Dhaka ০২:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ক্লুলেস হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন

পাওনা টাকা না দেওয়ায় খুন হন ফাহিমা

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশের সময় : ১০:১৫:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩
  • / ১০৭৪ জন সংবাদটি পড়েছেন

 রাজবাড়ীতে ক্লুলেস একটি হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। পাওনা টাকা ফেরত না দেওয়ায় ফাহিমা আক্তার নামের ওই নারীকে খুন করা হয়। এ ঘটনায় আব্দুল রহিম মন্ডল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়। মৃত ফাহিমা ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর গ্রামের সেকেন ফকিরের মেয়ে। গ্রেপ্তার রহিম মন্ডল পাংশা উপজেলার জাগির কয়া গ্রামের বাসিন্দা।

প্রেস ব্রিফিংয়ে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম জানান, গত ৫ অক্টোবর কালুখালী উপজেলার কাওয়াখোলা গ্রামের একটি ধান ক্ষেত থেকে নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে কালুখালী থানার পুলিশ। তার পরিচয় জানার জন্য বহুভাবে চেষ্টা করা হয়। মাইকিং, সামাজিক মাধ্যমেও বার্তা দেওয়া হয়। পরে পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে।

কোনোভাবেই যখন কোন কুল কিনারা পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন স্থানীয় সোর্সদের কাজে লাগানো হয়। সোর্সদের বলা হয়, আশেপাশের এমন কেউ আছে কীনা যাকে কয়েকদিন ধরে এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। সোর্স খবর নিয়ে জানায় আব্দুর রহিম নামের এক ব্যক্তিকে কয়েকদিন ধরে দেখা যাচ্ছে না। আব্দুর রহিমের বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে দুইশ গজ দূরে। পরে তার মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে কললিস্ট বের করা হয়। একটি নম্বরে বেশ কয়েকবার কলিং থাকায় সেটিকে টার্গেট করে মোবাইল ব্যবহারকারীর নাম ঠিকানা বের করা হয়। তার পরদিন ঘটনাস্থল থেকে একটু দূরে একটি ভ্যানিটি ব্যাগ ও নারীদের এক জোড়া স্যান্ডেল উদ্ধার করা হয়। মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে ওই নারীর ছেলে-মেয়েকে থানায় ডেকে ভ্যানিটি ব্যাগ ও স্যান্ডেল দেখালে ওইগুলি তাদের মায়ের বলে শনাক্ত করে। এর পরে  আব্দুর রহিম মন্ডলকে সন্দেহজনকভাবে তার শ^শুরবাড়ি কালুখালীর বসুন্দিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে হত্যার কথা স্বীকার করে। রহিম মন্ডল জানিয়েছেন তিনি ও ফাহিমা কাতারে একসাথে ছিলেন। ওই সময় ফাহিমা তার কাছ থেকে দুই লাখ ১০ হাজার টাকা ধার নেয়। পরে দুজনেই দেশে ফিরে আসে। তাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল। কিন্তু টাকা কিছুতেই দিচ্ছিল না। একারণে তাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন। সেই মোতাবেক বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত ৫ অক্টোবর ফাহিমাকে ডেকে এনে গলায়  ওড়না পেঁচিয়ে শ^াসরোধে হত্যা করেন। তার পরিচয় যেন কেউ জানতে না পারে এজন্য ভ্যানিটি ব্যাগ, মোবাইল ফোন, জাতীয় পরিচয়পত্র, জামাকাপড় লুকিয়ে ফেলেন।

 প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) সুমন কুমার সাহা, কালুখালী থানার ওসি প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস প্রমুখ।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

ক্লুলেস হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন

পাওনা টাকা না দেওয়ায় খুন হন ফাহিমা

প্রকাশের সময় : ১০:১৫:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩

 রাজবাড়ীতে ক্লুলেস একটি হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। পাওনা টাকা ফেরত না দেওয়ায় ফাহিমা আক্তার নামের ওই নারীকে খুন করা হয়। এ ঘটনায় আব্দুল রহিম মন্ডল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়। মৃত ফাহিমা ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর গ্রামের সেকেন ফকিরের মেয়ে। গ্রেপ্তার রহিম মন্ডল পাংশা উপজেলার জাগির কয়া গ্রামের বাসিন্দা।

প্রেস ব্রিফিংয়ে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম জানান, গত ৫ অক্টোবর কালুখালী উপজেলার কাওয়াখোলা গ্রামের একটি ধান ক্ষেত থেকে নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে কালুখালী থানার পুলিশ। তার পরিচয় জানার জন্য বহুভাবে চেষ্টা করা হয়। মাইকিং, সামাজিক মাধ্যমেও বার্তা দেওয়া হয়। পরে পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে।

কোনোভাবেই যখন কোন কুল কিনারা পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন স্থানীয় সোর্সদের কাজে লাগানো হয়। সোর্সদের বলা হয়, আশেপাশের এমন কেউ আছে কীনা যাকে কয়েকদিন ধরে এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। সোর্স খবর নিয়ে জানায় আব্দুর রহিম নামের এক ব্যক্তিকে কয়েকদিন ধরে দেখা যাচ্ছে না। আব্দুর রহিমের বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে দুইশ গজ দূরে। পরে তার মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে কললিস্ট বের করা হয়। একটি নম্বরে বেশ কয়েকবার কলিং থাকায় সেটিকে টার্গেট করে মোবাইল ব্যবহারকারীর নাম ঠিকানা বের করা হয়। তার পরদিন ঘটনাস্থল থেকে একটু দূরে একটি ভ্যানিটি ব্যাগ ও নারীদের এক জোড়া স্যান্ডেল উদ্ধার করা হয়। মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে ওই নারীর ছেলে-মেয়েকে থানায় ডেকে ভ্যানিটি ব্যাগ ও স্যান্ডেল দেখালে ওইগুলি তাদের মায়ের বলে শনাক্ত করে। এর পরে  আব্দুর রহিম মন্ডলকে সন্দেহজনকভাবে তার শ^শুরবাড়ি কালুখালীর বসুন্দিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে হত্যার কথা স্বীকার করে। রহিম মন্ডল জানিয়েছেন তিনি ও ফাহিমা কাতারে একসাথে ছিলেন। ওই সময় ফাহিমা তার কাছ থেকে দুই লাখ ১০ হাজার টাকা ধার নেয়। পরে দুজনেই দেশে ফিরে আসে। তাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল। কিন্তু টাকা কিছুতেই দিচ্ছিল না। একারণে তাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন। সেই মোতাবেক বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত ৫ অক্টোবর ফাহিমাকে ডেকে এনে গলায়  ওড়না পেঁচিয়ে শ^াসরোধে হত্যা করেন। তার পরিচয় যেন কেউ জানতে না পারে এজন্য ভ্যানিটি ব্যাগ, মোবাইল ফোন, জাতীয় পরিচয়পত্র, জামাকাপড় লুকিয়ে ফেলেন।

 প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) সুমন কুমার সাহা, কালুখালী থানার ওসি প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস প্রমুখ।