Dhaka ০২:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জীবনে একটাই সিরিয়াস প্রেম করেছি, তাকেই বিয়ে করেছি : বাপ্পারাজ

ডেস্ক নিউজ
  • প্রকাশের সময় : ০১:৪৬:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 66

একসময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক বাপ্পারাজ। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি সিনেমা থেকে দূরে। তবে পর্দার আড়ালে থাকলেও প্রায়ই ভাইরাল হন এ অভিনেতা। কখনো তার অভিনীত ব্যর্থ প্রেমের চরিত্রের সঙ্গে ট্যাগলাইন লাগিয়ে দেওয়া হয়।

কখনো তার অভিনীত গান-ভিডিও ভাইরাল হয়। তবে সম্প্রতি নতুন করে ভাইরাল তিনি। তার অভিনীত সিনেমার বিখ্যাত এক সংলাপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে বেশ হাস্যরস। হঠাৎ করে সবাই মজেছেন বাপ্পারাজের হেনায়।

‘চাচা হেনা কোথায়’ সংলাপে সয়লাব সোশ্যাল মিডিয়া। ছেলে থেকে বুড়ো সবাই জানতে চায়, ‘হেনা কোথায়?’ এ নিয়ে বাপ্পারাজের সঙ্গে কথা বলেছেন সুদীপ কুমার দীপ।

কেমন আছেন?

খুব ভালো আছি, আলহামদুলিল্লাহ। পরিবারের সঙ্গে দারুণ সময় কাটছে। পারিবারিক ব্যবসাটাও দেখাশোনা করছি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার ছবির একটি ক্লিপ খুব ভাইরাল, ‘চাচা, হেনা কোথায়?’ দেখেছেন নিশ্চয়ই?

হঠাৎ করে ভাইরাল হয়ে যাই, এটা আমি বিশ্বাস করি না (হা হা হা)। আসলে দু-তিন দিন ধরে দেখছি ক্লিপটা মানুষ শেয়ার করছে। কেন? একসঙ্গে এত মানুষের সম্পর্ক ভেঙে গেল নাকি! এটাও তো বিশ্বাস করি না। হেনা তো এখন নাঈমের (অভিনেতা) ঘরে আছে, সুখে আছে। আমিও পরিবার নিয়ে হাসি-ঠাট্টায় জীবন পার করছি। মানুষের হঠাৎ কী হলো!

এই দৃশ্যের শুটিংয়ের কোনো স্মৃতি মনে আছে?

দৃশ্যটির শুটিং হয়েছিল এফডিসিতে। বিশ্বাস করবেন না, দৃশ্যটির শুটিংয়ের আগে ও পরে আমরা কিন্তু খুব মজা করেছিলাম। তখন ভাবিনি যে এত দিন পরে এসে দৃশ্যটি এমন ভাইরাল হবে। দু-একটি দৃশ্য বাদে পুরো ছবির শুটিং করেছিলাম সাভারে। ‘প্রেমের সমাধি ভেঙে’ গানটির শুটিংয়ের সময় পরিচালক ইফতেখার জাহান বললেন, গড়াগড়ি খেতে হবে। বোঝেন অবস্থা! ৩০ বছর আগে গ্রামের পাশে নদী থাকলে বেশির ভাগ মানুষ তখন আর বাড়িতে টয়লেট বানাত না (হা হা হা)। আমি নির্মাতাকে বললেন, এ আপনি কী বললেন! এ আমি মানি না। এ নিয়ে অনেক হাসাহাসিও হয়েছিল। অবশ্য শেষ পর্যন্ত গড়াগড়ি দিয়েছিলাম। ওই দৃশ্যও কিন্তু ভাইরাল।

কিছুদিন পর পর তো আপনার অভিনীত বিভিন্ন দৃশ্য ভাইরাল হয়। এটাকে কিভাবে দেখেন?

