Dhaka ০৬:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজয়ের ৪৫ বছর উপলক্ষে রাজবাড়ীতে ৪৫ ফুট ক্যানভাস রং তুলির আঁচড়ে ফুটে উঠলো ইতিহাস ঐতিহ্য

সংবাদদাতা-
  • প্রকাশের সময় : ০৯:১০:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
  • / ১৫৩৩ জন সংবাদটি পড়েছেন

সৌমিত্র শীল চন্দন ॥ অনন্য, অসাধারণ শিল্পকর্ম। ৪৫ ফুট একটি ক্যানভাসে যেখানে ফুটে উঠেছে রাজবাড়ী জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, কারুশিল্পসহ অনেক কিছুই। শিল্পকর্মটি বাস্তবায়নে এককভাবে কারো কৃতিত্ব নেই। কয়েকজন শিশুÑকিশোর মিলে সম্পন্ন করেছে এটি। তবে এর মূল কৃতিত্বের দাবিদার একুশে পদক প্রাপ্ত চিত্রশিল্পী রাজবাড়ীর কৃতি সন্তান মনসুর উল করিম। যিনি বুনন শিল্প পরিসর এর প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার।
বিজয়ের ৪৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজবাড়ীর আযাদী ময়দান ও ঈদগাহ ময়দানে এ ক্যানভাসে চিত্রাংকন করে শহরের ১৮ জন শিশুÑকিশোর। বাংলাদেশে এ ধরনের চিত্রকর্ম এটিই প্রথম বলে দাবি করলেন আয়োজকরা।
৪৫ ফুট ক্যানভাসে চিত্রাংকনের এ কর্মসূচীর স্লোগান ছিল ‘বিজয় দেখেনি তারা, স্বাধীন ভূমিতে বাড়ে, ত্যাগীদের কথা করিতে স্মরণ, শ্রদ্ধায় তুলি ধরে’। প্রথম দিনে চিত্র শিল্পী মনসুর উল করিম খুদে আঁকিয়েদের বুঝিয়ে দেন ক্যানভাস সম্পর্কে। কী আঁকতে হবে, কীভাবে  আর কেন আঁকতে হবে। রাজবাড়ীর ইতিহাস, ঐতিহ্য সম্পর্কেও দেন কিছু ধারণা। শেষ দিনে খুদে চিত্রশিল্পীরা সম্পন্ন করে ক্যানভাসটি। যেখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরনো ভবন, পাল তোলা নৌকা, বিভিন্ন প্রকার মাছ, গাঁয়ের নানান রকম দৃশ্য। ক্যানভাসে ছিল বিভিন্ন চারু ও কারুশিল্পের ছবিও। এমন সব ছবি এঁেক খুশী খুদে শিল্পীরা। জানালো, রাজবাড়ী জেলার ইতিহাস ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে পেরে সত্যিই খুব ভালো লাগছে। এমন কাজের অংশীদার হতে পেরে সত্যিই আনন্দিত।
ব্যতিক্রমী এ আয়োজন দেখতে  গিয়ে দর্শণার্থীরা জানালো সৃজনশীলতা আর শিল্পবোধ মানুষের সাধারণ প্রবৃত্তিকে আরও বাড়িয়ে তোলে। এমন উদ্যোগ বাংলাদেশের অন্যান্য জেলাগুলোতেও হওয়া উচিৎ।
আয়োজকরা জানালেন, নতুন প্রজন্মকে হারানো ঐতিহ্য সম্পর্কে অবগত করিয়ে যাতে করে তারা আমাদের ইতিহাস সম্পর্কে সম্যক একটি ধারণা পায়। এটি তারই একটি উদ্যোগ।
এ আয়োজনের প্রধান উদ্যেক্তা চিত্রশিল্পী অধ্যাপক মনসুর উল করিম বলেন, আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি ৪৫ বছর। এটাকে উপলক্ষ্য করেই ৪৫ ফুট ক্যানভাসে ছবি আঁকার আয়োজন। রাজবাড়ী জেলার যেসব ঐতিহ্যশালী ক্ষেত্র বা জায়গা আছে যা আমাদের নতুন প্রজন্ম কিছুই জানেনা। এ বিষয়গুলোই ক্যানভাসে চিত্রাংকনের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। যেমন, রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়টি অনেক পুরনো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এবিদ্যালয়টির ঐতিহ্য আছে, আমাদের গর্বও প্রতিষ্ঠানটি। এটি ক্যানভাসে তুলে আনা হয়েছে। পদ্মা নদীর পাল তোলা নৌকা সম্পর্কেও অনেকে জানে না। নতুন প্রজন্ম এটি দেখেইনি। পাল তোলা নৌকা সহ অনেক ঐতিহ্য এবং ইতিহাস তুলে আনা হয়েছে ক্যানভাসে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য নতুন প্রজন্মকে জাগানো এবং জানানো।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

