Dhaka ০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরিপারের অপেক্ষায় কয়েক’শ গাড়ি

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৩১:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ অক্টোবর ২০১৮
  • / ১৫৪১ জন সংবাদটি পড়েছেন

জনতার আদালত অনলাইন ॥ ব্যাস্ততম দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে প্রকট নাব্যতা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি চ্যানেলের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে অনেক ডুবোচর। এতে চলাচলকারি ফেরিগুলো নির্দিষ্ট চ্যানেল ছেড়ে এক-দুই কিলোমিটার উজানপথ ঘুরে ধীর গতিতে চলাচল করছে। এতে সময় বেশি লেগে যাওয়ায় সেখানে ফেরির ট্রিপসংখ্যা অনেকটা কমে গেছে। ফলে নৌপথ পাড়ি দিতে ঘাটে আসা বিভিন্ন গাড়ির চাপ বেড়ে সেখানে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল শনিবার দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরির টিকিটসিরিয়ালে আটকা পড়ে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ কয়েক শ বিভিন্ন গাড়ি।
বিআইডাব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট অফিস সূত্রে জানা যায়, পদ্মা ও যমুনা নদীর সঙ্গমস্থল রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়ায়। প্রতি বছরের ন্যায় এবারের বর্ষায় নদীতে ¯্রােতের তীব্রতা বেশি ছিল। তখন উজান থেকে ¯্রােতে ভেসে আসা পলিবালু জমে গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ার নৌ চ্যানেল অনেকটা ভরাট ও সরু হয়ে গেছে। পাশাপাশি চ্যানেলের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে অনেক ডুবোচর। এদিকে নদীর পানি অনেকটা কমে যাওয়ার কারণে বর্তমান এই নৌপথে প্রকট নাব্যতা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি চ্যানেলের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে অনেক ডুবোচর। এ অবস্থায় চলাচলকারি ফেরিগুলো নির্দিষ্ট চ্যানেল ছেড়ে এক-দুই কিলোমিটার উজানপথ ঘুরে ধীর গতিতে চলাচল করছে। এতে সময় অনেক বেশি লাগায় সেখানে ফেরির ট্রিপসংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক কমে গেছে। ফলে নৌপথ পাড়ি দিতে ঘাটে আসা বিভিন্ন গাড়ির চাপ বেড়ে সেখানে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে চলাচলকারি এক রো রো (বড়) ফেরির মাস্টার (চালক) নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘পূর্ণ লোড নিয়ে বড় ফেরি চলাচলের জন্য কমপক্ষে ৯ ফিট পানির গভীরতা প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমান এই নৌপথের বিভিন্ন পয়েন্টে পানির গভীরতা রয়েছে মাত্র ৭ থেকে সাড়ে ৭ ফিট। প্রয়োজনীয় পানির গভীরতা না থাকায় সেখানে বালুর ঘর্ষণে চলাচলকারি বিভিন্ন ফেরির তলদেশসহ গুরুত্বপূর্ণ ‘প্রপেলার’ ও ‘বুশ’ ক্ষয় হয়ে ফেরিগুলোর মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।’ এদিকে দৌলতদিয়া ঘাট সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রকট নাব্যতা সংকটের কারণে বেশ কিছুদিন যাবত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে স্বাভাবিক ফেরিপারাপার ব্যাহত হচ্ছে। গতকাল শনিবার দৌলতদিয়া ঘাটে আটকা পড়ে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ কয়েক’শ বিভিন্ন গাড়ি। এর মধ্যে যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সেখানে ফেরিপারের অপেক্ষায় টিকিটসিরিয়ালে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে থাকায় বিভিন্ন বাসের সাধারণ যাত্রী, বিশেষ করে নারী ও শিশুরা এসময় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহান।
বিআইডাব্লিউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগের উপসহকারি প্রকৌশলী মাসুদ হোসেন বলেন, ‘নদীতে পানি কমে যাওয়ায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে নাব্যতা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে দৌলতদিয়া প্রান্তে অবস্থিত বিভিন্ন ফেরিঘাটের বেসিন চ্যানেলে নাব্যতা সংকট সবচেয়ে বেশি।’ তবে গুরুত্বপূর্ণ ওই নৌপথে সৃষ্ট নাব্যতা সংকট মোকাবেলায় সেখানে বিআইডাব্লিউটিএ’র নিজস্ব পাঁচটি ড্রেজার-১৩৯, ড্রেজার-১৩৮, গোমতি ও বিষখালীসহ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভাড়ায় চালিত আরো দুটি মিলে মোট সাতটি ড্রেজার দিয়ে সেখানে দিন-রাত খননকাজ চালানো হচ্ছে বলে তিনি জানান।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরিপারের অপেক্ষায় কয়েক’শ গাড়ি