আমি পজিটিভ মানুষ। দৃশ্যগুলো কিন্তু সবাই আনন্দ করেই দেখে। আমাকে অনেকে প্রেমে ছ্যাঁকা খাওয়ার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডরও মনে করে। আমি খুশি হই। যা-ই হোক, মানুষের ভালোবাসা তো পাচ্ছি। মন থেকে তো হারিয়ে যাইনি।

প্রেমে ছ্যাঁকা খাওয়ার প্রসঙ্গ উঠলেই আপনার কথা ওঠে। বাস্তবে ছ্যাঁকা খেয়েছিলেন?

না। ছ্যাঁকা দিয়েছি। জীবনে একটাই সিরিয়াস প্রেম করেছি, তাকেই বিয়ে করেছি। আমাদের প্রেমটা কিন্তু চলচ্চিত্রের চেয়ে কম কিছু নয়। আমার বউ বিয়ের জন্যই বিদেশ থেকে চলে এসেছিল। ভাবুন, সেই যুগে একটা মানুষ প্রেমিকের টানে বাংলাদেশে এসেছে, তার মানে আমার প্রেম কতটা খাঁটি। আজকাল শুনি, প্রেমের টানে চীন থেকে প্রেমিক চলে আসছে, কোরিয়া থেকে চলে আসছে। তবে এর প্রবর্তক কিন্তু আমার স্ত্রীই।

এফডিসিতে যাওয়া-আসা করেন?

কিছুদিন আগে গেলাম। মনে হলো, শূন্য-বিরানভূমি। এমন এফডিসি আগে কখনো দেখিনি। পরিচালক সমিতিতে কয়েকজন পরিচালক ছিলেন। শিল্পী সমিতিতে শুধু স্টাফরা। সাধারণ শিল্পীদের আসা-যাওয়া নেই বলেই শুনলাম।

গতকালও (শুক্রবার) একটি ছবির প্রস্তাব পেয়েছি। পাণ্ডুলিপি পড়ে দেখলাম—বেডসিন। এই বয়সে আমি কি বেডসিন করব? আরে ব্যাটা, আগে দেখে আয় আমার ছবিগুলো। আমি কি এই ধরনের একটি ছবিও করেছি? মাঝখানে ওটিটিতেও কয়েকটি প্রস্তাব পেয়েছিলাম, সেগুলোও এমন অ্যাডাল্ট। ক্যামেরার বাইরে থাকতে খুব কষ্ট হয়। সারাক্ষণই কানে বাজে, ‘লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন’। মিস করি শুটিং। তাই বলে এই ধরনের চরিত্র তো করতে পারব না। সমাজ নষ্ট করার অধিকার আমার নেই।

এখনকার ছবিগুলো দেখেন?

খুব একটা না। মাঝখানে শাকিব খানের দুটি ছবি দেখেছি, ‘তুফান’ আর ‘রাজকুমার’। ‘দরদ’ ছবিটাও কিছুটা দেখেছি। তবে নায়িকাকে আমার ভালো লাগেনি। শাকিব খুন করে আসার পর বলছে, ‘তুমি আবার খুন করেছ?’ সংলাপ ডেলিভারিটা এমন যে, ‘তুমি আবার চকোলেট খেয়েছ?’ এমন হবে কেন? নির্মাতাদের সতর্ক থাকতে হবে। কোন সংলাপটা কিভাবে আর্টিস্ট ডেলিভারি দেবে সেটাও বুঝিয়ে দিতে হবে। সোনাল চৌহান হিন্দি ছবি করেছেন। হতে পারে ভালো বাংলা জানেন না। তাঁকে তো সেটা বুঝিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নির্মাতার।

আপনাদের ‘রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন’ থেকে ছবি করার বিষয়ে কিছু ভাবছেন?

