মুড়ি বিক্রেতা থেকে ৭০০ কোটি টাকার মালিক ‘সোনা চোরাচালানি’ আবু

- প্রকাশের সময় : ০১:৩৫:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / 15
বিদেশে পালিয়ে যেতে বিমানবন্দরে গিয়েও শেষ রক্ষা হলো না। অবশেষে দেশের সোনা চোরাকারবারিদের গডফাদার হিসেবে পরিচিত আবু আহমেদকে গ্রেফতার করেছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) আরব আমিরাতে পালিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনি গ্রেফতার হন। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) তাকে চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানায় আনা হয়।
ডবলমুরিং মডেল থানার ওসি কাজী রফিক আহমেদ জানান, ইমিগ্রেশন পুলিশের সহায়তায় আবুকে বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতারের পর চট্টগ্রামে আনা হয়। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ২২ সেপ্টেম্বর দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলার আসামি। সোমবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালত থেকে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আবু আহমেদের বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে। ১৯৯১ সালে শ্রমিক ভিসা নিয়ে দুবাই যান তিনি। বিদেশ যাওয়ার আগে দেশে মুড়ি বিক্রি করলেও সেখানে গিয়ে বনে যান সোনা চোরাচালানি ও হুন্ডি কারবারি।
সোনা চোরাচালানের হোতা হিসেবে আবুর নাম প্রথম আলোচনায় আসে ২০১৪ সালে। ওই বছর ঢাকায় চোরাচালানের সোনা উদ্ধারের পরপর তিনটি ঘটনায় দৃশ্যপটে চলে আসেন আবু। এর মধ্যে ১০৫ কেজি ওজনের সোনার প্রথম চালানটি ধরা পড়ে রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। পরে একই বিমানবন্দরে ৫২৫টি সোনার বারসহ ধরা পড়ে বিপুল পরিমাণ সৌদি মুদ্রার অপর একটি চালান। ৬১ কেজি সোনাসহ আরেকটি চালান ধরা পড়ে ঢাকার নয়াপল্টন থেকে। এসব ঘটনায় ঢাকা বিমানবন্দর থানা ও পল্টন থানায় আবুর বিরুদ্ধে মামলা হয়।
এরপর ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারের বাহার মার্কেট থেকে বর্তমানে স্ত্রী খুনের মামলায় আলোচিত তৎকালীন নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ–পুলিশ কমিশনার বাবুল আক্তারের নেতৃত্বে উদ্ধার করা হয় তিনটি সিন্দুকভর্তি বিপুল পরিমাণ সোনা ও টাকা। এর মধ্যে একটি সিন্দুক থেকে ২৫০টি সোনার বার এবং অন্য এক সিন্দুকে পাওয়া যায় ৬০ লাখ টাকা। এ ঘটনায় আবু ও তার ম্যানেজার এনামুল হককে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। এ মামলায় গ্রেপ্তারের পাঁচ মাসের মাথায় ২০১৬ সালের আগস্টে কারাগার থেকে বেরিয়ে যান তিনি।
গত এক দশকে স্বর্ন চোরাচালান সংক্রান্ত নানা বিষয়ে তিনি আলোচনায় এসেছিলেন। তার বিরুদ্ধে অবৈধ পথে বিপুল সম্পদ অর্জনেরও অভিযোগ রয়েছে। ২০২২ সালে এক অনুসন্ধানে আবুর ৭২১ কোটি ১৭ লাখ টাকার সম্পদের খোঁজ পায় পুলিশ। এ নিয়ে কোতোয়ালি থানার মামলায় সিআইডি তদন্ত প্রতিবেদনও জমা দেয় আদালতে। এতে বলা হয়, আবু আহমেদ চট্টগ্রামে অর্থ পাচার এবং সোনা ও অন্যান্য পণ্য চোরাচালানের মাধ্যমে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন।