Dhaka ০৮:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বালিয়াকান্দিতে প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত ।। প্রতিবাদে বিক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশের সময় : ০৯:১৫:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০২৩
  • / ১১৭৩ জন সংবাদটি পড়েছেন

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের মাজবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ছমির উদ্দিনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আব্দুর রউফ বিশ^াস। অভিযুক্ত আব্দুর রউফ বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের বড় ভাই। মঙ্গলবার রাত সাতটার দিকে উপজেলার সোনাপুর বাজারের একটি চায়ের দোকানে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসী তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করে। বুধবার সকালেও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে।

অভিযুক্ত আব্দুর রউফ বিশ^াস বিষয়টি স্বীকার করে জানান, এ ঘটনায় তিনি অনুতপ্ত।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোনাপুর বাজারে একটি চায়ের দোকানে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ  ও তার বড় ভাই রউফ বিশ্বাস বসেছিলেন। সেখানে মাঝবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ছমির উদ্দন আসেন। তখন রউফ বিশ্বাস জানতে চান বিদ্যালয়ের শিক্ষা সফরে কেন বাইরের বখাটে ছেলেদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে উভয়ের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের এক পর্যায়ে আব্দুর রউফ বিশ^াস চড় দেন প্রধান শিক্ষক ছমির উদ্দিনকে। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী আব্দুর রউফ বিশ^াসের বিচার দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করে।

প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ছমির উদ্দিন জানান, দীর্ঘ দিন তারা দুই ভাই (আবুল কালাম আজাদ ও আব্দুর রউফ বিশ^াস) পর্যায়ক্রমে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন। কিন্তু এবার নতুন সভাপতি হয়েছে। মূলত এই বিষয় নিয়ে তারা দুই ভাই আমার উপর ক্ষিপ্ত।  আমরা বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা সফরে গিয়েছিলাম ফেব্রæয়ারির ২ তারিখে। সেখানে শিক্ষার্থী ছাড়াও অভিভাবক ছিল। কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। একমাস পর এসে তিনি এসব অভিযোগ করছেন। আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন। আমি এঘটনার বিচার চাই।

এবিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুর রউফ বিশ্বাস বলেন, তিনি ইতিপূর্বে বিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলেন। এ বছর স্কুল থেকে পিকনিকে গিয়েছিল। পিকনিকে বাইরের ছেলেদের নেওয়া হয়েছিল। এবিষয়ে কে যেন শিক্ষা অফিসে অভিযোগ দিয়েছে। উপজেলা পরিষদের মিটিংয়ে এটা উত্থাপিত হয়েছিল। মঙ্গলবার রাতে সোনাপুর বাজারে আমি ও আমার ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বসেছিলাম। ওই সময় প্রধান শিক্ষক সেখানে এলে তার ভাই এ বিষয়ে জানতে চান। এই নিয়ে প্রধান শিক্ষক চেয়ারম্যানের উপর চড়াও হয়। আমার ভাইয়ের সাথে খারাপ আচরণ করায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে তাকে একটি চড় দেই। বিষয়টি আমার অন্যায়ই হয়েছে। আমি অনুতপ্ত।

বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, এটা তেমন কোনো ঘটনা না। রাজনীতি দিয়ে এটাকে বেশি রঙিন করা হচ্ছে। হেডমাস্টার ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে সিলেট গিয়েছিল। সেখানে কিছু উশৃঙ্খল ছেলেদের নেওয়া হয়েছিল। স্কুলের ছাত্রÑছাত্রীরা গাড়ির ভেতরে সিনক্রিয়েট করার পর ঢাকায় গিয়ে আরেকটি গাড়িতে করে সিলেট পাঠানো হয়। এটা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমাকে জানান। আমি তাকে বলেছি প্রধান শিক্ষককে শোকজ করেন। তিনি প্রতিদিন সোনাপুর বাজারে চা খেতে যান। সেখানে প্রধান শিক্ষক এলে এসব নিয়ে কথাবার্তা উঠলে আমার সাথে খুবই বাজে আচরণ করে। এনিয়ে একটু ধাক্কাধাক্কি হয়।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল হাসান আলী দেশের বাইরে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Tag :

সংবাদটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন-

বালিয়াকান্দিতে প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত ।। প্রতিবাদে বিক্ষোভ

প্রকাশের সময় : ০৯:১৫:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০২৩

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের মাজবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ছমির উদ্দিনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আব্দুর রউফ বিশ^াস। অভিযুক্ত আব্দুর রউফ বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের বড় ভাই। মঙ্গলবার রাত সাতটার দিকে উপজেলার সোনাপুর বাজারের একটি চায়ের দোকানে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসী তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করে। বুধবার সকালেও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে।

অভিযুক্ত আব্দুর রউফ বিশ^াস বিষয়টি স্বীকার করে জানান, এ ঘটনায় তিনি অনুতপ্ত।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোনাপুর বাজারে একটি চায়ের দোকানে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ  ও তার বড় ভাই রউফ বিশ্বাস বসেছিলেন। সেখানে মাঝবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ছমির উদ্দন আসেন। তখন রউফ বিশ্বাস জানতে চান বিদ্যালয়ের শিক্ষা সফরে কেন বাইরের বখাটে ছেলেদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে উভয়ের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের এক পর্যায়ে আব্দুর রউফ বিশ^াস চড় দেন প্রধান শিক্ষক ছমির উদ্দিনকে। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী আব্দুর রউফ বিশ^াসের বিচার দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করে।

প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ছমির উদ্দিন জানান, দীর্ঘ দিন তারা দুই ভাই (আবুল কালাম আজাদ ও আব্দুর রউফ বিশ^াস) পর্যায়ক্রমে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন। কিন্তু এবার নতুন সভাপতি হয়েছে। মূলত এই বিষয় নিয়ে তারা দুই ভাই আমার উপর ক্ষিপ্ত।  আমরা বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা সফরে গিয়েছিলাম ফেব্রæয়ারির ২ তারিখে। সেখানে শিক্ষার্থী ছাড়াও অভিভাবক ছিল। কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। একমাস পর এসে তিনি এসব অভিযোগ করছেন। আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন। আমি এঘটনার বিচার চাই।

এবিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুর রউফ বিশ্বাস বলেন, তিনি ইতিপূর্বে বিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলেন। এ বছর স্কুল থেকে পিকনিকে গিয়েছিল। পিকনিকে বাইরের ছেলেদের নেওয়া হয়েছিল। এবিষয়ে কে যেন শিক্ষা অফিসে অভিযোগ দিয়েছে। উপজেলা পরিষদের মিটিংয়ে এটা উত্থাপিত হয়েছিল। মঙ্গলবার রাতে সোনাপুর বাজারে আমি ও আমার ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বসেছিলাম। ওই সময় প্রধান শিক্ষক সেখানে এলে তার ভাই এ বিষয়ে জানতে চান। এই নিয়ে প্রধান শিক্ষক চেয়ারম্যানের উপর চড়াও হয়। আমার ভাইয়ের সাথে খারাপ আচরণ করায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে তাকে একটি চড় দেই। বিষয়টি আমার অন্যায়ই হয়েছে। আমি অনুতপ্ত।

বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, এটা তেমন কোনো ঘটনা না। রাজনীতি দিয়ে এটাকে বেশি রঙিন করা হচ্ছে। হেডমাস্টার ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে সিলেট গিয়েছিল। সেখানে কিছু উশৃঙ্খল ছেলেদের নেওয়া হয়েছিল। স্কুলের ছাত্রÑছাত্রীরা গাড়ির ভেতরে সিনক্রিয়েট করার পর ঢাকায় গিয়ে আরেকটি গাড়িতে করে সিলেট পাঠানো হয়। এটা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমাকে জানান। আমি তাকে বলেছি প্রধান শিক্ষককে শোকজ করেন। তিনি প্রতিদিন সোনাপুর বাজারে চা খেতে যান। সেখানে প্রধান শিক্ষক এলে এসব নিয়ে কথাবার্তা উঠলে আমার সাথে খুবই বাজে আচরণ করে। এনিয়ে একটু ধাক্কাধাক্কি হয়।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল হাসান আলী দেশের বাইরে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।