Dhaka ০৫:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শুধু রাজস্ব আদায় করবে এনবিআর, কমানো হচ্ছে ক্ষমতা

ডেস্ক নিউজ
  • প্রকাশের সময় : ১২:১৪:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫
  • / 22

শুধু রাজস্ব আদায় করবে এনবিআর। আর নীতি কৌশল ঠিক করবে আলাদা কমিশন। এমনটাই চায় এনবিআর সংস্কার কমিটি। তাদের যুক্তি, এতে পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্তের কারণে হয়রানির হাত থেকে মুক্তি পাবেন করদাতা; বাড়বে রাজস্ব আদায়।

এতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ক্ষমতা কমছে। এটি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন ব্যবসায়ীরা। তবে দীর্ঘমেয়াদে জটিলতা তৈরির শঙ্কা অর্থনীতিবিদদের।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সরকারি ব্যয়ের সবচেয়ে বড় অংশের জোগান দেয়।

সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সরাসরি সংগ্রহ করে ভ্যাট, ট্যাক্স ও শুল্ককর। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) অধীন একটি সংস্থা এনবিআর। সংস্থাটি একই সঙ্গে রাজস্ব নীতি প্রণয়ন করে ও রাজস্ব আহরণ করে। আর আইআরডির সচিবই পালন করেন এনবিআরের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব।

তবে এনবিআর সংস্কার কমিটির সুপারিশ হলো এনবিআরের কাজ হবে শুধু রাজস্ব আদায়।

এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ও এনবিআর সংস্কার কমিটির সদস্য ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, এনবিআরের যিনি প্রধান হবেন তিনি শুধু এনবিআর নিয়েই কাজ করবেন। তিনি এসআরও জারি, অর্থ আইন তৈরি করবেন না। এসব কাজ অন্য কেউ করবেন।

অন্যদিকে, ভ্যাট, ট্যাক্স শুল্ক সংক্রান্ত নীতি গ্রহণের ক্ষমতা থাকবে রাজস্ব নীতি আলাদা বিভাগের হাতে।

এর প্রধান হবেন সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা।

পাশাপাশি এনবিআর, অর্থ, বাণিজ্য, শিল্পসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীদের সংগঠন, গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ ১৫ থেকে ১৬ সদস্যের একটি স্থায়ী উপদেষ্টা পরিষদ থাকবে। কমিশন যত নীতি গ্রহণ করবে, তা অবশ্যই ওই কমিটির মাধ্যমে অনুমোদন হতে হবে। পরে তা মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করবে এনবিআর।

মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, স্থায়ীভাবে একটি পরামর্শক কমিটি গঠন করতে হবে। যার সদস্য হবেন ১৫-১৬ জন। নীতি নির্ধারণ, অর্থ আইন সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম এই কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে করতে হবে। এতে দূরত্ব কমবে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এনবিআরের এমন বিভাজন দীর্ঘদিন ধরেই চাচ্ছেন তারা। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, এটিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে। এটি আরও আগেই হওয়া উচিত ছিল।

প্রাথমিকভাবে উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা অর্থনীতিবিদদেরও। অর্থনীতিবিদ ও শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ড. জাহিদ হোসেন বলেন, আলাদা হওয়ার বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে তেমন দ্বিমত নেই। তবে কীভাবে এটি বাস্তবায়ন করা হবে সেটি নিয়ে অনেকেরেই দ্বিমত আছে। কারণ যদি পুরো আলাদা একটি নীতি নির্ধারক কমিটি হয়, কিন্তু সেটি যদি প্রশাসনের ভিতরে থাকে তাহলে কোনো পরিবর্তন আসবে না।

এর আগে, গত অক্টোবর মাসে এনবিআরের সংস্কারে পাঁচ সদস্যের পরামর্শক কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

শুধু রাজস্ব আদায় করবে এনবিআর, কমানো হচ্ছে ক্ষমতা

প্রকাশের সময় : ১২:১৪:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫

শুধু রাজস্ব আদায় করবে এনবিআর। আর নীতি কৌশল ঠিক করবে আলাদা কমিশন। এমনটাই চায় এনবিআর সংস্কার কমিটি। তাদের যুক্তি, এতে পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্তের কারণে হয়রানির হাত থেকে মুক্তি পাবেন করদাতা; বাড়বে রাজস্ব আদায়।

এতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ক্ষমতা কমছে। এটি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন ব্যবসায়ীরা। তবে দীর্ঘমেয়াদে জটিলতা তৈরির শঙ্কা অর্থনীতিবিদদের।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সরকারি ব্যয়ের সবচেয়ে বড় অংশের জোগান দেয়।

সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সরাসরি সংগ্রহ করে ভ্যাট, ট্যাক্স ও শুল্ককর। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) অধীন একটি সংস্থা এনবিআর। সংস্থাটি একই সঙ্গে রাজস্ব নীতি প্রণয়ন করে ও রাজস্ব আহরণ করে। আর আইআরডির সচিবই পালন করেন এনবিআরের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব।

তবে এনবিআর সংস্কার কমিটির সুপারিশ হলো এনবিআরের কাজ হবে শুধু রাজস্ব আদায়।

এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ও এনবিআর সংস্কার কমিটির সদস্য ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, এনবিআরের যিনি প্রধান হবেন তিনি শুধু এনবিআর নিয়েই কাজ করবেন। তিনি এসআরও জারি, অর্থ আইন তৈরি করবেন না। এসব কাজ অন্য কেউ করবেন।

অন্যদিকে, ভ্যাট, ট্যাক্স শুল্ক সংক্রান্ত নীতি গ্রহণের ক্ষমতা থাকবে রাজস্ব নীতি আলাদা বিভাগের হাতে।

এর প্রধান হবেন সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা।

পাশাপাশি এনবিআর, অর্থ, বাণিজ্য, শিল্পসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীদের সংগঠন, গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ ১৫ থেকে ১৬ সদস্যের একটি স্থায়ী উপদেষ্টা পরিষদ থাকবে। কমিশন যত নীতি গ্রহণ করবে, তা অবশ্যই ওই কমিটির মাধ্যমে অনুমোদন হতে হবে। পরে তা মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করবে এনবিআর।

মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, স্থায়ীভাবে একটি পরামর্শক কমিটি গঠন করতে হবে। যার সদস্য হবেন ১৫-১৬ জন। নীতি নির্ধারণ, অর্থ আইন সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম এই কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে করতে হবে। এতে দূরত্ব কমবে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এনবিআরের এমন বিভাজন দীর্ঘদিন ধরেই চাচ্ছেন তারা। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, এটিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে। এটি আরও আগেই হওয়া উচিত ছিল।

প্রাথমিকভাবে উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা অর্থনীতিবিদদেরও। অর্থনীতিবিদ ও শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ড. জাহিদ হোসেন বলেন, আলাদা হওয়ার বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে তেমন দ্বিমত নেই। তবে কীভাবে এটি বাস্তবায়ন করা হবে সেটি নিয়ে অনেকেরেই দ্বিমত আছে। কারণ যদি পুরো আলাদা একটি নীতি নির্ধারক কমিটি হয়, কিন্তু সেটি যদি প্রশাসনের ভিতরে থাকে তাহলে কোনো পরিবর্তন আসবে না।

এর আগে, গত অক্টোবর মাসে এনবিআরের সংস্কারে পাঁচ সদস্যের পরামর্শক কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।