না ভাই। এখন ছবি নির্মাণ করা মানে নিজেকে অপরাধী করে তোলা। একসময় যারা আমাদের অফিসে এসে বসে থাকত, এখন তারা পরিবেশক। তাদের হাতে-পায়ে ধরে ছবি চালাতে পারব না। আমাদের মাফ করবেন। কখনো ইন্ডাস্ট্রি স্বাভাবিক হলে আবার ছবি নির্মাণ করব।

সূত্র : কালের কণ্ঠ

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

জীবনে একটাই সিরিয়াস প্রেম করেছি, তাকেই বিয়ে করেছি : বাপ্পারাজ

প্রকাশের সময় : ০১:৪৬:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

একসময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক বাপ্পারাজ। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি সিনেমা থেকে দূরে। তবে পর্দার আড়ালে থাকলেও প্রায়ই ভাইরাল হন এ অভিনেতা। কখনো তার অভিনীত ব্যর্থ প্রেমের চরিত্রের সঙ্গে ট্যাগলাইন লাগিয়ে দেওয়া হয়।

কখনো তার অভিনীত গান-ভিডিও ভাইরাল হয়। তবে সম্প্রতি নতুন করে ভাইরাল তিনি। তার অভিনীত সিনেমার বিখ্যাত এক সংলাপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে বেশ হাস্যরস। হঠাৎ করে সবাই মজেছেন বাপ্পারাজের হেনায়।

‘চাচা হেনা কোথায়’ সংলাপে সয়লাব সোশ্যাল মিডিয়া। ছেলে থেকে বুড়ো সবাই জানতে চায়, ‘হেনা কোথায়?’ এ নিয়ে বাপ্পারাজের সঙ্গে কথা বলেছেন সুদীপ কুমার দীপ।

কেমন আছেন?

খুব ভালো আছি, আলহামদুলিল্লাহ। পরিবারের সঙ্গে দারুণ সময় কাটছে। পারিবারিক ব্যবসাটাও দেখাশোনা করছি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার ছবির একটি ক্লিপ খুব ভাইরাল, ‘চাচা, হেনা কোথায়?’ দেখেছেন নিশ্চয়ই?

হঠাৎ করে ভাইরাল হয়ে যাই, এটা আমি বিশ্বাস করি না (হা হা হা)। আসলে দু-তিন দিন ধরে দেখছি ক্লিপটা মানুষ শেয়ার করছে। কেন? একসঙ্গে এত মানুষের সম্পর্ক ভেঙে গেল নাকি! এটাও তো বিশ্বাস করি না। হেনা তো এখন নাঈমের (অভিনেতা) ঘরে আছে, সুখে আছে। আমিও পরিবার নিয়ে হাসি-ঠাট্টায় জীবন পার করছি। মানুষের হঠাৎ কী হলো!

এই দৃশ্যের শুটিংয়ের কোনো স্মৃতি মনে আছে?

দৃশ্যটির শুটিং হয়েছিল এফডিসিতে। বিশ্বাস করবেন না, দৃশ্যটির শুটিংয়ের আগে ও পরে আমরা কিন্তু খুব মজা করেছিলাম। তখন ভাবিনি যে এত দিন পরে এসে দৃশ্যটি এমন ভাইরাল হবে। দু-একটি দৃশ্য বাদে পুরো ছবির শুটিং করেছিলাম সাভারে। ‘প্রেমের সমাধি ভেঙে’ গানটির শুটিংয়ের সময় পরিচালক ইফতেখার জাহান বললেন, গড়াগড়ি খেতে হবে। বোঝেন অবস্থা! ৩০ বছর আগে গ্রামের পাশে নদী থাকলে বেশির ভাগ মানুষ তখন আর বাড়িতে টয়লেট বানাত না (হা হা হা)। আমি নির্মাতাকে বললেন, এ আপনি কী বললেন! এ আমি মানি না। এ নিয়ে অনেক হাসাহাসিও হয়েছিল। অবশ্য শেষ পর্যন্ত গড়াগড়ি দিয়েছিলাম। ওই দৃশ্যও কিন্তু ভাইরাল।

কিছুদিন পর পর তো আপনার অভিনীত বিভিন্ন দৃশ্য ভাইরাল হয়। এটাকে কিভাবে দেখেন?

