রাজবাড়ীর পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বাঁশের বেড়া দিয়ে চলছে মাছ শিকার
- প্রকাশের সময় : ০৯:১৬:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ মে ২০১৭
- / ১৮২৭ জন সংবাদটি পড়েছেন
স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের উড়াকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে পদ্মা নদীতে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে আড়াআড়িভাবে বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। অনেকদিন ধরেই এভাবে তারা করছে মাছ শিকার। কর্তৃপক্ষ বলছে, খুব শীগগীরই এব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পদ্মা নদী বিধৌত রাজবাড়ী জেলা। নদী তীরবর্তী মানুষদের বেশিরভাগই মাছ শিকার করেই জীবীকা নির্বাহ করে থাকে। স্থানীয়রা জানান, প্রভাবশালীরা তাদের ক্ষমতার দাপটে ও মৎস্য কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশ করে নদীতে আড়াআড়িভাবে বাঁেশর বেড়া দিয়ে অনেক দিন ধরেই মাছ শিকার করে আসছে। মাঝে মধ্যেই প্রভাবশালীরা এভাবে নদীতে অবৈধ বাধ দিয়ে মাছ শিকার করে। মৎস্য কর্মকর্তাদের জানালে তারা এসে ভেঙে দেন। কিন্তু বাধের মালিকদের কখনও শাস্তি দেননা। তারা ধরাও পড়েনা। যেকারণে তারা বাধ দিতে আরও উৎসাহী হয়ে ওঠে।
মৎস্য সংরক্ষণ আইনে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে; নদী বা জলাধারের প্রবাহ ব্যাহত করে কোনো মাছ ধরা যাবে না। অথচ ওইসব প্রভাবশালীরা আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাছ শিকার করছে।
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উড়াকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছেই পদ্মা নদী তীর থেকে মাঝখান পর্যন্ত আড়াআড়িভাবে কয়েক হাজার বাঁশ পুঁতে বেড়া দেয়া হয়েছে। এসব বেড়ার সাথে বেড়জাল, গুটিজাল, ফাঁসজাল, কারেন্টজাল ও কাঁথাজাল পাতা রয়েছে। যে কোনো মাছ এ পথ দিয়ে যাবার সময় জালে ধরা পড়বেই। একই সাথে ব্যাহত হচ্ছে নৌযান চলাচলও। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বরাট ইউনিয়নের উড়াকান্দা এলাকার জনৈক আজিবর এই বাঁশের বেড়া দিয়েছে অনেকদিন আগেই। মাঝখানে ঝড়ে এই বেড়া ভেঙে গিয়েছিল। পরে আবার দিয়েছে। প্রতিদিন দুবার তারা এই জাল থেকে মাছ সংগ্রহ করে। লোকচক্ষুর আড়ালে গভীর রাতে ও ভোরে তারা তিন থেকে চারটি নৌকা নিয়ে এসে জালে ধরা পড়া মাছ নিয়ে বাজারে বিক্রি করে। সাধারণতঃ এসব জালে ছোট বড় ইলিশ, পাঙ্গাসসহ নানা জাতের মাছ ধরা পড়ে। সচেতন এলাকাবাসী অবিলম্বে অবৈধ এই বাধ অপসারণের দাবি জানিয়েছে।
স্থানীয় জেলে আব্বাছ, লালু, নবীউদ্দিন সহ কয়েকজন জানান, অনেকদিন ধরে এ বেড়া দেখছেন। তবে কে বা কারা দিয়েছে তা বলতে তারা অপারগতা প্রকাশ করেন। রাতের আঁধারে কে বা কারা এসে জালের মধ্যে আটকা পড়া মাছ নিয়ে চলে যায়। মাঝে মধ্যে প্রশাসনের লোকজন এসে দেখে আবার চলে যায় বলে অভিযোগ করেন তারা।
রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মজিনুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, ইতিপূর্বে রাজবাড়ীর পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থানে এমন অবৈধ বাঁশের বেড়া অপসারণ করা হয়েছে। এই বাধটির কথাও সম্প্রতি জেনেছি। খুব তাড়াতাড়িই এটি অপসারণ করা হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে জানান, বেড়া অপসারণের পর বাঁশগুলো টুকরো টুকরো করে নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়। ওই সময় বাধের মালিককে না পাওয়া গেলে তাকে শাস্তি দেয়া যায়না। তাই এসব ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে জরিমানা বা শাস্তি দেয়া যায়নি। প্রভাবশালীদের সাথে যোগসাজশের কথা তিনি অস্বীকার করেন।