বিজয়ের ৪৫ বছর উপলক্ষে রাজবাড়ীতে ৪৫ ফুট ক্যানভাস রং তুলির আঁচড়ে ফুটে উঠলো ইতিহাস ঐতিহ্য

প্রকাশের সময় : ০৯:১০:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৭

সৌমিত্র শীল চন্দন ॥ অনন্য, অসাধারণ শিল্পকর্ম। ৪৫ ফুট একটি ক্যানভাসে যেখানে ফুটে উঠেছে রাজবাড়ী জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, কারুশিল্পসহ অনেক কিছুই। শিল্পকর্মটি বাস্তবায়নে এককভাবে কারো কৃতিত্ব নেই। কয়েকজন শিশুÑকিশোর মিলে সম্পন্ন করেছে এটি। তবে এর মূল কৃতিত্বের দাবিদার একুশে পদক প্রাপ্ত চিত্রশিল্পী রাজবাড়ীর কৃতি সন্তান মনসুর উল করিম। যিনি বুনন শিল্প পরিসর এর প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার।
বিজয়ের ৪৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজবাড়ীর আযাদী ময়দান ও ঈদগাহ ময়দানে এ ক্যানভাসে চিত্রাংকন করে শহরের ১৮ জন শিশুÑকিশোর। বাংলাদেশে এ ধরনের চিত্রকর্ম এটিই প্রথম বলে দাবি করলেন আয়োজকরা।
৪৫ ফুট ক্যানভাসে চিত্রাংকনের এ কর্মসূচীর স্লোগান ছিল ‘বিজয় দেখেনি তারা, স্বাধীন ভূমিতে বাড়ে, ত্যাগীদের কথা করিতে স্মরণ, শ্রদ্ধায় তুলি ধরে’। প্রথম দিনে চিত্র শিল্পী মনসুর উল করিম খুদে আঁকিয়েদের বুঝিয়ে দেন ক্যানভাস সম্পর্কে। কী আঁকতে হবে, কীভাবে  আর কেন আঁকতে হবে। রাজবাড়ীর ইতিহাস, ঐতিহ্য সম্পর্কেও দেন কিছু ধারণা। শেষ দিনে খুদে চিত্রশিল্পীরা সম্পন্ন করে ক্যানভাসটি। যেখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরনো ভবন, পাল তোলা নৌকা, বিভিন্ন প্রকার মাছ, গাঁয়ের নানান রকম দৃশ্য। ক্যানভাসে ছিল বিভিন্ন চারু ও কারুশিল্পের ছবিও। এমন সব ছবি এঁেক খুশী খুদে শিল্পীরা। জানালো, রাজবাড়ী জেলার ইতিহাস ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে পেরে সত্যিই খুব ভালো লাগছে। এমন কাজের অংশীদার হতে পেরে সত্যিই আনন্দিত।
ব্যতিক্রমী এ আয়োজন দেখতে  গিয়ে দর্শণার্থীরা জানালো সৃজনশীলতা আর শিল্পবোধ মানুষের সাধারণ প্রবৃত্তিকে আরও বাড়িয়ে তোলে। এমন উদ্যোগ বাংলাদেশের অন্যান্য জেলাগুলোতেও হওয়া উচিৎ।
আয়োজকরা জানালেন, নতুন প্রজন্মকে হারানো ঐতিহ্য সম্পর্কে অবগত করিয়ে যাতে করে তারা আমাদের ইতিহাস সম্পর্কে সম্যক একটি ধারণা পায়। এটি তারই একটি উদ্যোগ।
এ আয়োজনের প্রধান উদ্যেক্তা চিত্রশিল্পী অধ্যাপক মনসুর উল করিম বলেন, আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি ৪৫ বছর। এটাকে উপলক্ষ্য করেই ৪৫ ফুট ক্যানভাসে ছবি আঁকার আয়োজন। রাজবাড়ী জেলার যেসব ঐতিহ্যশালী ক্ষেত্র বা জায়গা আছে যা আমাদের নতুন প্রজন্ম কিছুই জানেনা। এ বিষয়গুলোই ক্যানভাসে চিত্রাংকনের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। যেমন, রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়টি অনেক পুরনো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এবিদ্যালয়টির ঐতিহ্য আছে, আমাদের গর্বও প্রতিষ্ঠানটি। এটি ক্যানভাসে তুলে আনা হয়েছে। পদ্মা নদীর পাল তোলা নৌকা সম্পর্কেও অনেকে জানে না। নতুন প্রজন্ম এটি দেখেইনি। পাল তোলা নৌকা সহ অনেক ঐতিহ্য এবং ইতিহাস তুলে আনা হয়েছে ক্যানভাসে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য নতুন প্রজন্মকে জাগানো এবং জানানো।