমুক্ত, মর্যাদাসম্পন্ন ও সামাজিক ন্যায়বিচার ভিত্তিক একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলা। সে লক্ষ্যে বর্তমান সরকার শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় শ্রম আইন সংশোধন, যুগোপযোগী শ্রম বিধিমালা প্রণয়ন, শ্রমিক কল্যাণ ফাঊন্ডেশন গঠন করেছে। এছাড়া তাঁদের অধিকার ও জীবনমান উন্নয়ন, ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, নিরাপদ কর্মপরিবেশ, শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তুলতে শিল্পোদ্যোক্তা, মালিক ও শ্রমিকের সমি¥লিত প্রয়াস একান্তভাবে কাম্য। সকল পক্ষের ইতিবাচক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ অংশগ্রহণের মাধ্যমে শ্রম ক্ষেত্রে সামগ্রিক উন্নয়ন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়ের আলোকে শ্রমিক-মালিক সমি¥লিতভাবে সোনার বাংলা গড়ে তুলতে কাজ করুক এটাই কামনা করছি।
বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে রূপকল্প-২০২১ ও রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের এ রূপকল্প বাস্তবায়নে শ্রমিক-মালিকের বিদ্যমান আন্তরিক সম্পর্ক অব্যাহত রেখে নতুন শিল্প স্থাপন ও আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সার্থক ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। মহান মে দিবসের সাথে শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের অধিকার, স¦ার্থ ও কল্যাণ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শ্রমিকদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ ও স¦াস্থ্যসম¥ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে সকলে এগিয়ে আসবেন, মহান মে দিবসে এ প্রত্যাশা করি।
মহান মে দিবসে সকল শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষকে জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। মেহনতি মানুষের জয় হোক-মহান মে দিবসে এ কামনা করছি।
( মোঃ শওকত আলী )
জেলা প্রশাসক
রাজবাড়ী।