পাংশার পদ্মা নদীর চর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ
- প্রকাশের সময় : ০৫:৫৯:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫
- / 20
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের পদ্মা নদীর চর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালীরা। মাঝে মাঝে প্রশাসন অভিযান চালালেও বন্ধ হয়না বালু উত্তোলন। শুক্রবার রাতেও উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে তিনটি ভেকু জব্দ করেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, হাবাসপুর ইউনিয়নের সাহাপাড়া ঘাট, চরপাড়া ও শাহামীরপুর এলাকায় পদ্মা নদীর চর থেকে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। বালু উত্তোলনকারীরা অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে মুখ খোলার সাহস পায়না কেউ। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে একবার পাংশা থানার পুলিশ অভিযান চালিয়েছিল। কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয় বালু উত্তোলন। দিনের বেলা সেখানে কাউকেই দেখা যায় না। সূর্য ডোবার সাথে সাথেই শুরু হয় বালু উত্তোলনের কাজ। বিভিন্ন জায়গা থেকে ড্রাম ট্রাক, টলি, এনে রাখা হয় এসব এলাকায়। বালু ভর্তি ট্রাকগুলো নির্ধারিত জায়গায় পৌঁছে দেয়। বালু উত্তোলনের ফলে একদিকে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। অন্যদিকে ক্ষতি হচ্ছে রাস্তাঘাটের। এভাবে বালু উত্তোলন চললে পদ্মা নদীর ভাঙন ত্বরান্বিত হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তারা অনতিবিলম্বে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়েছে।
স্থানীয় একজন কৃষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সন্ধ্যার পর থেকে চলে ভেকু দিয়ে বালু ও মাটি কাটার কাজ। দিনের বেলা ওই ভেকু আড়াল করে রাখা হয়। আখ ক্ষেতের পাশে ভেকু লুকিয়ে রাখা হয়। রাতের বেলায় শত শত গাড়ী আসে বালি নিয়ে যায়। তারা গাড়ীর শব্দে ঘুমাতে পারেন না। মাঝে মধ্যে পুলিশ অভিযান চালালেও বালু উত্তোলন বন্ধ হয়না। তিনি আরও জানান, বালু উত্তোলনকারীরা হালের প্রভাবশালী। তাদের ভয়ে মুখ খোলার সাহস কারও নেই।
হাবাসপুর ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন খান জানান, গত ২০/২৫ দিন ধরে প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে পাংশার পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। এতে রাস্তাঘাটের যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমনি পদ্মার ভাঙনের আশঙ্কাও রয়েছে। বিষয়টি তিনি উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন। মিটিংয়েও বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। সময় অনুক‚ল নয় বিধায় তাদের নাম বলতে অপারগতা প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি অনতিবিলম্বে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানান।
পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম আবু দারদা বলেন, পাংশার হাবাসপুর ইউনিয়নের পদ্মা নদীর চরে বালু উত্তোলনের বিষয়ে জেনেছেন। গতরাতে (শুক্রবার) সেখানে অভিযান চালিয়ে তিনটি ভেকু মেশিন জব্দ করা হয়েছে। তবে কাউকে পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, যেখান থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে সেটা মেইন রোড থেকে তিন চার কিলোমিটার ভেতরে চরের মধ্যে। তারা যখন অভিযানে যান বালু উত্তোলনকারীরা টের পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরে যায়। ওরা রাতের বেলায় বালু উত্তোলন করে। চরের মধ্যে সেখানে গিয়ে ধরাটাও কঠিন। তারপরও এখন থেকে নিয়মিত তিনি অভিযান চালাবেন। স্থানীয়দের কাছে জানতে চাইলেও তারা বালু উত্তোলনকারীদের নাম বলতে নারাজ। তবে, কয়েকটি সূত্রে বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। যাচাই বাছাই করে এব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।