Dhaka ১০:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউপি সদস্যের কান্ড

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশের সময় : ০৫:৩৪:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪
  • / ১০৪০ জন সংবাদটি পড়েছেন

 রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য হারুন অর রশীদ তার সম্বন্ধী (স্ত্রীর বড় ভাই) এর মেয়েকে বিয়ে না করেই ডিভোর্স চাইছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী তরুণী পাংশা থানায় হারুনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে, হারুন অর রশীদ বলছেন, ওই মেয়ে তার বিয়ে করা স্ত্রী। তাকে ডিভোর্স না দিয়ে আরেকজনকে বিয়ে করেছে। এজন্য ডিভোর্স চাইছেন। ঘটনাটি ঘটেছে পাংশার মাছপাড়া ইউনিয়নের কানুখালী গ্রামে। হারুন ও তরুণী একই গ্রামের বাসিন্দা। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, পুলিশ হারুন অর রশীদকে আটক করে হেফাজতে নিয়েছে।

জাা গেছে, পাশাপাশি বাড়ি এবং নিকটাত্মীয় হওয়ায় তরুণীর বাড়িতে অবাধ যাতায়াত ছিল হারুনের। কিশোরী বয়সেই দুবার বিয়ে হয় মেয়েটির। নানা কারণে দুবারই বিয়ে ভেঙে যায়। সর্বশেষ গত ১০ অক্টোবর মেয়েটির আবার বিয়ে হয়। এরপরই শুরু হয় জটিলতা। হারুন অর রশীদ দাবি করেন, ওই মেয়ে তার বিয়ে করা স্ত্রী। তাকে তালাক না দিয়ে আরেকজনকে বিয়ে করতে পারেনা। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।

ওই তরুণী জানান, হারুন মেম্বার সম্পর্কে তার আপন ফুফা। ফুফার কারণে সে কোথাও সংসার করতে পারেনি। একদিন সে (হারুন) কৌশলে সাদা তিনটি স্ট্যাম্পে তার স্বাক্ষর নেয়। পরে আমার থেকে বয়সে ছোট ফুফাতো ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ে দিতে চায়। কিন্তু আমি রাজী হইনি। গত ১০ অক্টোবর বিয়ের পর আমি শ^শুর বাড়ি যাই। এরপর থেকে হারুন আমাকে ফোন করতে থাকে। সে আমাকে বলে, তুই আমার বিয়ে করা বউ। একথা শুনে আমি চমকে উঠি। গত ১৮ অক্টোবর শুক্রবার তার স্বামীর সাথে বাড়িতে এলে স্বামীকে আটকে রেখে ৯৫ হাজার টাকা আদায় করে। যে সাদা স্ট্যাম্পে হারুন স্বাক্ষর নিয়েছিল সেই স্ট্যাম্প দেখিয়ে আমাকে বিয়ে করা বউ বলে দাবি করছে এবং নতুন স্বামীর সাথে সংসার করতে হলে ডিভোর্স দেওয়ার কথা বলছে। তরুণী বলেন, যাকে বিয়েই করিনি তাকে ডিভোর্স দিতে হবে কেন?

গত রোববার সন্ধ্যার দিকে মোবাইল ফোনে কথা হয় অভিযুক্ত হারুন অর রশীদের সঙ্গে। তিনি বলেন, মেয়েটির দুটি বিয়ে হয়। মেয়ের মা অর্থলোভী। দুই জায়গা থেকে টাকা পয়সা নিয়ে ভেঙে দেয় বিয়ে। পরে আমাকে জালে ফাঁসিয়ে দেয়। আমি ইউপি সদস্য হওয়ায় বিষয়টা গোপন রাখি। গত ১০ অক্টোবর ওই মেয়েকে আবার বিয়ে দেয়। আমি বলেছি, গোপনে বিয়ে হয়েছে গোপনেই আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দাও। কিন্তু ডিভোর্স না দিয়ে উল্টো আমার বিরুদ্ধেই থানায় অভিযোগ দেয়।

এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ২০২২ সালের মে মাসে আমাদের বিয়ে হয় আদালতে। মেয়ের মা শুধু বিষয়টা জানে। বিয়ের পর মেয়ে বাবার বাড়িই থাকতো। আপনি যখন বিয়ে করেন তখন মেয়ের বয়স ছিল ১৬ বছর। অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক একটি মেয়েকে কেন বিয়ে করলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, তার আগে মেয়েটির দুবার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নিয়েছিলেন? প্রশ্নে বলেন, না নেওয়া হয়নি। আমি বিয়ে করতে চাইনি। ওরা ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসিয়েছে। যেকারণে বাধ্য হয়েছি। মেয়ের বর্তমান স্বামীর কাছ থেকে ৯৫ হাজার টাকা ্আদায় প্রসঙ্গে বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। আমি এখন মুক্তি চাই।

এবিষয়ে পাংশা থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন জানান, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোনো ব্যক্তি তার স্ত্রীর বড় ভাইয়ের মেয়েকে বিয়ে করতে পারেনা। মেয়েটি তার স্বামীর সাথে সংসার করবে এতে কোনো বাধা নেই। অভিযুক্ত হারুন অর রশীদকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

