আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী
প্রতিবন্ধী ছেলের কর্মকান্ডে ছিলেন অতিষ্ঠ । কনে দেখানোর কথা বলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন বাবা
- প্রকাশের সময় : ০৮:৪২:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ১১৩৩ জন সংবাদটি পড়েছেন
মানসিক প্রতিবন্ধী যুবক রুবেল মন্ডল ওরফে মোয়ার (২৬) কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে তাকে শ^াসরোধে হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেছেন বাবা খলিলুর রহমান। রোববার বিকেলে রাজবাড়ীর আদালতে তিনি ১৬৪ ধারা জবানবন্দী দিয়েছেন। এর আগে ঢাকার আশুলিয়া থানার ডেন্ডাবর এলাকা হতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা।
কালুখালী থানা সূত্র জানায়, গত ২৪ আগস্ট তারিখে কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অদূরে একটি ডোবা থেকে রুবেল মন্ডল ওরফে মোয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত রুবেলের মামা দেলোয়ার হোসেন ২৫ আগস্ট তারিখে কালুখালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কালুখালী থানার ওসি প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ^াস জানান, থানায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ নিবিড়ভাবে তদন্তকাজ শুরু করে। ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন রুবেলের বাবা খলিলুর রহমান। এতে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হয়। তদন্তের একপর্যায়ে জানা যায়, রুবেলের বাবাই তাকে হত্যা করেছে। গত রোববার খলিলুর রহমানের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর ঢাকার আশুলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। এরপর আদালতে সে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয়।
আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তীতে খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, রুবেল ছিল তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান। রুবেলের জন্মের পরই দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেন। এরপর রুবেলকে ফেলে সে(রুবেলের মা) চলে যায়। রুবেল বড় হয় পাশেই তার মামার বাড়িতে। রুবেল মানসিক প্রতিবন্ধী হলেও ছিল দুষ্ট প্রকৃতির। গ্রামের মেয়েদের সে নানাভাবে উত্যক্ত করতো। এমনকি গরু-ছাগলের সাথে সে যৌনাচার করতো। গ্রামের মানুষ এসব নিয়ে তাকে মাঝে মধ্যেই কট‚ কথা শোনাতো। এছাড়া তার সম্পত্তির বড় অংশীদারও সে। গ্রামের মানুষের কট‚ কথা শুনতে শুনতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। এসব কারণে রুবেলকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। বাজার থেকে তিনি কয়েকটি ঘুমের ওষুধ কিনে রেখেছিলেন। গত ২৩ আগস্ট বিকেলে বাড়ির অনতিদূরে রুবেলকে দেখতে পান। রুবেল বিয়ের কথা শুনলে খুবই খুশী হতো। তিনি রুবেলকে গিয়ে বলেন, তোর জন্য মেয়ে দেখতে যাবো। এখানে দাঁড়িয়ে থাক, আমি বাড়ি থেকে রেডি হয়ে আসি। রুবেলকে দাঁড় করিয়ে রেখে পাশের একটি দোকানে গিয়ে একটি সেভেন আপ এবং কয়েকটি বিস্কুট কেনেন। সন্ধ্যায় ফিরে এসে দেখেন রুবেল সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে। রুবেলকে সাথে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ধানক্ষেতের পাশে ডোবার দিকে যান। সেখানে রুবেলকে ঘুমের ওষুধ মেশানো সেভেন আপ খাওয়ান। কিছুক্ষণ পর রুবেল নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাকে শ^াসরোধে হত্যা করে লাশটি ডোবায় ফেলে দেন। এরপর বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু বাড়ি যাওয়ার পর তার প্রথম স্ত্রী তাকে বলেন, রুবেল তার সাথে ছিল একজন তা দেখে ফেলেছে। একথা শুনে তিনি ভয় পেয়ে পালিয়ে যান।