রাজবাড়ীতে বিএনপির রোড মার্চে বক্তারা
এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন করতে দেব না
- প্রকাশের সময় : ০৮:৩২:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর ২০২৩
- / ১১৪০ জন সংবাদটি পড়েছেন
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বলেছেন, শপথ করে বলতে চাই, জীবন যাবে। রাস্তায় রক্ত দেব। এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন করতে দেব না। যে কোনো মূল্যে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে হবে।
সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির লক্ষ্যে ফরিদপুর বিভাগীয় রোর্ড মার্চের পথসভায় তারা একথা বলেন। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় রাজবাড়ী সদর উপজেলার গোয়ালন্দ মোড়ে এ পথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রোডমার্চকে ঘিরে সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা গোয়ালন্দ মোড়ে এসে সমবেত হয়। তাদের মাথায় ছিল খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত ক্যাপ। গায়ে ছিল বিভিন্ন ¯েøাগান লেখা গেঞ্জি। জাতীয় পতাকা হাতে নেতাকর্মীরা পথসভায় যোগ দেয়। গোয়ালন্দ মোড় নেতাকর্মীদের পদচারণা আর ¯েøাগানে মুখর হয়ে ওঠে।
পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জাতি আজ একটি ক্রান্তিলগ্নে। একটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে আমরা ১৪ বছর অতিক্রম করেছি। লক্ষ লক্ষ মানুষকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়েছে। ৪০ লক্ষের অধিক বিএনপি এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। বাক স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। জনগণের ভোটাধিকার চুরি করেছে। একটি অনির্বাচিত দখলবাজ সরকার আজকে দেশের উপর চেপে বসেছে। তিনি প্রশ্ন রাখেন সরকারকে ক্ষমতায় রাখার জন্য কেন র্যাবের উপর স্যাংশন আসবে। অবৈধ প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতায় রাখতে বাংলাদেশে কেন ভিসানীতি আসবে? কেন ৪০ লক্ষ মিথ্যা মামলা দিতে হবে? বাংলাদেশ আজ জেগে উঠেছে। অবৈধ সরকারের পতন হবেই হবে।
প্রধান বক্তার বক্তৃতায় বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, আমাদের যৌক্তিক আন্দোলন চ‚ড়ান্ত পর্যায়ে। শেখ হাসিনার পতন খুব বেশি দেরি নেই। আজকের রোড মার্চে আমরা দেখছি জনগণ অভ‚তপূর্বভাবে আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এখন ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আর ্একটু এগিয়ে যেতে হবে। এই সরকার হিংসার বশবর্তী হয়ে খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছে। শুধু কারাগারে পাঠিয়ে ক্ষান্ত হয়নি, তাকে হত্যা করার জন্য ¯েøা পয়জন দেওয়া হয়েছিল বলে মনে করছি। তিনি এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। কিন্তু চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যেতে দিচ্ছে না। আমরা একসাথে আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো এবং শেখ হাসিনার পতন ঘটাবো। একের পর এক জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। মানুষ কষ্টে আছে। মাছ মাংস দূরের কথা তরকারি পর্যন্ত কিনতে পারছে না। আর সরকার পরিবার নিয়ে বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাংলাদেশের এই অবস্থা শুধুমাত্র তাদের চুরি আর দুর্নীতির কারণে। সরকার সবাইকে দুর্নীতিবাজ করে ফেলেছে আর একবার ক্ষমতায় থাকার জন্য।
পথসভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির চেয়ারপার্সানের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, এই সরকার গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ থেকে শপথ করে বলতে চাই, জীবন যাবে। রাস্তায় রক্ত দেব। শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন করতে দেব না। খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থেকে আন্দোলনকে সফল করার জন্য তিনি নেতাকর্মীদের প্রতি আহŸান জানান।
পথসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জহুরুল হক শাহজাদা মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কেন্দ্রীয় সেলিমুজ্জামান সেলিম, রোজবাড়ী জেলা বিএনপির আহŸায়ক অ্যড. লিয়াকত আলী, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ সভাপতি অ্যড. আসলাম মিয়া, রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ।
অন্যদের মাঝে বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি একেএম জিলানী, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিলন, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, পাংশা উপজেলা বিএনপির সভাপতি চাঁদ আলী খান, বালিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির আহŸায়ক গোলাম শওকত সিরাজ, গোয়ালন্দ উপজেলা বিএনপির সভাপতি নিজাম উদ্দিন শেখ, রাজবাড়ী জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব একেএম সিরাজুল আলম চৌধুরী প্রমুখ।
বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রাজবাড়ী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহŸায়ক রেজাউল করিম পিন্টু ও সদস্য সচিব অ্যড. কামরুল আলম। দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে পথসভা শেষ হওয়ার পর চার কিলোমিটার দূরে বসন্তপুরে আর একটি পথসভায় যোগ দেন নেতৃবৃন্দ। এ পথসভায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বক্তব্য দেন রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবেক এমপি আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম। দুপুর সোয়া একটার দিকে রোড মার্চ ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে যায়।