Dhaka ০৩:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীতে ছড়িয়ে পড়ছে ডায়রিয়া ॥ ওষুধ ও স্যালাইন সংকট

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ১১:৩৫:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৮
  • / ১৬৬৪ জন সংবাদটি পড়েছেন

জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ীতে ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়া। জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসছে রোগীরা। হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। দেখা দিয়েছে ওষুধ ও স্যালাইনের সংকট। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে এমনটা হয়েছে। তবে ডায়রিয়া এখনও নিয়ন্ত্রণেই আছে।
বুধবার দুপুর ১২টার দিকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়ার যে ওয়ার্ড রয়েছে সেটিতে শয্যা মাত্র ছয়টি। শয্যাতে জায়গা থাকার প্রশ্নই আসেনা। সেখানে রোগীরা মেঝেতে ঠাই নিয়েছেন। হাসপাতালের ওপরতলার একটি কক্ষ ডায়রিয়া রোগীদের জন্য ছেড়ে দেয়া হয়েছে। নীচতলার পুরো মেঝেতেই রয়েছেন ডায়রিয়া রোগীরা। এসব রোগীদের মধ্যে শিশু, নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ, বৃদ্ধা সব বয়সী মানুষই আছেন। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কর্তব্যরত স্টাফ নার্স মর্জিনা খাতুন জানালেন, তাদের এই ওয়ার্ডে চার জন ডিউটি করেন। গত ২২ এপ্রিল থেকে রোগী আসতে শুরু করেছে ব্যাপক হারে। এজন্য অন্য বিভাগ থেকে আরও কয়েকজন নার্সকে ডিউটির জন্য আনা হয়েছে। তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন রোগীদের সেবা দেয়ার। তিনি জানান, বুধবার ভোর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছে।
হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীর স্বজন আলামিন, হাবিবুর সহ অনেকেই জানালেন, ডাক্তাররা ঠিকমতো আসছেন না। তবে নার্সরা মাঝে মধ্যে এসে চিকিৎসা দিচ্ছেন। ওষুধপত্র বেশিরভাগই কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালেল তত্ত্বাবধায়ক ডা. স্বপন কুমার কুন্ডু বলেন, গত তিন চার দিন ধরে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা খুব বেশি। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগী রাখা যায় মাত্র আট থেকে ১০ জন। বিভিন্ন জায়গায় রেখে তাদের সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। চিকিৎসক ও নার্সরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন সেবা দেয়ার জন্য। আমাদের স্যালাইনের সংকট রয়েছে। আমরা ঢাকায় যোগাযোগ করেছি খুব তাড়াতাড়িই সংকট দূর হয়ে যাবে। রোগী যাতে ভালো সেবা পায় সেজন্য আমাদের চেষ্টা আছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. রহিম বক্স বলেন, হঠাৎ করেই জেলার বিভিন্ন উপজেলাগুলোতে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। এটি শুধু একটি এলাকায় নয়। সব এলাকা থেকেই রোগী আসছে। আমরা মাঠকর্মীদের বলেছি, তারা যেন বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনগণকে স্বাস্থ্য সচেতন করে তোলে এবং ডায়রিয়া প্রতিরোধে সাবধনতা অবলম্বন করে। মানুষ যাতে বাশি, পচা খাবার না খায়, বিশুদ্ধ পানি পান করে সেজন্য মাঠকর্মীদের বলা হয়েছে। তবে ডায়রিয়া এখনও আমাদের নিয়ন্ত্রণেই আছে।
এদিকে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা এলাকায়ও ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর চাপ। বালিয়াকান্দি হাসপাতালের আরএমও ডা. ফারুক হোসেন জানান, গত দুইদিনে দুই শতাধিক ডায়রিয়া রোগীকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। সাধারণতঃ শিশু ও বৃদ্ধরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। প্রচন্ড তাপদাহের কারণে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান তিনি।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

রাজবাড়ীতে ছড়িয়ে পড়ছে ডায়রিয়া ॥ ওষুধ ও স্যালাইন সংকট

প্রকাশের সময় : ১১:৩৫:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৮

জনতার আদালত অনলাইন ॥ রাজবাড়ীতে ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়া। জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসছে রোগীরা। হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। দেখা দিয়েছে ওষুধ ও স্যালাইনের সংকট। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে এমনটা হয়েছে। তবে ডায়রিয়া এখনও নিয়ন্ত্রণেই আছে।
বুধবার দুপুর ১২টার দিকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়ার যে ওয়ার্ড রয়েছে সেটিতে শয্যা মাত্র ছয়টি। শয্যাতে জায়গা থাকার প্রশ্নই আসেনা। সেখানে রোগীরা মেঝেতে ঠাই নিয়েছেন। হাসপাতালের ওপরতলার একটি কক্ষ ডায়রিয়া রোগীদের জন্য ছেড়ে দেয়া হয়েছে। নীচতলার পুরো মেঝেতেই রয়েছেন ডায়রিয়া রোগীরা। এসব রোগীদের মধ্যে শিশু, নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ, বৃদ্ধা সব বয়সী মানুষই আছেন। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কর্তব্যরত স্টাফ নার্স মর্জিনা খাতুন জানালেন, তাদের এই ওয়ার্ডে চার জন ডিউটি করেন। গত ২২ এপ্রিল থেকে রোগী আসতে শুরু করেছে ব্যাপক হারে। এজন্য অন্য বিভাগ থেকে আরও কয়েকজন নার্সকে ডিউটির জন্য আনা হয়েছে। তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন রোগীদের সেবা দেয়ার। তিনি জানান, বুধবার ভোর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছে।
হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীর স্বজন আলামিন, হাবিবুর সহ অনেকেই জানালেন, ডাক্তাররা ঠিকমতো আসছেন না। তবে নার্সরা মাঝে মধ্যে এসে চিকিৎসা দিচ্ছেন। ওষুধপত্র বেশিরভাগই কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালেল তত্ত্বাবধায়ক ডা. স্বপন কুমার কুন্ডু বলেন, গত তিন চার দিন ধরে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা খুব বেশি। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগী রাখা যায় মাত্র আট থেকে ১০ জন। বিভিন্ন জায়গায় রেখে তাদের সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। চিকিৎসক ও নার্সরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন সেবা দেয়ার জন্য। আমাদের স্যালাইনের সংকট রয়েছে। আমরা ঢাকায় যোগাযোগ করেছি খুব তাড়াতাড়িই সংকট দূর হয়ে যাবে। রোগী যাতে ভালো সেবা পায় সেজন্য আমাদের চেষ্টা আছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. রহিম বক্স বলেন, হঠাৎ করেই জেলার বিভিন্ন উপজেলাগুলোতে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। এটি শুধু একটি এলাকায় নয়। সব এলাকা থেকেই রোগী আসছে। আমরা মাঠকর্মীদের বলেছি, তারা যেন বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনগণকে স্বাস্থ্য সচেতন করে তোলে এবং ডায়রিয়া প্রতিরোধে সাবধনতা অবলম্বন করে। মানুষ যাতে বাশি, পচা খাবার না খায়, বিশুদ্ধ পানি পান করে সেজন্য মাঠকর্মীদের বলা হয়েছে। তবে ডায়রিয়া এখনও আমাদের নিয়ন্ত্রণেই আছে।
এদিকে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা এলাকায়ও ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর চাপ। বালিয়াকান্দি হাসপাতালের আরএমও ডা. ফারুক হোসেন জানান, গত দুইদিনে দুই শতাধিক ডায়রিয়া রোগীকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। সাধারণতঃ শিশু ও বৃদ্ধরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। প্রচন্ড তাপদাহের কারণে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান তিনি।