আমি পজিটিভ মানুষ। দৃশ্যগুলো কিন্তু সবাই আনন্দ করেই দেখে। আমাকে অনেকে প্রেমে ছ্যাঁকা খাওয়ার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডরও মনে করে। আমি খুশি হই। যা-ই হোক, মানুষের ভালোবাসা তো পাচ্ছি। মন থেকে তো হারিয়ে যাইনি।

প্রেমে ছ্যাঁকা খাওয়ার প্রসঙ্গ উঠলেই আপনার কথা ওঠে। বাস্তবে ছ্যাঁকা খেয়েছিলেন?

না। ছ্যাঁকা দিয়েছি। জীবনে একটাই সিরিয়াস প্রেম করেছি, তাকেই বিয়ে করেছি। আমাদের প্রেমটা কিন্তু চলচ্চিত্রের চেয়ে কম কিছু নয়। আমার বউ বিয়ের জন্যই বিদেশ থেকে চলে এসেছিল। ভাবুন, সেই যুগে একটা মানুষ প্রেমিকের টানে বাংলাদেশে এসেছে, তার মানে আমার প্রেম কতটা খাঁটি। আজকাল শুনি, প্রেমের টানে চীন থেকে প্রেমিক চলে আসছে, কোরিয়া থেকে চলে আসছে। তবে এর প্রবর্তক কিন্তু আমার স্ত্রীই।

এফডিসিতে যাওয়া-আসা করেন?

কিছুদিন আগে গেলাম। মনে হলো, শূন্য-বিরানভূমি। এমন এফডিসি আগে কখনো দেখিনি। পরিচালক সমিতিতে কয়েকজন পরিচালক ছিলেন। শিল্পী সমিতিতে শুধু স্টাফরা। সাধারণ শিল্পীদের আসা-যাওয়া নেই বলেই শুনলাম।

গতকালও (শুক্রবার) একটি ছবির প্রস্তাব পেয়েছি। পাণ্ডুলিপি পড়ে দেখলাম—বেডসিন। এই বয়সে আমি কি বেডসিন করব? আরে ব্যাটা, আগে দেখে আয় আমার ছবিগুলো। আমি কি এই ধরনের একটি ছবিও করেছি? মাঝখানে ওটিটিতেও কয়েকটি প্রস্তাব পেয়েছিলাম, সেগুলোও এমন অ্যাডাল্ট। ক্যামেরার বাইরে থাকতে খুব কষ্ট হয়। সারাক্ষণই কানে বাজে, ‘লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন’। মিস করি শুটিং। তাই বলে এই ধরনের চরিত্র তো করতে পারব না। সমাজ নষ্ট করার অধিকার আমার নেই।

এখনকার ছবিগুলো দেখেন?

খুব একটা না। মাঝখানে শাকিব খানের দুটি ছবি দেখেছি, ‘তুফান’ আর ‘রাজকুমার’। ‘দরদ’ ছবিটাও কিছুটা দেখেছি। তবে নায়িকাকে আমার ভালো লাগেনি। শাকিব খুন করে আসার পর বলছে, ‘তুমি আবার খুন করেছ?’ সংলাপ ডেলিভারিটা এমন যে, ‘তুমি আবার চকোলেট খেয়েছ?’ এমন হবে কেন? নির্মাতাদের সতর্ক থাকতে হবে। কোন সংলাপটা কিভাবে আর্টিস্ট ডেলিভারি দেবে সেটাও বুঝিয়ে দিতে হবে। সোনাল চৌহান হিন্দি ছবি করেছেন। হতে পারে ভালো বাংলা জানেন না। তাঁকে তো সেটা বুঝিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নির্মাতার।

আপনাদের ‘রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন’ থেকে ছবি করার বিষয়ে কিছু ভাবছেন?

না ভাই। এখন ছবি নির্মাণ করা মানে নিজেকে অপরাধী করে তোলা। একসময় যারা আমাদের অফিসে এসে বসে থাকত, এখন তারা পরিবেশক। তাদের হাতে-পায়ে ধরে ছবি চালাতে পারব না। আমাদের মাফ করবেন। কখনো ইন্ডাস্ট্রি স্বাভাবিক হলে আবার ছবি নির্মাণ করব।

সূত্র : কালের কণ্ঠ