ইউপি সদস্যের কান্ড

প্রকাশের সময় : ০৫:৩৪:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

 রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য হারুন অর রশীদ তার সম্বন্ধী (স্ত্রীর বড় ভাই) এর মেয়েকে বিয়ে না করেই ডিভোর্স চাইছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী তরুণী পাংশা থানায় হারুনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে, হারুন অর রশীদ বলছেন, ওই মেয়ে তার বিয়ে করা স্ত্রী। তাকে ডিভোর্স না দিয়ে আরেকজনকে বিয়ে করেছে। এজন্য ডিভোর্স চাইছেন। ঘটনাটি ঘটেছে পাংশার মাছপাড়া ইউনিয়নের কানুখালী গ্রামে। হারুন ও তরুণী একই গ্রামের বাসিন্দা। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, পুলিশ হারুন অর রশীদকে আটক করে হেফাজতে নিয়েছে।

জাা গেছে, পাশাপাশি বাড়ি এবং নিকটাত্মীয় হওয়ায় তরুণীর বাড়িতে অবাধ যাতায়াত ছিল হারুনের। কিশোরী বয়সেই দুবার বিয়ে হয় মেয়েটির। নানা কারণে দুবারই বিয়ে ভেঙে যায়। সর্বশেষ গত ১০ অক্টোবর মেয়েটির আবার বিয়ে হয়। এরপরই শুরু হয় জটিলতা। হারুন অর রশীদ দাবি করেন, ওই মেয়ে তার বিয়ে করা স্ত্রী। তাকে তালাক না দিয়ে আরেকজনকে বিয়ে করতে পারেনা। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।

ওই তরুণী জানান, হারুন মেম্বার সম্পর্কে তার আপন ফুফা। ফুফার কারণে সে কোথাও সংসার করতে পারেনি। একদিন সে (হারুন) কৌশলে সাদা তিনটি স্ট্যাম্পে তার স্বাক্ষর নেয়। পরে আমার থেকে বয়সে ছোট ফুফাতো ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ে দিতে চায়। কিন্তু আমি রাজী হইনি। গত ১০ অক্টোবর বিয়ের পর আমি শ^শুর বাড়ি যাই। এরপর থেকে হারুন আমাকে ফোন করতে থাকে। সে আমাকে বলে, তুই আমার বিয়ে করা বউ। একথা শুনে আমি চমকে উঠি। গত ১৮ অক্টোবর শুক্রবার তার স্বামীর সাথে বাড়িতে এলে স্বামীকে আটকে রেখে ৯৫ হাজার টাকা আদায় করে। যে সাদা স্ট্যাম্পে হারুন স্বাক্ষর নিয়েছিল সেই স্ট্যাম্প দেখিয়ে আমাকে বিয়ে করা বউ বলে দাবি করছে এবং নতুন স্বামীর সাথে সংসার করতে হলে ডিভোর্স দেওয়ার কথা বলছে। তরুণী বলেন, যাকে বিয়েই করিনি তাকে ডিভোর্স দিতে হবে কেন?

গত রোববার সন্ধ্যার দিকে মোবাইল ফোনে কথা হয় অভিযুক্ত হারুন অর রশীদের সঙ্গে। তিনি বলেন, মেয়েটির দুটি বিয়ে হয়। মেয়ের মা অর্থলোভী। দুই জায়গা থেকে টাকা পয়সা নিয়ে ভেঙে দেয় বিয়ে। পরে আমাকে জালে ফাঁসিয়ে দেয়। আমি ইউপি সদস্য হওয়ায় বিষয়টা গোপন রাখি। গত ১০ অক্টোবর ওই মেয়েকে আবার বিয়ে দেয়। আমি বলেছি, গোপনে বিয়ে হয়েছে গোপনেই আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দাও। কিন্তু ডিভোর্স না দিয়ে উল্টো আমার বিরুদ্ধেই থানায় অভিযোগ দেয়।

এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ২০২২ সালের মে মাসে আমাদের বিয়ে হয় আদালতে। মেয়ের মা শুধু বিষয়টা জানে। বিয়ের পর মেয়ে বাবার বাড়িই থাকতো। আপনি যখন বিয়ে করেন তখন মেয়ের বয়স ছিল ১৬ বছর। অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক একটি মেয়েকে কেন বিয়ে করলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, তার আগে মেয়েটির দুবার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নিয়েছিলেন? প্রশ্নে বলেন, না নেওয়া হয়নি। আমি বিয়ে করতে চাইনি। ওরা ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসিয়েছে। যেকারণে বাধ্য হয়েছি। মেয়ের বর্তমান স্বামীর কাছ থেকে ৯৫ হাজার টাকা ্আদায় প্রসঙ্গে বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। আমি এখন মুক্তি চাই।

এবিষয়ে পাংশা থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন জানান, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোনো ব্যক্তি তার স্ত্রীর বড় ভাইয়ের মেয়েকে বিয়ে করতে পারেনা। মেয়েটি তার স্বামীর সাথে সংসার করবে এতে কোনো বাধা নেই। অভিযুক্ত হারুন অর রশীদকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে।