নিষেধ মানছে না জেলেরা\ অবাধে ইলিশ শিকার
- প্রকাশের সময় : ০৫:০৫:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪
- / ১০৩৫ জন সংবাদটি পড়েছেন
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বিধি নিষেধ অমান্য করে পদ্মা নদীতে শত শত জেলে ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে রাত দিন ইলিশ শিকার করে চলেছে। মৎস্য অফিসের কর্মকর্তাদের তৎপরতা তেমন দেখা যাচ্ছে না। জেলেরা পদ্মা নদীতে অবাধে শিকার করছে ইলিশ। পদ্মার বাঁকে বাঁকে হাট বসিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে ইলিশ। সরেজমিন ঘুরে পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের অন্তারমোড় থেকে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের কলাবাগান ও উজানচর ইউনিয়নের চর করনেশন পর্যন্ত নদীর সব জায়গায় শতশত মৌসুমী জেলেকে ইঞ্জিন চালিত ট্রলার নিয়ে অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে ইলিশ শিকার করতে দেখা যায়। তবে এসময় বেশকিছু প্রকৃত জেলেকে নদীর পাড়ে তাঁবু টাঙ্গিয়ে জাল মেরামত করতে দেখা যায়। প্রকৃত জেলেদের অলস সময় কাটাতে দেখা যায়। জাল মেরামতকালে এরশাদ বিশ্বাস, করম আলী বিশ্বাস, মো.সবুর শেখসহ একাধিক জেলে আক্ষেপ করে বলেন, আমরা জালদরি নৌকা নিয়ে বসে আছি। অথচ সৌখিন জেলেরা রাতদিন ইলিশ ধরে হাজার হাজার টাকা বিক্রি করছে। পুলিশ তাদের কখনও আটক করতে আসে না। দৌলতদিয়া ঘাট নৌ-ফাঁড়ি পুলিশ ও গোয়ালন্দ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় প্রয়োজনীয় নৌযান ও পর্যাপ্ত অর্থনৈতিক বাজেট না থাকায় ইলিশ রক্ষা অভিযান পুরাপুরি সফল করা সম্ভব হচ্ছে না। জেলেদের শক্তিশালী ইঞ্জিনচালিত ট্রলারের সাথে আমার প্রশাসনের দুর্বল বোর্ড কুলিয়ে উঠতে না পারায় সকল জেলেদের আটক করা সম্ভব হয় না। তবে ইতি মধ্যে আমরা বেশ কিছু কারেন্ট জাল জব্দ করে পুড়িয়ে দিয়েছি। নদীতে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, ছোটভাকলার অন্তার মোড়, দেবগ্রামের কাওজানি, মুন্সী পাড়া, দৌলতদিয়ার বেপারী পাড়া, বাহের চর দৌলতদিয়া, কলাবাগান, করনেশোনা সহ পদ্মার পাড়ে প্রতিনিয়ত ইলিশ বেচা-কেনা হচ্ছে। প্রতি কেজি ইলিশ ৩শ থেকে ১৫শ টাকায়। দৌলতদিয়া ঘাটের কয়েক কিলোমিটার পূর্বে পদ্মা পাড়ের দুর্গম চড়ে জেলেদের ইলিশ বেচাকেনার অভয় কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত আড়ত রয়েছে। ওই আড়তে সব সময় শতশত কেজি ইলিশ হাজার হাজার টাকায় অবাধে বিক্রি হয়ে থাকে। এখান থেকে ব্যাপারীর পাইকারি দরে কিনে বিভিন্ন হাট বাজারে নিয়ে যায়। তবে এদের প্রতিরোধে থানা পুলিশ বা প্রশাসনের কোনো তৎপরতা নেই বললেই চলে। নৌ-পুলিশ নদীতে অভিযান চালালেও প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই কম। গত রোববার উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তারা নদীতে অভিযানে গেলে জেলেরা তাদের উপর আক্রমণ করার চেষ্টা করে। তাদের মারমুখী ভুমিকায় মৎস্য কর্মকর্তারা পিছু হঠতে বাধ্য হন। এ দিন দৌলতদিয়া ঘাট নৌপুলিশ ৪ জেলেকে আটক করে ইউএনওর কার্যালয়ে নিয়ে এলে তাদেরজেল জরিমানা করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে মাঝে মাঝে অভিযান করা হচ্ছে। নদীতে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে নৌযান সংকটে অভিযান পুরাপুরি সফল করা সম্ভব হচ্ছে না।