প্রকাশের সময় : ০৭:৩১:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ অক্টোবর ২০১৮

জনতার আদালত অনলাইন ॥ ব্যাস্ততম দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে প্রকট নাব্যতা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি চ্যানেলের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে অনেক ডুবোচর। এতে চলাচলকারি ফেরিগুলো নির্দিষ্ট চ্যানেল ছেড়ে এক-দুই কিলোমিটার উজানপথ ঘুরে ধীর গতিতে চলাচল করছে। এতে সময় বেশি লেগে যাওয়ায় সেখানে ফেরির ট্রিপসংখ্যা অনেকটা কমে গেছে। ফলে নৌপথ পাড়ি দিতে ঘাটে আসা বিভিন্ন গাড়ির চাপ বেড়ে সেখানে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল শনিবার দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরির টিকিটসিরিয়ালে আটকা পড়ে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ কয়েক শ বিভিন্ন গাড়ি।
বিআইডাব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট অফিস সূত্রে জানা যায়, পদ্মা ও যমুনা নদীর সঙ্গমস্থল রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়ায়। প্রতি বছরের ন্যায় এবারের বর্ষায় নদীতে ¯্রােতের তীব্রতা বেশি ছিল। তখন উজান থেকে ¯্রােতে ভেসে আসা পলিবালু জমে গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ার নৌ চ্যানেল অনেকটা ভরাট ও সরু হয়ে গেছে। পাশাপাশি চ্যানেলের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে অনেক ডুবোচর। এদিকে নদীর পানি অনেকটা কমে যাওয়ার কারণে বর্তমান এই নৌপথে প্রকট নাব্যতা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি চ্যানেলের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে অনেক ডুবোচর। এ অবস্থায় চলাচলকারি ফেরিগুলো নির্দিষ্ট চ্যানেল ছেড়ে এক-দুই কিলোমিটার উজানপথ ঘুরে ধীর গতিতে চলাচল করছে। এতে সময় অনেক বেশি লাগায় সেখানে ফেরির ট্রিপসংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক কমে গেছে। ফলে নৌপথ পাড়ি দিতে ঘাটে আসা বিভিন্ন গাড়ির চাপ বেড়ে সেখানে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে চলাচলকারি এক রো রো (বড়) ফেরির মাস্টার (চালক) নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘পূর্ণ লোড নিয়ে বড় ফেরি চলাচলের জন্য কমপক্ষে ৯ ফিট পানির গভীরতা প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমান এই নৌপথের বিভিন্ন পয়েন্টে পানির গভীরতা রয়েছে মাত্র ৭ থেকে সাড়ে ৭ ফিট। প্রয়োজনীয় পানির গভীরতা না থাকায় সেখানে বালুর ঘর্ষণে চলাচলকারি বিভিন্ন ফেরির তলদেশসহ গুরুত্বপূর্ণ ‘প্রপেলার’ ও ‘বুশ’ ক্ষয় হয়ে ফেরিগুলোর মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।’ এদিকে দৌলতদিয়া ঘাট সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রকট নাব্যতা সংকটের কারণে বেশ কিছুদিন যাবত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে স্বাভাবিক ফেরিপারাপার ব্যাহত হচ্ছে। গতকাল শনিবার দৌলতদিয়া ঘাটে আটকা পড়ে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ কয়েক’শ বিভিন্ন গাড়ি। এর মধ্যে যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সেখানে ফেরিপারের অপেক্ষায় টিকিটসিরিয়ালে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে থাকায় বিভিন্ন বাসের সাধারণ যাত্রী, বিশেষ করে নারী ও শিশুরা এসময় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহান।
বিআইডাব্লিউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগের উপসহকারি প্রকৌশলী মাসুদ হোসেন বলেন, ‘নদীতে পানি কমে যাওয়ায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে নাব্যতা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে দৌলতদিয়া প্রান্তে অবস্থিত বিভিন্ন ফেরিঘাটের বেসিন চ্যানেলে নাব্যতা সংকট সবচেয়ে বেশি।’ তবে গুরুত্বপূর্ণ ওই নৌপথে সৃষ্ট নাব্যতা সংকট মোকাবেলায় সেখানে বিআইডাব্লিউটিএ’র নিজস্ব পাঁচটি ড্রেজার-১৩৯, ড্রেজার-১৩৮, গোমতি ও বিষখালীসহ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভাড়ায় চালিত আরো দুটি মিলে মোট সাতটি ড্রেজার দিয়ে সেখানে দিন-রাত খননকাজ চালানো হচ্ছে বলে তিনি জানান।